somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্টিভেন পল জবস্ : বিশ্ব প্রযুক্তির এ মহানায়কের প্রতি সামহোয়্যার পরিবারের শ্রদ্ধার্ঘ : বিদায় বন্ধু... যেখানেই থাকো, ভালো থেকো...

০৬ ই অক্টোবর, ২০১১ সকাল ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিডি নিউজ২৪ : যে কারণে স্টিভ জবস গুরুত্বপূর্ণ
ইউটিউব : Steve Jobs Dies: Bio/Tribute
BBC : Tributes for Apple 'visionary' Steve Jobs
সিলিকন ভ্যালির যে বাড়িতে জবস থাকতেন, সেই বাড়ির সামনে ফুল রেখে যাচ্ছে অসংখ্য ভক্ত। ছোট ছেলেমেয়েরা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চোখ ভেজাচ্ছে। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। মরেও যারা অমর হয়ে থাকে তাদেরই একজন হচ্ছেন অ্যাপেলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত অ্যাপলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি সাদা রঙের আইপ্যাডের সঙ্গে স্টিভের ছবিতে ফুল দিচ্ছে ভক্তকুল, আর পতাকা নামিয়ে রাখা হয়েছে অর্ধেক। বিশ্বের দেশে দেশে মানুষ অ্যাপেলের স্টোর ও শোরুম গুলোতে ভিড় করে ফুল দিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ শ্রদ্ধা জানিয়ে নোট দিচ্ছেন, কেউবা পূর্ণ আপেলে একটি কামড় বসিয়ে রেখে যাচ্ছেন। ওটিই যে অ্যাপেলের প্রতীক। তারা বলছে, 'জবস আমাদের সবার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে। আমরা আজকে যেভাবে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করি, সেটাই ঠিক করে দিয়েছেন স্টিভ। তাঁর জন্য আমাদের ভালোবাসার শেষ নেই।'
না... জবস শুধু একজন প্রযুক্তিবিদ'ই ছিলেন না, তিনি প্রযুক্তির জাদুকর, তিনি শুধু একজন উদ্যোক্তা'ই ছিলেন না, তিনি আদর্শ কর্পোরেট লিডার, তিনি শুধু একজন সংগ্রামী মানুষ'ই নন, তিনি জন্ম থেকেই শত প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে বিশ্বকে বদলে দেয়া বিশ্বজয়ী সংগ্রামী। তিনি শুধু স্বপ্নই দেখেননি, স্বপ্ন দেখতেও শিখিয়েছেন... তিনি পৃথিবীটাকে আমাদের আংগুলের ডগায় এ্নে দিয়েছেন....





এ মুহূর্তে বিশ্বের সবগুলো সামাজিকমাধ্যম (টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল+) এখন স্টিভের জন্য শোকবার্তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রযুক্তিগুরু স্টিভ জীবিত অবস্থায় একের পর রেকর্ড গড়েছেন, আর নিজেই ভেঙেছেন সে সব রেকর্ড। জীবণের ওপারে গিয়েও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের কথা আবার জানাচ্ছেন অনলাইন বিশ্বকে। এরই মধ্যে তিনি গড়েছেন আরেক বিশ্বরেকর্ড। টুইটারের প্রতি সেকেন্ডের বার্তা নিবন্ধনের হিসাবে স্টিভই এখন বিশ্বসেরা। অস্ট্রেলিয়ার সামাজিকমাধ্যম পর্যবেক্ষক সংস্থা এসআর৭ সূত্র মতে, স্টিভের মৃত্যুর খবর ঘোষণার পর টুইটার প্রতি সেকেন্ডে ১০ হাজার টুইট বার্তা জমা পড়েছে টুইটার সার্ভারে। এ যেন রীতিমতো শোকবার্তার টাইফুন বয়ে গেছে অনলাইন গণমাধ্যমে। স্টিভের এ অকালপ্রয়াণকে অ্যাপল ভক্তরা সংক্ষেপে ‘আইস্যাড’ খুদেবার্তা হিসেবে প্রকাশ করেছে। চলে গিয়েও তিনি উপহার দিয়ে গেলেন ‘আইস্যাড’। জবসের মৃত্যুর খবর নিয়ে ফেসবুকে কয়েক শ পেজ তৈরি হয়েছে। পেজগুলোতে লেখা : রেস্ট ইন পিস : স্টিভ জবস । একজন প্রযুক্তি ব্যক্তিত্বের জন্য এত মায়া আগে আর কখনোই দেখা যায়নি।





