somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'ঈদে মীলাদুন্নবী' আমরা কেন মানবো না?পালন করবো না? এর বিরোধিতায় বা কেন করছি?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামী শরীয়তে ঈদ দু'টা।

কিন্তুু 'আশেকে রাসূল'(!) ও সুন্নী(!) দাবিদার বেদাতীদের মতে ঈদ তিনটা!!
তৃতীয় ঈদ: ঈদে মীলাদুন্নবী। তাদের মতে এটিই শ্রেষ্ঠ ঈদ। যা পালন করাটাও ফরজ! ওয়াজিব থেকে একধাপ এগিয়ে! দুই ঈদেরই সুনির্দিষ্ট নামাজ আছে, করনীয় বর্জনীয় বিধান রয়েছে এবং কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসের সুনির্দিষ্ট দলিল আছে। কিন্তুু বড়ই দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয়, এইসব মৌসুমী 'আশেকে রাসূল' বেদাতীদের তৃতীয় ঈদের শরীয়তে কোন দলিল নাই। প্রমান নাই। বিধান নাই। তবে?!

ওরা এই কথিত শরীয়ত বহির্ভূত তৃতীয় ঈদকে বৈধ করতে যা বলে তা সবই অতি আবেগীয় কথাবার্তা এবং ধর্ম নিয়ে অতি বাড়াবাড়ি। মনে করা হয়,ওদের এই তৃতীয় ঈদের আইডিয়াটাও ধার করা। ওদের নিজস্বতাও নেই। কিভাবে?

খৃস্টরা মনে করে সবচেয়ে বড় ও পবিত্র দিন যিশু খৃস্টের জন্ম দিন। যিশু খৃস্ট হলো ওদের সান অব গড। সকল পাপের জিম্মাদার। তার বার্থডে থেকে বড় আর কী হতে পারে। থাকতে পারে। সো ঐদিনই বড় দিন। পবিত্র দিন। এবং উৎসবে মাতয়ারা হবার দিন। ঠিক তেমনি মৌসুমী 'আশেকে রাসূল' বেদাতীরাও মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন যে,সকল উৎসবের বড় উৎসব: 'ঈদে মীলাদুন্নবী'। নবীর জন্মদিন। খৃস্টারা ঘটা করে র্যালী বের করে এবং এসব বেদাতীরাও জশনে জুলুশের নামে একি কাজ করে। কী সাদৃশ্য!

রাসূলে করিম (সাঃ) ইসলামী শরীয়তে বাড়াবাড়ি, নবসংযোজন করতে কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন বারংবার। অথচ কী অদ্ভুত ও পরিতাপের বিষয় যে,সেই রাসূলের বার্থডে নিয়েই এইসব বেদাতীরা বাড়াবাড়িতে সকল সীমাসংঘন করে চলেছে। ধৃষ্টতা, অতি বাড়াবাড়ি এবং বেয়াদবির এ এক ঘৃণ্য উদাহরণ!

'ঈদে মীলাদুন্নবী' আমরা কেন মানবো না?পালন করবো না? এর বিরোধিতায় বা কেন করছি? এর তাত্ত্বিক আলোচনায় না গিয়ে কেবল কমন সেন্স থেকে কিছু কারণ তুলে ধরছি:

☑ কুরআন হাদিস ফিকহ এমনকি রাসূলের সীরাতগ্রন্থেও এমন জন্মদিন পালনীয় করনীয় বিষয়ে কিছ্ছুই নেই। জন্মদিন পালন ব্যাপারটিই ইসলামে নেই।
☑ রাসূল তাঁর জীবদ্দশায় এমনটি কক্ষনোই করেন নি। নির্দেশ দেন নি। উৎসাহ দেন নি।
☑ খেলীফায়ে রাশেদাসহ লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরামদের কেউই জীবনে এমনটি করেন নি।
☑ তাবেঈদের কেউ এটি পালন করেন নি।
☑ তাবে তাবেঈদেরও কেউই পালন করেন নি।
☑ পুরো ইসলামের সত্য ও স্বর্ণ যুগব্যাপী এই মীলাদুন্নবীর কোন প্রচলনই ছিল না। অনুপস্থিত। একটি মাত্রও নজীর নেই।
☑ দিনটি, তারিখটি কেবলই জন্মবার নয়,মৃত্যুবারও। আনন্দ থেকে শোকটাই বেশি হবার কথা। এতো জশন জুলুশ ফূর্তি উৎসব কেমনে আসে??
☑ যা কুরআন হাদীস সুন্নাহ সত্যযুগে কেউই করেন নি, মানে নি,সেটি আপনি কেন করতে যাবেন? মানতে যাবেন?

প্রশ্ন ওঠে, তবে এটি কোত্থেকে এলো? জন্ম নিল?

লেখার কলেবর বাড়ছে তাই সংক্ষেপে বলি: চতুর্থ হিজরী শতাব্দীতে ফাতেমী গোত্রের তথাকথিত দাবিদার (যারা নিজেদেরকে ফাতেমার বংশধর বলে মিথ্যা দাবি করে) উবায়দী গোত্রের শী‘আ শাসকগণ এবং তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম আল মু‘য়িয লি দ্বীনিল্লাহ নামক শাসক মিশরে এই বিদ‘আত প্রবর্তন করে।

অতঃপর ৬ষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর শেষ দিকে অথবা ৭ম হিজরী শতাব্দীর শুরুর দিকে আবূ ছা‘ঈদ কুকুবুরী পুনরায় নব উদ্যমে এই বিদ‘আতটি চালু করে। সে প্রতি বছর রাষ্ট্রীয় বিশাল অর্থ ব্যয় করে রাবী‘উল আওয়াল মাসে মীলাদুন্নাবী উপলক্ষে অত্যন্ত জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে থাকে। আর এভাবেই এই জঘন্য বিদ‘আতটি মুসলিম সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

সো,এই 'নবীপ্রেম'এর নামে এই ঘৃণ্য ফেতনা ও ভন্ডদের থেকে নিজে বাঁচুন। অন্যকে উদ্ধার করুন। এদিনটিতে বেশি বেশি দরুদ পড়া যেতে পারে এবং সেই সাথে সীরাত মাহফিলে অংশ নিন কিংবা গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×