somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফাজিল মেয়ে !! বিয়া করবি না মানে ?? (the beginning)

০৭ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাল থেকে মন মেজাজ খুব খারাপ । কাল নিশির সাথে এমন খারাপ ব্যবহার করেছি যে সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে । এমনকি ওর গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছি ।
বেচারী একটা কথাও বলেনি । কেবল আমার দিকে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিল । আসলে ও ভাবতেও পারেনি যে আমি ওর গায়ে হাত তুলতে পারি ! কিন্তু মাথা গরম হয়ে আমার কান্ড জ্ঞান কিছু থাকে না । কাকে কি বলছি কি করছি কিছুর ঠিক থাকে না ।
অফিসের কেবিনে চুপচাপ বসে ছিলাম । সকাল থেকে নিশি একবার আসে নি । আগে প্রতি দিন অফিস এসেই ও আমার কেবিনে আসতো আজ লাঞ্চ আওয়ার হয়ে আসছে এখনও ও আসছে না । মেজাজটা গরম হচ্ছে । তার উপর নিশির উপর রাগ লাগছে খুব ।
ওর উপর রাগ উঠছে ঠিক এমন সময় নিশি দরজা ঠেলে কেবিনে ঢুকল । আমার দিকে খানিক ইতস্তত তাকিয়ে সামনের চেয়ারটাতে বসল ।
-এতোক্ষন আসো নি কেন ?
আমার কথার জবাবে ও চুপ করে থাকল ।
-চুপ করে থাকবে না । কথার জবাব দাও । এতোক্ষন কেন আসো নি ?
নিশি ক্ষীন গলায় বলল কাজ
-করছিলাম ।
-¿¥§&%£€ ! তুমি কি কাজ করছো আমার জানা আছে !!
হঠাৎ করে আমার রাগ বেড়ে গেল ।
-কালকে চড় খেয়ে তোমার শখ মেটে নি ?
নিশি এবার কোন কথা বলল না । চুপ করেই থাকল । আমি আমার রাগ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছি । অফিসে কিছু করে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে ।
নিশি বলল
-আমার একটু কলাবাগান যাওয়া লাগবে । একা একা যেতে ইচ্ছা করছে না । যাবে আমার সাথে ?
-মানে ?
আমি যে এতোক্ষন ওর সাথে চিত্কার চেচামেচি করছি তার কোন ভ্যালুই নাই ওর কাছে । ও আছে ওর কলা বাগানে যাওয়া নি ।
ওর এই দোষটা খুব আছে । আমি একটা বিষয় নিয়ে কথা বলছি ও সেটা নিয়ে কোন কথা না বলে অন্য একটা ভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবে । কাল কেও ঠিক এই জন্য ওকে চড় মেরেছিলাম ।
কাল যখন কেবিনে ও আসলো তখন আমার মুখ খুব গম্ভীর ছিল । বাসা থেকে খুব চাপ দিচ্ছে বিয়ে জন্য । মা তো একে বারে বিয়ে করানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে । আমার মুখ গম্ভীর দেখে নিশি বলল
-কি হয়েছে ?
বিয়ের কথা বললাম ওকে ।
-তাই নাকি ?
যেন খুব মজার কোন কথা বলেছি ।
-করে ফেল । আমি মেয়ে দেখবো ।
-নিশি ফাজলামো করবে না ।
-আচ্ছা করবো না । এখন আমার সাথে একটু নিউ মার্কেটে যেতে পারবে ? একটু দরকার ।
-নিশি আমি কিন্তু সিরিয়াস ।
-আরে আমিও তো সিরিয়াস । আমাকে নিউ মার্কেট যেতেই হবে ।
মেজাজটা সত্যি সত্যি গরম হয়ে গেল । কষে একটা চড় লাগালাম ওকে ।
-এক্ষনি বেড়িয়ে যাও । আমার সামনে থেকে ।
নিশি কিছুক্ষন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল । তারপর মাথা নিচু করে চলে গেল ।