ম্যাক, আইফোন ও আইপডের মতো নতুন নতুন প্রযুক্তি পণ্য উপহার দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন অ্যাপল’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। দত্তক সন্তান হিসেবে সিলিকন ভ্যালি এসে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পুরোটা সম্পন্ন না করে শেষ পর্যন্ত পুরো বিশ্ব ঠিকই জয় করেছিলেন স্টিভ জবস। সম্পদ ও পেশাগত সাফল্যে উজ্জ্বল স্টিভ জবস সারাজীবনই সিলিকন ভ্যালির সবচেয়ে বেপরোয়া অভিযাত্রীর খেতাবটা পেয়েছিলেন। তার উচ্চাকাঙ্খাই অ্যাপলকে এ গ্রহের সবচেয়ে বেশি পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর একটিতে পরিণত করেছেন। স্টিভ জবসের পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর সময় তারা স্টিভের পাশেই ছিলেন এবং এক শান্তির মৃত্যুই তার হয়েছে। স্ত্রী, এক ছেলে এবং দুই কন্যা ছাড়াও কোটি মানুষকে কাঁদিয়ে মাত্র ৫৬ বছর বয়সেই চলে গেলেন এই প্রযুক্তি কিংবদন্তি।





অ্যপলে'র সহ প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস্ আর নেই........ মাত্র ৫৬ বছর বয়সে (১৯৫৫-২০১১) জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। খবরটি অ্যাপল সূত্র, বিবিসি , সিএনএনআল্ জাজিরা নিশ্চিত করেছে.....

মাউস নিয়ন্ত্রিত আইকন ভিত্তিক ব্যক্তিগত কম্পিউটার, অ্যাপল ম্যাকিন্টস, আইপড, আইপ্যাড এবং আইফোন উদ্ভাবণের মাধ্যমে স্টিভ জবস বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। অ্যাপল ই প্রথম কম্পিউটার জগতে নিয়ে আসে রঙ, রূপ, স্মার্টনেস আর ব্যবহারবান্ধব প্রযুক্তি। শুধু অ্যাপলই যথেষ্ট ছিল তাকে এ জগতে অমর করে রাখার জন্য, কিন্তু তিনি তাঁর অসীম প্রতিভায় কম্পিউটার অ্যানিমেশন ও কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন মেশনের ব্যবহার করে পিক্সার স্টুডিওকে দেন নতুন প্রান, পরিণত করেন পৃথিবীর সেরা সিজিআই এনিমেশন স্টুডিওতে। তার অক্লান্ত পরিশ্রম আর কল্পনা-প্রযুক্তির সমন্বয়ে পিক্সার স্টুডিও থেকে মুক্তি পায় টয় স্টোরি, এ বাগস লাইফ, টয় স্টোরি-২, মনস্টার ইঙ্ক, ফাইন্ডিং নিমো, ইনক্রেডিবলস, টয় স্টোরি-৩ এর মত বিশ্ব কাপাঁনো অসাধারণ সম্পূর্ণ এনিমেশন চলচিত্র। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন জীবণ সংগ্রামের এক আদর্শ দৃষ্টান্ত। ২০০৪ সাল থেকে অগ্ন্যাশয়ের জটিল ক্যান্সারে ভুগছিলেন স্টিভ জবস।

