somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ার আমি খ্যাতা পুরি !!

২৫ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি কিছুটা সময় সাইরার দিকে তাকিয়ে রইলাম । বুঝতে পারতেছি আমার রাগ উঠতেছে ! আমি চাচ্ছি না যেন আমার রাগটা না উঠে ! কারন পরিসংখ্যান বলে রাগ উঠলে আমার মাথায় ঠিক মত কাজ করে না । আমার এই রেকর্ডও আছে যে রাগের মাথায় আমি আমার বেশ কিছু বান্ধবীদের কে থাপ্পর মেড়েছি ! এই রাগের জন্য আমার প্রথম গার্লফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে চলে গেছে ! আর এখন যদি রাগের জন্য আমার বিয়েটাও ভেঙ্গে যায় তাহলে কেমন করে হবে !
কথায় আছে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন !! কিন্তু এই মেয়ের উপর তো রাগটা ঠিক মত কন্ট্রল করা যাচ্ছে না !
আমি তবুও মাথাটা যথা সম্ভব ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করলাম । বললাম
-কি বললে তুমি ? আবার বল ?
সাইরা বলল
-তুমি ঐ মেয়েটার দিকে তাকিয়েছ কেন ?
-কোন মেয়েটার দিকে ?
-আ হা ! এখন বলছো আবার কোন মেয়েটার দিকে ? তুমি খুব ভাল করেই জানো কোন মেয়েটার দিকে ! ঐ যে তোমার ডান পাশের কালো টপস আর জিনস পরা !
এবার আমি তাকালাম মেয়েটার দিকে । সত্যি সত্যি এই প্রথম বার মেয়েটার দিকে তাকালাম ।
ভালই তো !
সাইরা বলল
-এই তো আবার কেন তাকালে ? আমি তো তোমাদের ছেলেদের কে খুব ভাল করেই চিনি । সুযোগ পেলেই হল !
আমার মেজাজ টা আর একটু খারাপ হল । খানিকটা মেজাজ নিয়েই বললাম
-তাকিয়েছি । ভাল । তো কি হয়েছে ?
সাইরা যেন আকাশ থেকে পড়ল ।
-কি হয়েছে মানে ? আমি তোমার সাথে রয়েছি তার পরেও তুমি অন্য মেয়ের দিকে তাকাবে কেন?
-কেন তাকাব না ? তুমি আমাকে বল কেন তাকাবো না ? তুমি যখন আমার সাথে থাকো তখন কি অন্য ছেলের দিকে তাকাও না । নাকি চোখ বন্ধ করে থাকো ?
এমন সময় ওয়েটার এসে হাজির । আমাকে বলল
-স্যার কি খাবেন ?
আমি ওয়েটারের দিকে তাকালাম । সাইরাও তাকালো !
-তুমি পরে আসো !
-জি আচ্ছা !
ওয়েটার চলে গেল । ওয়েটার চলে যেতেই সাইরা কে বললাম
-তুমি ওয়েটার দিকে কেন তাকালে ?
সাইরা এবার সত্যি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে । আমি যে এমন একটা কথা বলতে পারি এটা সাইরা ভাবতেই পারে নি !
-কি বললে তুমি ?
-তুমি ঠিক ই শুনেছ ! ওয়েটার দিকে কেন তাকালে ?
আমার দিকে আগুন দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে সাইরা বলল
-ছিঃ ! তোমার রুচি এতো নিচ ! আমি ভাবতেই পারি নি । আমি এই জন্য তোমাকে পছন্দ করতে চাই নি । কবল বাবা বলেছিল বলে ! আর তুমি বাবার বন্ধুর ছেলে বলে ! তা না হলে তোমার থেকে আরো হাজার গুন ভাল ছেলের সাথে আমি এঙ্গেইজমেন্ট করতাম । কত ছেলে আমার পরছনে ঘুরে
-খুবই ভল কথা । যাও সেই সমস্ত ভাল ছেলের কাছে যাও !
আমি উঠে চলে এলাম । এই মেয়ের সাথে আর একটু বেশিক্ষন থাকলে আমার মেজাজ ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে !
কি চমচৎকার কথা !
আম যদি অন্য মেয়ের দিকে তাকাই তাহলে সেটার কৈফৎ আমাকে তার কাছে দিতে হবে ?
কেন দিব ?
তোর সাথে বিয়ে হচ্ছে বলে ??
তোর বিয়ের আমি খ্যাতা পুরি !!

