somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কেন রাজনীতি করবেন?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সংসদ সদস্যদের ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন ‘নেতিবাচক কার্যক্রমে’ জড়িত। সংস্থাটি আরো বলেছে, “সংসদ সদস্য পদকে একটি লাভজনক আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য করায় সাংসদরা মূল দায়িত্বের বাইরে উন্নয়নকাজে এ ধরনের নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছেন।“

সাধারণত রাজনীতিকদের মূল কাজ হিসাবে গণ্য করা হয় জনসেবা করা। কিন্তু আপনি যদি কোন উচ্চতর সত্ত্বা
র কাছে একসময় জবাবদিহিতার অনূভুতি না রাখেন তথা সেক্যুলার মতাদর্শে অথবা নাস্তিকতায় বিশ্বাসী হন তাহলে আপনার জনসেবা করার পিছনে কি যুক্তি থাকতে পারে? হয়ত বলবেন যে মানুষ আমার প্রশংসা করবে, আমার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি হবে অথবা আমার মৃত্যুর পর যুগ যুগ ধরে আমার গুণগান করা হবে এবং আমাকে স্মরণ করবে এই তো। যারা সেক্যুলার বা নাস্তিকতায় বিশ্বাসী তারা তো সবকিছু যুক্তি দিয়ে বিচার করেন, অন্তত সেই দাবী করেন। তাহলে আপনিই বলুন যুক্তির মানদন্ডে জনসেবা করার পেছনের এসব কারণ কতটা উত্তীর্ণ। আমার পেটে যদি ভাত না থাকে তাহলে আমি কি জনপ্রিয়তা বা প্রশংসা দিয়ে পেট ভরাব? মৃত্যুর পরে স্মরণ করার বিষয়টিতো তাদের চোখে আরও অযৌক্তিক হওয়ার কথা, কেননা তাদের কাছে মৃত্যু অর্থ মাটিতে মিশে যাওয়া তথা অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়া। যার অস্তিত্বেরই কোন প্রশ্ন আসে না তার কাছে প্রসংসার বা স্মরণের মূল্য অর্থহীন। যেহেতু আমাকে আমার জীবনের থেকেই সবটুকু উপযোগীতা নিতে হবে সেহেতু অবশ্যই আমাকে যেভাবে সম্ভব অথ ও ক্ষমতা অজন করে আমার কামনা বাসনাকে চরিতার্থ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। অন্তত বুদ্ধি বিবেকে তাই বলে।

রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবা করার পেছনে আরেকটি যুক্তি দাঁড় করানো হয়, আর তা হলো দেশপ্রেম। কিন্তু এই দেশপ্রেমেরও যে বিষময় ফল আছে তা কি অস্বীকার করা যায়। দেশপ্রেম নিঃস্বন্দেহে একটি মহৎ গুণ, কিন্তু প্রশ্ন হল এই দেশপ্রেমের সীমা কতদূর? আপনি কি যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল প্রভৃতি দেশের রাষ্ট্রনায়কদের বিশ্বব্যাপী আগ্রাসী তৎপরতাকে সমর্থন করেন? সম্ভবত আপনার উত্তর না-ই হবে। কিন্তু তাদের দেমপ্রেমকে তো অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তারা তাদের দেশকে ভালবেসে দেশের স্বার্থেই এসব করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার কিন্তু নিজের দেশ ও জাতিকে ভালবেসেই ষাট লক্ষ ইহুদী মেরেছিল। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের দিকে তাকান, তারা আমাদের পদ্ধা, তিস্তায় ন্যায্য পানি দিচ্ছেনা। কেন দেবে? তাদেরকেতো আগে তাদের দেশের মানুষের পানির সমস্যা মিটাতে হবে। আমাদের দেশ মরূভূমি হচ্ছে না পানিতে ভেসে যাচ্ছে তা নিয়ে ভাবতে তাদের বয়েই গেল! আমাদের মানুষদের সীমান্তে গুলি করে মারলে যদি তাদের দেশে চোরাচালান কমে, তাহলে তারা মারবে না কেন? এসব কাজ যে শুধু শক্তিশালী দেশ গুলো করছে এবং অন্যরা ধোয়া তুলসিপাতা বিষয়টা এরকম নয়। যখন ব্রিটিশরা ছিল সুপারপাওয়ার তখন তারা বিশ্ব শোষণ করেছে, পরবর্তীতে একই কাজ করেছে সোভিয়েত, আর এখন তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের বাংলাদেশ যদি এই পযায়ে কখনো পৌঁছে তারাও ঠিক একই কাজই করবে। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি যে ”আমার অন্যয় করার ক্ষমতা নেই বলেই আমি নীতবান” বাংলাদেশের অবস্থা এটাই। এর প্রমাণ কিন্তু টিআইবি র প্রতিবেদনটিই বহন করে। আমাদের রাজনীতিকদের ক্ষমতা আছে জনগণকে শোষণ করার তাই তারা সেটাই করছে, কখনো বিশ্বকে শোষণ করার শক্তি অর্জন করলে তারা বিশ্বকেও শোষণই করবে।

সুতরাং দেশপ্রেমও দূনীতি ও অবৈধ লাভের পথ বন্ধ করার সর্বোত্তম পথ নয়। আপনি মানুন আর নাই মানুন যদি আপনার সর্বশক্তিমান কোন সত্ত্বার সামনে জবাবদিহিতার অনুভুতি না থাকে তবে আপনি কখনই পরিপূর্ণ ভাবে বতমানে ছড়িয়ে পড়া সবব্যাপী দূর্নীতিকে দূর করতে পারবেন না। আইনের ভয়ে কখনো মানুষ হয়তো ভাল সেজে থাকে, কিন্তু যেখানে আইনের ভয় নেই সেখানে তার আসল চেহারা উন্মোচিত হয়ে যায়। সভ্য দেশ (?) আমেরিকায় হারিকেন ক্যাটরিনার পর তাদের সুপার শপ গুলোর লুটপাট দেখলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা।

”তুমি আসলে তাই, অন্ধকারে তুমি যা”
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×