ছবিতে স্টিভ জবস'র জীবনগাঁথা : ।। বিবিসি ।। সিএনএন ।। আল্ জাজিরা ।।

উইকিপিডিয়া’তে স্টিভ জবস : ।। ইংরেজী ।। বাংলা ।।

বিশ্ব প্রযুক্তির এ মহানায়কের বিদায়ে সিএনএন'র শ্রদ্ধার্ঘ।

২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে তাঁর অসাধারণ বক্তৃতাটি এখানে: ।। ইউটিউব ভিডিও ।। মূল ইংরেজী বক্তৃতা ।। বাংলা অনুবাদ ।।

গত শতকের '৭০ দশকের শুরু থেকে কাজ শুরুর পর কম্পিউটর জগতের চূড়োমনি হয়ে ওঠেন জবস ও গেটস। একজন অ্যাপলে, অন্যজন মাইক্রোসফটে। জবস'র অকাল প্রয়াণের শোকবার্তায় মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেন, “হৃদয়ের গভীর থেকেই স্টিভকে মিস করছি। আমি সৌভাগ্যবান বলেই স্টিভের মতো এমন বহুগুণী এবং ভবিষৎদ্রষ্টার সঙ্গে কাজ করার সুয়োগ পেয়েছি। স্টিভের মৃত্যুর ক্ষতি শুধু এই প্রজন্মই নয়, পরবর্তী কয়েক প্রজন্ম অনুভব করবে।”

স্টিভের মৃত্যুতে অ্যাপল তাদের ওয়েবসাইটে স্টিভের সাদাকালো একটি ছবি দিয়ে লিখেছে, 'স্টিভ জবস: ১৯৫৫-২০১১'। তাদের সদর দপ্তরের বাইরে তাদের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। অ্যাপলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “স্টিভের মেধা, ভালোবাসা এবং উদ্যমই ছিল অসংখ্য উদ্ভাবনের নেপথ্যে, যা আমাদের সবার জীবনযাত্রার মানোন্নয়ে বিশাল ভূমিকা রেখেছে। স্টিভের জন্যই বিশ্ব আজ অনেক উন্নত।”


এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ, গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ল্যারি পেজ, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক স্টিভেন স্পিলবার্গ, নকিয়ার প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ইলোপ ছাড়াও বিশ্বপ্রযুক্তি অঙ্গনের শীর্ষ ব্যক্তিরা স্টিভ জবসের মৃত্যুতে গভীর প্রকাশ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, “তার মৃত্যুতে বিশ্ব দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষকে হারালো।, তিনি ভিন্ন ভাবে চিন্তা করতে পারতেন, বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ব্যাপারে ছিলেন দৃঢ়চেতা। আর তা করার যথেষ্ট বুদ্দিমত্তাও তার ছিলো।”

ফেসবুক সিইও মার্ক জুকারবার্গ তার ফেবু স্ট্যাটাসে লিখেছেন : “একজন বন্ধু ও গুরু হিসেবে তোমাকে পেয়েছি, স্টিভ তোমাকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ এই জন্য যে, তুমি দেখিয়ে গেছো, তুমি যা আবিস্কার করেছো তা বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। আমরা তোমাকে মিস করবো।”


গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ল্যারি পেজ তার জি প্লাস স্ট্রিমে বলেছেন , “তিনি সবসময় আপনি কি ভাবতে পারেন তা খুব অল্প কথায় বলে দিতে পারতেন, অপনি ভাবার আগেই।”


চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক স্টিভেন স্পিলবার্গের বলেছেন, “টমাস (আলভা) এডিসনের পর শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবক ছিলেন স্টিভ জবস। তিনি পৃথিবীটাকে আমাদের আংগুলের ডগায় এ্নে দিয়েছিলেন”।

নকিয়ার প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ইলোপের বলেছেন, “কমপিউটার শিল্প অঙ্গনে স্টিভের তুলনা তিনি নিজেই। ভবিষ্যৎ চাহিদাতে সময়ের অনেক আগেই কল্পনা করতে পারদর্শী ছিলেন স্টিভ। আর নিরলস পরিশ্রম ও কর্মদক্ষতার শক্তি দিয়ে তিনি তা বাস্তবায়নও করতে পারতেন।”

