লালমনিরহাটে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিএসসি) অংশ না নিয়েও জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে সাজ্জাদ হোসেন সাকিব নামে এক শিশু!
আবার একই স্কুলের মিম মানতাসা নামে এক শিক্ষার্থী সব পরীক্ষায় অংশ নিলেও রহস্যজনক কারণে তাকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। এতে তার ফলাফল দেখানো হয়েছে ফেল হিসেবে!!
অন্যদিকে চাঁদপুরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হতে পেরে অপমান আর ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে নাসরিন আক্তার (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রী!
সব নিউজ একসাথে পড়ে বিস্মিত হলাম বৈকি। কী আজব ব্যাপার স্যাপার। কেউ পরীক্ষা না দিয়েই জিপিএ-৫ পায়। আর কেউ পরীক্ষা দিয়েও ফেল কপালে জোটে। কী অদ্ভুত তামাশা।
স্টাটাসটি লিখতে বসলাম নাসরিনের আত্মহত্যার খবরটা পড়ে। প্রচন্ড খারাপ লাগলো। এইসব নিউজ পড়লেই মন খারাপ হয়ে যায়। এতটুকু শিশু কী এমন জীবনটাকে দেখেছে বুঝেছে যে,এমন বাজে ভুল কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলো! আত্মহত্যাও আজকাল এত সহজ হয়ে গেছে যে,একটি ছোট্ট শিশু চাইলেই করতে পারে!চাইলেই করা যায়!
আগে প্রায় রেজাল্ট পাবলিশের দিন এ রকম দু' চারটা সুইসাইডের নিউজ চোখে পড়তো। তবে তখন এটি ঘটতো SSC ও HSC পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। বাট এখন সেটি JSCতেও ঘটছে!! সুইসাইড টেনডেন্সিটাকে আমরা কৈশোর থেকে শৈশবে এনে দিতে পেরেছি! বাহ!
JSC,PSC নামের এইসব ফালতু অহেতুক পরীক্ষা নামক বোঝা শিশুদের ঘাড়ে না চাপালেই কি পারতো না সরকার এবং সেসব শিক্ষাবিদ নামক অতি মাত্রার পন্ডিতরা? পৃথিবীর আর কোথাও কি এমন বাজে সিস্টেম আছে? উচ্চ মাধ্যমিক লেভেল ক্রস করতে চার চারটি পাবলিক ইক্সামের ঠেলা সামলানো!! কী পরিমাণ মাথা মোটা হলে এমন পদ্ধতি উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করা যায়?
এদেশে শিশুদের নিয়ে, শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাববার মানুষের বড়ই অভাব। সবাই আছেন যার যার তালে। ডঃ জাফর অনেক সুন্দর কথা বলেন,লেখেন শিশুদের নিয়ে কিন্তু কাজের বেলায় নেই। আমরা যে একের পর এক এইসব শিক্ষার নামে,পরীক্ষার নামে,মেধাবী হবার নামে শিশুদের থেকে তাদের শৈশব কৈশোরের সোনালী দিন ক্ষণ মুহূর্তগুলো কেবল কেড়েই নেই নি সেই সাথে এমন এক মেন্টাল ও ফিজিক্যাল প্রেশারেও ফেলে দিয়েছি যা এককথায় টর্চার! ফিজিক্যাল টর্চার। মেন্টাল টর্চার। সাইকোলজিক্যাল টর্চার।
শিশু নাসরিনের আত্মহত্যার দায়ভার কি কেবলই তার উপর,তার পরিবারের উপর বর্তায়? এই সমাজ এই রাষ্ট্রের এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থারও নয় কি??