আসলে পল্টু ভাই ঠিকই বলেছিল ।
-বৎস ! বিবাহ করিবে ঠিক আছে ।
কিন্তু বিবাহের জন্য যে কোন একটি গুন বিচার করিবে !
হয় সুন্দরী নারী অথবা ধনবান পিতার কন্যা !
আমি বলললাম
- ভাই আমি যদি ধনবান পিতার সুন্দরী কন্যা খুজি !
পল্টু ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তাহলে তুমি তাহার স্বামী হইবে না হইবে তাহার পালতু কুকুর !!
কথাটা আসলেই সত্যি ! আমি পালতু কুকুরই হয়ে যাচ্ছিলাম । আল্লাহ বাচিয়েছে ।
বাসায় আসতে না আসতেই মা বলল
-সাইরা ফোন করেছিল ।
আমার মেজাজ এমনিতেই খারাপ ছিল । তার উপর আসটে না আসতেই ই ফাজিল মেয়েটার কথা শুনে আরও খানিকটা মেজাজ খারাপ হয়ে গেল !
-তো আমি কি করবো ? নাচবো ?
মা বলল
-তোদের মধ্যে কিছু হয়েছে । ও বলল নাকি এঙ্গেইজমেন্ট টা অফ রাখতে !
আমি মার দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠ বললাম
-তুমি কি চাও ? তোমার ছেলে পলতু কুকুর হয়ে যাক ?
আমার মা বোধ হয় আমার কথা ঠিক মত বুঝতে পারলো না । কেবল অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো !
আমি বললাম
-ঐ মেয়েকে আমি বিয়ে করবো না । বিয়ের আগেই ঐ মেয়ে আমাকে যে ভাবে শাসন করা শুরু করেছে না জানি বিয়ে হলে কি করবে ! তুমি বাবা কে বল আমি ঐ মেয়েকে বিয়ে করবো না !
মা আর কিছু বলল না । বিরস মুখে চলে গেল !

সাইরার সাথে আামর পরিচয় অনেক দিনের । তবে ঐ ভাবে ঠিক কখনও ভাবিনি ! আব্বার বন্ধু মেয়ে তাই চিনতাম ! মাঝে মধ্যে আমাদের বাসায় আসতো ! তবে কথা হয়েছে খুবই কম ! ইতুর সাথে কথা বলত !
ইতু আমার ছোট বোন !
চাকরী পাওয়ার পর থেকে লক্ষ্য করলাম যে সাইরার এ বাড়িতে আসা যাওয়া যেন একটু বেড়ে গেছে ! আমি প্রথমে কিছু বুঝতাম না । আসলে বোঝার কোন দরকার ছিল না !
কিন্তু একদিন ঠিকই বুঝতে পারলাম যে আসার কারন কি ?
আমার মা যখন আমাকে সাইরার কথা বলল আমি একটু অবাক হলাম ।
মেয়েটা এমনিতেই একটু স্টাইলিস তার উপর বড়লোক বাপের মেয়ে ! এই টাইপের মেয়ে আমার মত ছেলেদের খুব একটা পছন্দ করে না । তাহলে এই মেয়ে কেন আমার সাথে বিয়েতে রাজি হল ?
কে জানে ?
মেয়েদের মাথায় কখন কি আসে !
আমি রাজি হয়ে গেলাম ! আর না রাজি হবার কোন কারনও অবশ্য ছিল না ! সব ছেলেদের মনে মধ্যে একটা স্বপ্ন থাকে সাইরার মত একটা বউ পাওয়ার ! আমার মনেও ছিল !
সাইরার সাথে যখন পারিবারিক ভাবে কথা বার্তা চলতে লাগলো আমিও বললাম খারাপ কি ?
সাইরার সাথে মেলামেশা বাড়তে লাগলো । আমরা এদিক ওদিক বেড়াতে যেতাম ফোনে কথা বলতাম ! ভালই লাগতো !
প্রথম প্রথম ভালই চলছিল ! কিন্তু আস্তে সাইরার ডোমিনেটিং ভাবটা টের পেতে লাগলাম ! সে আমাকে প্রায় বুঝানোর চেষ্টা করত যে সে সব দিক দিয়ে আমার থেকে পারফেক্ত ! তাই তার সব কথা আমাকে শুনতে হবে ! তার কথা মত চলতে হবে ! সব কিছুর আগে তাকে প্রধান্য দিতে হবে !
আমি প্রথম প্রথম ব্যাপারটা আমলে নেওয়া চেষ্টা করতাম না ! কিন্তু এক সময় ব্যাপার টা খুব প্রকট আকার ধারন করা শুরু করলো যে আমি খানিকটা বিরক্ত হয়ে উঠলাম ।
ব্যাপার আমি প্রথম বুঝতে পারি একদিন রাতে !
আমি আমার বন্ধু সাথে কথা বলছিলাম ! এমন সময় সাইরা ফোন দিল ! আমি মনে করলাম যে বন্ধুর সাথে কথা বলি তারপর ওকে ফোন দিবো ! ধশ পনের মিনিট পরে ফোন দিলাম সাইরা কে !
-কার সাথে কথা বলছিলা ?
আমি সাইরার গলার স্বর শুনে একটু অবাকই হলাম ! সাইরার গলায় স্পষ্ট কর্তৃত্বের সুর !
-মানে ?
-তুমি এতো রাতে কার কাছে কথা বলছিলা ? আমি ফোন দিলাল তারপরও তুমি কথা বলছিলা !
আমি বললাম
-দেখ ! আমি আমার এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম !
-বন্ধু না কি বান্ধবী ?
আমি সাইরার কথায় অবাক না হয়ে পারলাম না !
বললাম
-বান্ধবীর সাথে কথা বললেই বা কি ? কোন সমস্যা আছে কি ?
-কি বললে তুমি ? কোন সমস্যা নাই ?শোন আমার সাথে এসব চলবে না !
-কোন সব চলবে না ?
-যা তুমি করছো ! রাত রাত ভরে তোমার অন্য গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা আমি একদম সহ্য করবো না !
আমি মেজাজটা খানিকটা খারাপ হল । আমি আর কথা না বলে ফোন রেখে দিলাম ! কথা বললেই আমার মেজাজ আরো খারাপ হবে !
আমি পারলে ঐদিন সাইরার সাথে সব কিছু শেষ করে দেই । কিন্তু আমাদের পরিবার এর ভিতরে জড়িত ছিল তাই হুট করে কিছু করা যাচ্ছিল না !
আমি দিনদিন সাইরার এসব জ্বালাতন সহ্য করছিলাম । কিন্তু আর না !
আর সহ্যের একটা সীমা থাকে তো !
সব জাহান্নামে থাকুক !!