পুরো আট বছর একান্তেই জটিল ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন স্টিভ। কিন্তু তাঁর উদ্ভাবনী শক্তিকে মোটেও দমিয়ে রাখতে পারেনি ক্যান্সার। অদম্য সাহস আর ধৈর্য্য নিয়ে তিনি গত আটটি বছর অ্যাপলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। বিশ্বকে দিয়েছেন একের পর চমক। বিশ্ব পরিবর্তনের রূপকার হিসেবে তাঁকে এ কালের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি উপাধীও দেওয়া হয়। এরই মধ্যে পুরো বিশ্বপ্রযুক্তি অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। কেউই যেন স্টিভের এ অকালে চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না।বিশ্বের কোটি কোটি অ্যাপল ভক্তকে চোখের জলে ভাসিয়ে স্টিভ এখন স্মৃতির মনিকোঠায়। স্টিভ শুধু অ্যাপলের সম্পদ ছিলেন না। বরং পুরো বিশ্বই আজ হারালো বিশ্বপ্রযুাক্তির এক অপূরণীয় মহানায়ককে। মৃত্যুকালে স্টিভ স্ত্রী, এক ছেলে এবং দুই কন্যা রেখে গেছেন।


এক নজরে স্টিভ জবস :
১৯৫৫: স্টিভ জবসের জন্ম ২৪ ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকোতে অবিবাহিত দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সিরীয় বংশোদ্ভূত আব্দুল ফাত্তাহ জান্দালি ও মা জোয়ান সিবিলের সন্তান হিসেবে স্টিভ জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পরেই ক্যালিফোর্নিয়ার মাউনটেন ভিউ অঞ্চলের পল ও ক্লারা জবস শিশু স্টিভকে দত্তক নেন।

১৯৭৪: ভিডিওগেম কোম্পানি অ্যাটারি ইনকর্পোরেশনে চাকরি নেন। তবে কয়েক মাস পর ইস্তফা দিয়ে ভারতে বেড়াতে যান।

১৯৭৫: বন্ধু স্টিভ ওজনিয়াকের সঙ্গে স্টিভ জবস নিজেদের পারিবারিক গ্যারেজে আদি কম্পিউটারটি তৈরি করেন।

১৯৭৬: নিজেদের মেশিনপত্র বিক্রির জন্য জবস ও ওজনিয়াক অ্যাপল কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। এবারই প্রথম অ্যাপল-১ কম্পিউটারটি পরিচিতি পায়।

১৯৭৭: অ্যাপল-২ বাজারে আসে। এই প্রথম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে কম্পিউটারটি বিক্রি হয়। টানা ১৬ বছর এটি উৎপাদনে থাকে।

১৯৮০: অ্যাপল-৩ বাজারে আসলেও তা বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। কম্পিউটারটির নির্মাণে ত্রুটি ছিল। এটিকেই বলা হয় অ্যাপলের দ্বিতীয় কম্পিউটার।

১৯৮৩: লিসা নামের পারসোনাল কম্পিউটার (পিসি) বাজারে ছাড়ে অ্যাপল। মাউস দিয়ে এটি চালানো সম্ভব হয়। তবে এ প্রচেষ্টাও বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়।

১৯৮৪: ম্যাকিনটশ কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে অ্যাপল। এটি ব্যাপক মনোযোগ কাড়ে। তবে বিক্রিবাট্টা কম হয়।

১৯৮৫: অ্যাপল ছয়টি কারখানার তিনটিই বন্ধ করে এবং ১২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে। বোর্ডরুম বৈঠকে জন স্কালির কাছে হেরে কোম্পানি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন স্টিভ জবস

১৯৮৬: লুকাসফিল্ম লিমিটেডের গ্রাফিকস বিভাগ কিনে নেন জবস। প্রতিষ্ঠানটির মালিক স্টার ওয়ারস চলচ্চিত্রের পরিচালক জর্জ লুকাস। এখানে পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওস নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৮৭: ম্যাকিনটশ-২ বাজারে আসে।

১৯৮৮: নেক্সট কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন জবস। আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেনি। মাত্র ৫০ হাজার কম্পিউটার বিক্রি হয়।