-যাবে না ? নিশির কন্ঠে কেমন একটা আকুতি ।
-কেন যাবো আমি তোমার সাথে ? তুমি কে আমার ?
-চল না প্লিজ ।
-শোন ঢং করবা না , ঠিক আছে ? তোমার সাথে আমি যাবো না । যাকে বিয়ে করবা তার সাথে যাও গে । আমাকে যখন রিফিউজ করেছ তখন আমার সাথে যাওয়ার এতো শখ কেন ?
নিশি একটু মন খারাপ করল । বলল
-এমন কেন করছ আমার সাথে ? আমি ....
ও বলতে গিয়ে থেমে গেল ।
-আচ্ছা ঠিক আছে যেতে চাও না যেতে হবে না । আমি যাই ।
ও যেন কি বলতে চেয়েছিল । কিন্তু থেমে গেল । আসলে ও আমাকে কেন বিয়ে করতে রাজি হল না আমি এখনও ঠিক বুঝতে পারি নি । গভীর কোন কারন আছে কি ? ওর চোখ দুটো চিৎকার করে বলছে যে ও আমাকে ভালবাসে ।
তাহলে বিয়েতে রাজি কেন হচ্ছে না ?
-দাড়াও ।
নিশি দাড়াল ।
-কখন যেতে হবে ?
নিশির মুখে হাসি ফুটে উঠল । কি মিষ্টি একটা হাসি ! তবে একটু যেন বিষন্ন ।
-অফিসের পর । ও আবায় হাসল ।

রিক্সায় চড়ার সময় নিশির হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিলাম । বহুদিন ওর হাতটা ভাল করে ধরা হয় না ।
-খুব ব্যাথা পেয়েছিলে ?
-ব্যাথা ? কেন ?
-ঐ যে কালকে চড় মারলাম তোমার গালে ।
ওর গালটা আলতো করে স্পর্শ করল । ও ওর মুখটা একটু সরিয়ে আরো একটু ভাল করে আমার হাতের উষ্ণতা নিল ।
-রাগ করেছ আমার উপর ?
- আমি কখনও তোমার উপর রাগ করেছি কখনও ?
ও ওর হাতটা দিয়ে আমার হাত আর একটু ভাল করে ওর গালের সাথে চেপে ধরল
-তুমি ছাড়া আর কে আছে আমার এখানে ?
আমি নিশির দিকে তাকিয়ে থাকি । আমার জন্য মেয়েটার ভালবাসার কোন কমতি নেই । আমাকে ছাড়া ও আর কিছু ভাবেও না । তাহলে ও আমাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না কেন ?
আমি বলল
-জানো নিশি আমি এখনও সেই স্বপ্নটা দেখি ।
নিশি আমার দিকে বিষন্ন চোখে তাকিয়ে রইল ।
-মনে আছে আমরা ঠিক করেছিলাম আমরা প্রতিদিন রাতে ছাদে যাবো । তোমার কোলে মাথা রেখে শোবো । তুমি আমার বিলি কেটে দিবে । রাত বেশি হয়ে গেলে বাসায় যাবো । কোন কোন দিন সারা রাত গল্প করবো । তুমি ঘুমাতে চাইলেও তোমাকে ঘুমাতে দেবো না ।
নিশি এক ভাবে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে । ওর চোখে পানি জমতে শুরু করেছে । আমি আবার বললাম
-বিয়ের দুবছর পর আমরা একটা বাবু নেব । তোমার মনে আছে সব সময় একটা মেয়ে বাবু চাইতে । এমন কি তার নামও ঠিক করে রেখেছিলে । নাম টা মনে আছে তোমার ?
-অপু চুপ কর ।
নিশির চোখ দিয়ে ততক্ষনে পানি পরতে শুরু করেছে । আমি আবার বললাম
-মনে আছে তোমার ?
নিশি কাঁদতে কাঁদতেই বলল
-মনে আছে আমার !
-তাহলে অন্য কিছু কেন তোমার মনে নেই ? তুমি কেন আমাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছ না ? আমরা পারফেক্ট কাপল । একে অপরকে এতো ভালবাসি তাহলে তুমি কেন রাজি হচ্ছ না ?
নিশি কোন কথা বলল না । মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগল ।
-আচ্ছা ঠিক আছে ! আমি বললাম
-তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও না , ঠিক আছে । মেনে নিলাম । আমাকে তুমি একটা যুক্তি সঙ্গত কারন কারন দেখাও ।
আমি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম
-হ্যা এমন হতে পারে যে এখন তুমি আর আমাকে ভালবাসো না ।
নিশি জট করে আমার দিকে তাকাল ।
-কি ভালবাসো না আর ?
নিশি নিরব চোখে তাকিয়ে থাকল আমার দিকে । ওর চোখ দিয়ে এখনও পানি পড়ছে । কেমন যেন একটা অভিমান দেখলাম ওর চোখে ।
-কি ভালবাসো ?
ওর চোখে দিকে তাকালাম । আবার বললাম
-বাসো না ?
অনেকক্ষন পর বলল
-বোঝ না? অপু আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি । অনেক বেশি । তাইতো তোমার ভাল চাই । আমার কারনে তোমার কোন ক্ষতি হবে এটা আমি কোন দিন মেনে নিতে পারবো না ।
-মানে কি ? তোমার দ্বারা আমার কিভাবে ক্ষতি হবে ? ও কোন কথা বলল না ।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২০
৪৫টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×