রাতের বেলা বাবা ব্যাপার টা জানতে চাইলেন ! আমি বাবাকে সব কিছু বললাম । বললাম যে সাইরা কে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না । কারন টাও ব্যাখ্যা করলাম !
বাবা খানিকটা অসন্তুষ্ট হলেও কিছু বললেন না । আসলে বাবা কোনদিন আমার উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেই নি ! আমি মোটামুটি সব কিছু সবকিছুতেই স্বাধীনতা পেয়েছি ! আর এটা তো আমার জীবনের কথা !

তারপর থেকে দিন ভালই কাটতে লাগলো ! সাইরার খবরদারী ছিল না ! এটা ভাল লাগছিল ! এটো দিন ওর জন্য আমি ঠিক মত ফুচকাও খেতে পারতাম না ।
ওর কথা মত ফুচকা হল একটা অখাদ্য ! রাস্তার পাশে দাড়িয়ে খেতে হয় ! জার্ম খেতে হয় ! আমার একটা ছুটির দিনও আমি শান্তি মত কোথাও যেতে পারি নি ! তার পছন্দ কাচে ঘেরা দোকান ! আমেরিকান বার্গর কেএফসি অথবা বিএসছি !
জীবনটা একে বারে ছাড়া ছাড়া হয়ে গেছিল !
অনেকদিন পর আজ ভার্সিটি এলাকায় আসলাম । আজিজ মামা ফুচকা না খেলে কি হয় ! পুরো জীবন বৃথা !!
এই ফাজিল মেয়েটার জন্য এই জিনিস আমি খেতে পারি নি ! আজ শান্তি মত কাহবো !