১৯৯৫: পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওসের প্রধান নির্বাহী থাকাকালীন টয় স্টোরি বের হয়। কম্পিউটারে অ্যানিমেশন করা পূর্ণদৈর্ঘ্যরে ছবি। চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া পায়।

১৯৯৬: অ্যাপলের কাছে ৪২ কোটি নয় লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয় নেক্সট। জবসের প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন শুরু করে। এতে সফটওয়্যারও নিজেদের নির্মিত।

১৯৯৭: জবস অ্যাপলের অন্তর্বর্তী প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পান।

১৯৯৮: স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটার আইম্যাক বাজারে ছাড়া হয়। এর সঙ্গে মনিটরও জুড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা অনেক পেছনে পড়ে যায়।

২০০১: অক্টোবরে প্রথমবারের মতো আইপড বাজারে ছাড়া হয়। এতে সাফল্য আসে।

২০০৩: এপ্রিলে আইটিউনস গানের ডিভাইস বাজারে ছাড়া হয়।

২০০৭: প্রথমবারের মতো আইফোন বাজারে ছাড়া হয়। অ্যাপলের নামে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন স্টিভ জবস।

২০১০: এপ্রিল আইপ্যাড বাজারে ছাড়া হয় এবং ৮০ দিনের মধ্যে এটি ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়। বছর শেষে দেড় কোটি আইপ্যাড বিক্রির খবর পাওয়া যায়। অ্যাপলের বাৎসরিক আয় ছয় হাজার ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। ২০০০ সালে এ আয় ছিল ৮০০ কোটি ডলার।

২০১১: বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় অ্যাপল নতুন পণ্য ছাড়ে। এর মধ্যে আছে, আইপ্যাড২, আইফোন৪ এবং সর্বশেষ আইফোন৪এস।





বিশ্ব পরিবর্তনের রূপকার, এ কালের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি :

এমন অনেক মানুষের কাহিনীই আমরা জানি, যারা তাদের জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে উঠে এসেছেন সাফল্যের শীর্ষে। কিন্তু অ্যাপেল কম্পিউটরসের এর সিইও স্টিভ জবস এদের সবার থেকে একটু আলাদা। প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে নয়, তিনি সাফল্য আর খ্যাতির চূড়ায় উঠেছেন তার প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গে নিয়েই। তার একক প্রচেষ্টায় নিছক খালি ভাঁড়ার নিয়ে শুরু হওয়া 'অ্যাপেল কম্পিউটারস' আজ মাইক্রোসফট-এর মতো কোম্পানিকে পেছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বর জায়গা দখল করে নিয়েছে। জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন জবস। কিন্তু তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। সমস্যা যত বড়ই হোক নিজেকে বুঝিয়েছেন, 'আমি হারব না'। সত্যি তিনি হারেননি। কখনো হারেননি। ২০০৪ সালে তার লিভারে এক বিশেষ ধরনের টিউমার ধরা পড়ে। এই টিউমার থেকেই ধরা পড়ে ক্যান্সারের সংক্রমণ। ডাক্তাররা জানান, 'টিউমার অপারেশন করলে স্টিভ-এর বাঁচার আশা খুবই ক্ষীণ। আবার অপারেশন না করলেও রয়েছে প্রাণসংশয়।' তখন মুহূর্তের জন্য থেমে গিয়েছিল স্টিভ-এর পৃথিবী। তার নিজের তৈরি করা সাম্রাজ্য একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছিল চোখের সামনে থেকে। শুধু একটাই কথা মনে হচ্ছিল তার, 'তাহলে কি সব শেষ? সারা জীবনের পরিশ্রম, সব মেহনত কি নিমেষে শেষ হয়ে যাবে? 'অ্যাপেল'কে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন আমি দেখেছি তা কি তাহলে আর কোনোদিন সম্পন্ন হবে না?' তাকে ঘিরে থাকা মানুষের সবাই যখন ভেঙে পড়েছিলেন, হারিয়ে ফেলেছিলেন লড়াই করার ক্ষমতা তখনই স্টিভ উঠে দাঁড়ান। সিদ্ধান্ত নেন, হেরে যাওয়ার আগে শেষ একবার অস্ত্র হাতে তুলে নেবেন। লড়ে নেবেন শেষ লড়াইটা। হার বা জিত যা হওয়ার হবে। তবে এটা ছিল স্টিভ-এর জীবনযুদ্ধের ইতিহাসের একটা অধ্যায়।

