somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস

১৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আমার আব্বার নানা শেখ আবদুল মজিদ আমার আব্বার আকিকার সময় নাম রাখেন শেখ মুজিবুর রহমান। আমার দাদির দুই কন্যাসন্তানের পর প্রথম পুত্রসন্তান আমার আব্বা, আর তাই আমার দাদির বাবা তার সমস্ত সম্পত্তি দাদিকে দান করেন এবং নাম রাখার সময় বলে যান—মা সায়েরা, তোর ছেলের নাম এমন রাখলাম, যে নাম জগৎজোড়া খ্যাত হবে।’

'শেখ মুজিব আমার পিতা' বইতে এভাবেই লিখেছেন বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। পরিবারের খোকা গোপালগঞ্জবাসীর মিয়া ভাই হয়ে বড় হতে থাকে। অসহায়, অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে আন্দোলন করে অধিকার আদায়ে মুজিব কখনো নিজের কথা ভাবে নি। ৫৫ জীবনের মূল্যবান ৪৬৮২ দিন কাটিয়েছেন অন্ধকার কারাগারে। ফাঁসির আদেশ হয়েছে, নিজের চোখের সামনে কবর খুড়া দেখেও একটু ঘাবড়ে যান নি। সব সময় বাংলার মানুষের কাছে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। ১৭ মার্চ, ১৯২০ সালে টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া দেব শিশুই বাংলাদেশের স্থপতি, স্বাধীনতার ঘোষক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ড. নীলিমা ইব্রাহিম ১৯৯৬ সালে 'শিশু দিবস' হিসেবে পালনের সুপারিশ করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশু সুলভ মনের অধিকারী ছিলেন। ভীষণ বন্ধু বৎসল মানুষ ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বাল্য বন্ধুকে নিয়ে একটা ঘটনা আমার পরম শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ড. সেলিম তোহা স্যারের কাছে শুনেছিলাম। আজ যখন জাতির জনকের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস নিয়ে লিখতে বসলাম ঘটনাটি মনে পড়ে গেল।


১৯৭৫ সালের মার্চ মাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন রাষ্ট্রপতি। তিনি তার নিজ জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় এক সফরে এসেছেন। তার ছোটবেলার বাল্য বন্ধু, তার নাম মানিক। তিনি বঙ্গবন্ধু এসেছে জেনে টুঙ্গিপাড়ায় তার বাড়িতে দেখা করতে যান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মানিক বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বঙ্গবন্ধু যখন কোলকাতা, ঢাকা বা অন্য কোথাও থেকে লঞ্চে আসতেন। লঞ্চ থেকে মানিকের বাড়ির সামনে গিয়ে চিৎকার দিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে সঙ্গে করেই নিজ বাড়িতে যেতেন। যায় হোক বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়ায় এসেছেন স্বাভাবিকভাবেই অনেক মানুষের জন সমাগম। মানিক দূরে দাড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু যেকোনো ভাবে দেখতে পায়। বঙ্গবন্ধু ডেকে বলে 'কি রে মানিক তুই দাড়িয়ে ক্যান?' কাছে ডেকে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে বসতে দেন। কি রে তোর সাথে কতদিন দেখা হয় না। তুই কি ঢাকায় যাস না? তখন মানিক জবাবে বলে আমি ঢাকায় যায় কিন্তু তুমি তো এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি তোমার সাথে দেখা করতে অনেক প্রটোকলের প্রয়োজন আছে। সেই প্রটোকল ভেদ করে তো আমার পক্ষে দেখা করা সম্ভব না। তখন বঙ্গবন্ধু অট্ট হাসি দেয় এবং বলেন 'তুই আমার ছোটবেলার বন্ধু, তুই আমার সাথে দেখা করতে যাবি তোর আবার প্রটোকল ভেদ করতে হবে কেন?' এই বলেই বঙ্গবন্ধু তাঁর পিএস কে রাষ্ট্রপতির প্যাড দিতে বলেন। প্যাডে তখনি বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে লিখে দেন ' টুঙ্গিপাড়ার মানিক আমার সঙ্গে যখনি দেখা করিতে আসিবে তখনি দেখা পাইবে' -বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটা লিখে স্বাক্ষর করে দেন। পাসটি মানিককে দিয়ে বলে এই নে তোর পাস এখন থেকে যতবারই ঢাকায় যাবি আমার সাথে দেখা করে আসবি। এই হচ্ছে আমাদের বঙ্গবন্ধুর মহৎপ্রাণ, তার শিশুর মতো ভাবনা, বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা।

লুৎফর রহমান ও সায়েরা বেগমের ঘরে খোকা জন্ম না নিলে হয় তো আমরা একজন বঙ্গবন্ধু, জাতির জনক, স্বাধীনতার ঘোষক, বিশ্ব বন্ধু, নাইট টিঙ্গেল, রাজনীতির কবি, সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিকে পেতাম না। জাতির জনকের আদর্শের দীক্ষা নিয়ে প্রতিটি শিশু আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবার লক্ষে বেড়ে উঠুক।


জয় বাংলা ♥


৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×