আমি সবে মাত্র একটা ফুচকা মুখে নিয়েছি ঠিক তখন আমি একটা অদ্ভুদ দৃশ্য দেখলাম । সাইরা কে দেখলাম এদিকে আসতে ! প্রথমে মনে হল হয়তো ভুল দেখছি !
নাহ ভুলই দেখছি ! সাইরা প্রাইভেটে পড়ছে ! নর্থসাউথে ! এখানে আসার কোন মানেই নেই ! আর এই এলাকা ওর পছন্দও না !
এ নিশ্চই অন্য কেউ ! সাইরার মত কেউ হবে হয়তো ! চশমা পরি নি তাই মনে হয় এমন মনে হচ্ছে ।
চশমাটা পরবো নাকি?
তারপর মনে হল কি দরকার ?
কাল মা বলছিল যে বাবা নাকি সাইরার বাবার সাথে কথা বলেছে ! আমি যে বিয়ে করতে চাইছি না এটা জানিয়ে দিয়েছে । সুতরাং আমার এটা নিয়ে ভাবার কোন দরকার নাই ! সাইরা হোক বা না হোক ! আমার কি !
হু কেয়ারস ম্যান !!
আমি এখন আমার ইচ্ছা মত কাজ করবো ! কারো দিকে দেখার টাইম নাই !!
আমি আর একটা ফুচকা মুখে দিলাম !
আহা ! কি মজা !!
সাইরার মত মেয়েটা ফুচকার অর্ডার দিল !
আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে সাইরা হতেই পারে না ! সাইরা বাইরের এরকম খোলা জায়গার খাবার কখনও খায় না !
এই মেয়েটা সাইরা হবার প্রশ্নই আসে না !
আরে না হোক !
কি যায় আসে !!
ফুচকা নিয়ে মেয়েটা আমার থেকে একটু দুরেই বসলো ! কিছু সময় যাওয়ার পরেও মেয়েটা যখন একটা ফুচকা মুখে দিল না তখন আমার মনে একটু সন্দেহ দেখা দিল ! মেয়েটা যেন খানিকটা ইতস্তঃ করছে ! আমার মনে এবার একটু কৌতুহল হলই !

আমি এতো ক্ষন ভাল করে দেখি নি ! এবার চশমাটা পরে তাকালাম মেয়েটার দিকে ! সত্য কথা বলতে কি আমার মন ছিল অন্যদিকে ! তাই সাইরা কে আমি ভাল করে চিনতে পারি নি ! আর সাইরার এদিকে আসার কোন সম্ভাবনাই ছিল না । কিন্তু এতো সাইরাই ! এখানে কি করছে !?
আশ্চার্য ব্যাপার !!