সব ডাক্তারই যখন তার বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন, তখন স্টিভ বেছে নেন এক বিকল্প চিকিৎসার পথ। ২০০৪ সালে 'হুইপল প্রোসিডিওর'-এর মাধ্যমে তার টিউমার অপারেশন করেন ডাক্তাররা। কোনো ক্যান্সারনিরোধক প্রয়োগের প্রয়োজনও হয়নি। তবে এতকিছু করেও ক্যান্সারের কামড় আটকানো যায়নি। ততদিনে তার শরীরে থাবা বসিয়ে দিয়েছে ওই মারণ রোগ। এবার একটু একটু করে স্টিভকে ঠেলে নিয়ে যাবে মৃত্যুর দিকে। নিজের জীবনের অন্তিম সত্যিটাকে সঙ্গে নিয়েই স্টিভ এগিয়ে চলা শুরু করেন শীর্ষের পথে। চিকিৎসার জন্য সাময়িক বিরতির পর তিনি ফিরে আসেন অ্যাপেল-এর দুনিয়ায়। নিজের হাতে তুলে নেন সংস্থার দায়িত্বভার। একে একে 'হার্ডল' পেরিয়ে অ্যাপেল এগোতে থাকে সাফল্যের চূড়ায়। প্রথম লড়াই তাকে লড়তে হয়েছিল শৈশবেই। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ সালে সান ফ্র্যান্সিসকো-এ জন্ম হয় স্টিভেন পল জবস-এর। অবিবাহিত বাবা-মায়ের সন্তান স্টিভকে দত্তক নেন পল এবং ক্লারা জবস্। স্টিভ- নামটিও তাদেরই দেওয়া। বাবা-মায়ের অভাবে বেড়ে ওঠাই ছিল স্টিভ-এর প্রথম লড়াই। ক্যালিফোর্নিয়ার হোমস্টেড হাই স্কুল-এ লড়াইয়ের শুরু। ক্যালিফোর্নিয়ার হোমস্টেড হাইস্কুল-এ পড়ার সময় স্টিভ একটি সফ্টওয়্যার সংস্থা হিউলেট-প্যাকার্ড কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ পান। সেখানেই হয় তার কর্মজীবনের সূত্রপাত। এরপর 'আতারি' নামে একটি সংস্থার হয়ে তিনি ভিডিও গেম তৈরি করেন। তবে এসবই ছিল শুরুর শুরু। ১৯৭৬ সালে স্টিভ তার দুই বন্ধু স্টিফেন ওজনিক, রোনাল্ড ওয়েনকে নিয়ে 'অ্যাপেল কম্পিউটারস্'-এর সূচনা করেন। না ছিল কোনো ফান্ড, না কোনো পরিকাঠামো। শুধু ছিল অসীম ইচ্ছা। সফল হওয়ার ইচ্ছা। আর এটাই এগিয়ে নিয়ে যায় স্টিভ বাহিনীকে। ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে জবস বাজারে আনেন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কম্পিউটার 'ম্যাকিনটশ'। এর জনপ্রিয়তাই অ্যাপেল-এর বিশ্বাসযোগ্যতাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সব হয়েও কিছুই হলো না। বাড়ানো গেল না অ্যাপেল-এর বাজারদর। বাড়ল না ক্রেতার সংখ্যাও।

অন্যদিকে বিশ্ব-বাজারে ছেয়ে গেল মাইক্রোসফটের নিত্যনতুন পণ্য। বাজার দখলের লড়াইয়ে অ্যাপেলকে পেছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে যায় মাইক্রোসফট; কিন্তু তখনও হাল ছাড়েননি স্টিভ। চালিয়ে যেতে থাকেন লড়াই। এগিয়ে যেতে থাকেন চূড়ান্ত সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। তবে সাফল্যের রাস্তা একাকী। সেই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে মানুষ অনেক সময়ই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। স্টিভও হয়েছিলেন। তার মনের মুক্তি তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন বৌদ্ধধর্মের মধ্যে। সেই টানে তিনি ছুটে এসেছিলেন এই ভারতের মাটিতেও। বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন নিজ দেশে। আজীবন নিজের ভাগ্যের সঙ্গে সংগ্রাম করেছেন স্টিভ। আর তার এই লড়াই গোটা বিশ্বের মানুষকে জোগাচ্ছে বাঁচার ইচ্ছা। স্টিভ আমাদের দেখিয়েছেন, যারা লড়াই করেন তারা কখনো হারেন না। আর এই পৃথিবী শুধু জয়ীদেরই স্যালুট করে।

আজ এ কিংবদন্তির বিদায় ঘটল.... অকালেই চলে গেলেন বিশ্বপ্রযুক্তির মহানায়ক স্টিভ জবস.... বিদায় বন্ধু.... যেখানেই থাকো, ভালো থেকো......


গুরুত্বপূর্ন কিছু ভিডিও লিংক :
১৯৮৪ সালের জানুয়ারি মাসে ম্যাকের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ৪টি বিশ্বসেরার পুরস্কার জয়ী সাড়াজাগানো এক মিনিটের বিজ্ঞাপনচিত্রটি।

১৯৮৬ সালে পিক্সারের বানানো Luxo Jr। দুইটি টেবিল ল্যাম্পের গল্প, একটি ছোট আর অপরটি বড়। এখনো পিক্সারের নাম দেখানোর সময় এটি দেখানো হয়।

ছবির চরিত্রের সব ইমোশন ফুটিয়ে তোলায় সেরা এনিমেটেড স্বল্প দৈর্ঘের অস্কার জয়ী পিক্সারের Tin Toy. যা এনিমেটেড মুভির জগতে এক মাইলফলক।

আইপড আত্মপ্রকাশকারী অ্যাপল মিউজিক ইভেন্ট' ২০০১ এ স্টিভ জবস্।

২০০৭ সালে D5 কনফারেন্সে টেকনোলজিতে নিজেদের অবদান নিয়ে মুখোমুখি স্টিভ জবস্ ও বিল গেটস'র উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ।


সামুতে স্টিভ জবস্’কে নিয়ে কয়েকটি লেখা :
মুনির হাসান : স্টিভ জবসের পথ :
।। পর্ব : ১ : প্রস্তাবনা ।। পর্ব : ২ : পাইরেটস নট নেভী ।। পর্ব : ৩ : আদর ও বকা সমানে সমান ।। পর্ব : ৪ : সহজ নয় এই পথ চলা ।। পর্ব : ৫ : টয় স্টোরির গল্প ।।

বিলাশ বিডি : “ভালোবাসার কাজটি খুঁজে নিতে হবে” – স্টিভ জবস এর বিখ্যাত সমাবর্তন বক্তৃতা

দীপান্বিতা : ‘ক্ষুধার্ত এবং বোকা’ একজন অসামান্য মানুষ

মোঃ সিরাজুল হক : ভবঘুরে থেকে কর্পোরেট সম্রাট

মুভি পাগল : স্টিভ জবস : একজন অসাধারণ প্রেজেন্টার এবং "দি নেক্সট স্টিভ জবস"

দীপান্বিতা : স্টিভ পল জবস্ : চিরকালের নায়কের কিছু ছবি

হিমূ : এক অসাধারণ জীবনকথা... স্টিভ জবস, অ্যাপেল কম্পিউটারের প্রতিষ্ঠাতা।

মি. কচুক্ষেতি : আইস্টিভ: দ্য বুক অফ জবস- প্রকাশের আগেই ধরাছোয়ার বাইরে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০৩
১৬০টি মন্তব্য ৬০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×