যতই বিয়ে না হোক ! আমার পরিচিত আর তার উপর মেয়েটার সাথে ভালই সময় কাটিয়েছি ! এখন এরকম জায়গায় দেখা ! কথা না বললে কেমন হয় ?
আমি নিজেই সাইরার দিকে এগিয়ে গেলাম ! বসলাম ওর পাশে !
একটা ফুচকা মুখে দিতে দিতে বললাম
-এখানে ?
সাইরা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল
-এমনি !
আজ ওর কন্ঠস্বর বেশ নমনীয় !
আহা ! সব সময় যদি এমন হত ! ভালহত ! মেয়েটা এমনিতে খারাপ না শুধু ঐ কর্তৃত্বের ভাব টা না থাকলেই হত !!
আমি খানিক টা অবাক হয়ে বললাম
-তুমি ফুচকা খাচ্ছ? আশ্চার্য !!
সাইরা আমার দিকে আবারও কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো ! ওর চোখে কেমন একটা বিষন্নতা দেখলাম ! সাইরা বলল
-তুমি তো তাই চাইতে !
আমি আরো বেশি অবাক হলাম ! সাইরার কন্ঠে একটু যেন অভিমান ?
সত্যি কি ?
কিন্তু কেন ?
আশ্চার্য !!
-আমি কখনও চাই নি ? আমি কখনও বলি যে তুমি ফুচকা খাও ! ওটা আমার পছন্দ ছিল ! আমি কখনও আমার পছন্দ তোমার উপর চাপিয়ে দেই নি !
-তাহলে কি আমি দিয়েছি ?
বাব্বা !!!
কন্ঠে এতো অভিমান ?
কিন্তু কেন ?
বিয়ে তো ভেঙ্গে গেছে !! এখন এসব করে কি লাভ ?
আর ও এমন টা কেনই বা করছে ?
আমি বললাম
-এখন আমি মিথ্যা কথা বলটে চাই না !
আমি হাসলাম ! আমি খুব একটা কেয়ার করি না ! কি দরকার !! আবার বললাম
-ফুচকা খাও ! ভাল লাগবে !
আমি লক্ষ্য করলাম সাইরা কাঁদছে !
সেকি !!
কেন?
-তুমি এতো সহজে ব্রেকআপ করে ফেললে !
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ! বললাম
-আমি ব্রেক করেছি ! আমি?? সেদিন তুমি কি বলেছিলে মনে আছে ? আমার থেকে আরো হাজার টা ভাল আর হ্যান্ডসাম ছেলে....।
-ওটা তো আমি রাগের মাথায় বলেছি !
-আর কি কারনে তুমি রেগেছিলে মনে আছে? আশ্চার্য এক কারন ! আমি নাকি কার না কার দিকে তাকিয়েছি ! শোন সাইরা তোমার সাথে আছি তার মানে এই নয় যে আমার জীবনে আর কিছু নাই আমার চারপাশে আরো অনেক কিছু আছে !
-তাই বলে তুমি অন্য মেয়ের দিকে তাকাবে !
-তাকালে কি হবে শুনি !! কি হবে ? আমাকে ব্যাখ্যা কর ! যদি আমার ট্রাষ্টই না থাকে তাহলে এসবের কি দরকার !
-আমি ট্রাষ্ট করি তো ! আমি ঐ সময়ে রেগে গিয়েছিলাম ! এই জন্য যা মুখে এসেছে বলেছি ! তারউপর তুমি আবার ঐ ওয়েটারের কথা বলে আমাকে আরো রাগিয়ে দিয়েছিলে !!
আমি একটু চুপ করলাম ! আসলেই ঐ ওয়েটারে কথা বলা বলা মনে হয় হটিক হয় নি ! যে কেউ রেগে যেতে পারে !
সাইরা বলল
-আমি ভেবেছিলাম তুমি বিকালে এসে আমাকে মানাবে ! আমার রাগ ভাঙ্গাবে ! কিন্তু তুমি কি করলে ?
আমি খানিক অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সাইরা আসলেই কাঁদছে ! বেশ ভাল ভাবেই কাঁদছে ! চারিপাশের লোকজন কেমন করে যেন তাকাচ্ছে !আমি ব্যস্ত হয়ে বললাম
-আরে ঠিক আছে ! কাঁদতে হবে না ! আমরা কথা বলে ঠিক করি !
সাইরা আবার বলল
-এই কয়দিন আমি তোমাকে কি পরিমান মিস করেছি ! আমি কোনদিন কোন ছেলের সাথে রিলেশন করি নি ! আমার ইচ্ছায় বাবা তোমার বাবার কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেছে !
আমি সত্যি এবার খুব অবাক হলাম ! এটা কি সত্যি ?
-আর এটা খুব বেশি দোষের ? যদি তার পছন্দের মানুষ অন্য মেয়ের দিকে তাকায় যে কোন মেয়েই রেগে যেতে পারে !
-আচ্ছা ! আচ্ছা বাবা ! আমার ভুল হয়েছে ! ঠিক আছে ! চল এখান থেকে !
সাইরা ফুচকার প্লেট টা একপাশে সরিয়ে রাখল ! একটা ফুচকাও ও মুখে নেয় নি । বলল
-চলল ! এখন তুমি আমার সাথে কাজী অফিসে যাবে !
-এখন ?
-হ্যা ! এখন । আমি আর কোন রিস্ক নিতে চাই না । আমি রাগ করবো আর তুমি আমার রাগ ভাঙ্গানোর বদলে বিয়ে ভেঙ্গে দেবে ! তা হবে না ! চল এখনই চল! এখনই যেতে হবে !
-কিন্তু এখন ? এখন বিয়ে হবে কিভাবে ? বিয়ে করতে তো একটু প্রস্তুতি লাগে ? তার উপর সাক্ষী লাগবে না ? বিয়ের সা্ক্ষী পাবো কোথায় !
-ওটা নিয়ে তুমি চেনশন কর না ! মগবাজার কাজী অফিসে পাশে বিয়ের সাক্ষী সাপ্লাই কোম্পানী ! আছে ! ওখানে থেকে সব মেনেজ করা যাবে !
-কি কোম্পনী ? এরকম কোন কোম্পানী আছে নাকি ? গেলেই দেখবা ! চল এখন !
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না ! সাইরা আমাকে প্রায় জোর করে টানতে টানতে নিয়ে গেল !
আমি স্বাধীন ভাবে বাঁচার দিন মনে হয় শেষ হয়ে এল !!


(একটি নাটকের থেকে খানিকটা অনুপ্রানিত । খানিকটা ! যতসামান্য )
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪৬
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×