somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমার সাথে আমার কল্প কথা !!

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্ব
মিলি প্রথমে ভেবেছিল ট্রেন মানে হল এক গাদা লোক একসাথে যাওয়া আসা করা । আসলে মিলির খুব একটা ট্রেন জার্নি করাও হয় নি । অনেক আগে একবার বাবার সাথে ট্রেনে উঠেছিল শোভন শ্রেনীর বগিতে । একটা লম্বা মত সিটে চারপাচ জন চাপাচাপি করে বসতে হয়েছিল । মিলির সেটা মোটেই ভাল লাগে নি । তাও সে কবেকার কথা ।
কিন্তু মিলি যখন প্রথমে কেবিন টাতে ঢুকলো ওর খুবই পছন্দ হল । অত বড় বগি তো নয় । ছোট্ট একটা কামরার মত । দুপাশে দুটো লম্বা মত সিট । তিন জন করে বসতে পারে । সাথে একটা বাধরুমও আছে । আগের বার যখন উঠেছিল পুরো বগির জন্য মাত্র দুইটা বাধরুম । বাধরুমের জন্যও লাইন ধরতে হয় । এখানে নিশ্চই সে রকম কিছু হবে না ।
মিলির মনে হল পুরো কামরাটা ওদের হলে ভাল হত । জার্নির ছসাত ঘন্টা আবীরের সাথে থাকা যেত । কেবল ওরা দুজনে আর কেউ না ! কিন্তু মিলি চাইলেই তো আর হবে না । মানুষতো উঠবেই ।
একটু পরেই ট্রেনের বাশি শুনা গেল । ট্রেনটা এখনই ছেড়ে দিবে । মিলির মনটা একটু অস্থির হয়ে উঠল ।
আবীর কোথায় ?
আবীর ওকে কামড়ায় তুলে দিয়ে আবার বাইরে গেছে । মিলির একবার মনে হল এই সময় বাইরে যাওয়ার কি দরকার ? জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো ।
কোথাও নাই !
ঠিক তখনই ট্রেনটা একটু নড়ে উঠল । তারপর চলতে শুরু করলো আস্তে আস্তে ।
আবীর কে এখনও দেখা যাচ্ছে না । মিলির বুকের ভিতর আরো জোরে ধরফর শুরু হয়েছে ।
কোথায় গেল মানুষটা ?
নাহ ! আর কামড়ায় বসে থাকা যাবে না । মিলি জানলা থেকে মুখ সরিয়ে দরজার দিকে রওনা দিল । ট্রেন ততক্ষনে বেশ গতিতে চলতে শুরু করেছে । মিলি দরজা খুলতে যাবে ঠিক তখনই আবীর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো । মিলির হঠাত্ করেই এতো রাগ হল ! নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না । আবীরকে খানিকটা কড়া করেই বলল
-কোথায় ছিলেন এতোক্ষন ?
নিজের কন্ঠস্বর মিলি নিজেই চমকে উঠল । আবীরও খানিকটা অবাক হল । মিলি কখনও তার সাথে এমন করে কথা বলে না । আবীর বলল
-আমিতো পাশেই ছিলাম । কেন কি হয়েছে ?
মিলি ততক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়েছে । বলল
-না মানে ট্রেন চলতে শুরু করেছিল তো ...
আবীর বলল
-ভয় পেয়েছ ? আমি ট্রেন মিস করি কিনা এই ভয়ে !
তারপর একটু হাসলো !!
মিলি খানিক ক্ষন মুর্তির মত তাকিয়ে রইল আবীরের দিকে । আবীরের মুখটা ওর মনের ভিতর এক অদ্ভুদ অনুভূতির উদ্ভব ঘটিয়েছে ! একটু যেন খুশি হয়েছে মিলির অস্থিরতা দেখে !
মিলির মনে হল আবীর যদি সারা জীবন এভাবে হাসি মুখে থাকে ও তাহলে সারা জীবনই আবীরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকতে পারবে ।
ইস কত দিন পর আবীরকে হাসতে দেখল ! এর আগে কোন দিন দেখেছে কিনা মিলি মনেও করতে পারল না ।
আজ হলটা কি মিলির ? পদে পদে কেবল নতুন ভাবে সব কিছু আবিস্কার করছে । সব কিছু কেমন নতুন নতুন লাগছে ।
সকালবেলা আবীরের ঐ রকম ভাবে কথা বলা এখন এই ভাবে হাসা !

বিকেল বেলা যখন মিলি তৈরি হচ্ছিল তখনও আবীরের আচরন অন্য দিনের মত ছিল না । একটু যেন ভিন্নতা ছিল ।
আবীর মিলির পছন্দের শার্ট টাই পরেছে । মিলি অবশ্য কিছু বলে নি ! আবীর হাত মুখ ধোয়ার জন্য বাধরুমে গিয়ে ছিল । মিলি কেবল শার্ট টা বিছানার উপর বিছিয়ে রাখলো । এমন জায়গায় রাখলো যেন বাথরুম থেকে বের হয়েই আবীরের চোখে পড়ে !
মিলি আর ও ঘরে থাকে নি ! ঘর থেকে বের হয়ে গেছিল । রান্না ঘরে এমনি টুকটাক কাজ করছিল । যদিও ওর চোখ ছিল শোবার ঘরের দরজার দিকে । কখন আবীর বের হয়ে আসে !!
কিছুক্ষন পরেই আবীর বের হয়ে এল ! আবীরের গায়ে আকাশী রংয়ের শার্ট ! মিলির যে কি ভাল লাগলো ! কিছু বলতেও হল না । স্টেশন আসার পুরো রাস্তাটা মিলি কেবল আবীরের দিকেই তাকিয়ে ছিল ! কেবল যখন আবীর ওর দিকে তাকাচ্ছিল মিলি খানিকটা লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিচ্ছিল !!

-জানলাটা বন্ধ করে দাও ! ঠান্ড আসবে !
মিলি কেবিনের জানলা টা বন্ধ করে দিল ! আবীক ওর সামনেই বসে আছে । মিলির খানিকটা ইচ্ছা হল আবীরের পাশে গিয়ে বসতে ! অবশ্য একটু পরে এমনিতেই বসতে হবে । কেবিনে যখন অন্য লোক উঠবে তখন নিশ্চই আবীরের পাশে গিয়েই বসবে ! কিন্তু যতক্ষন কোন লোক না আসে ততক্ষন কিভাবে আবীরের পাশে গিয়ে বসা যায় ? মিলি ভাবতে থাকে !
এই তো পাওয়া গেছে ।
আবীরের পাশের জানলাটা এখনও খোলা । এমন কি হতে পারে না যে মিলি জানলাটা বন্ধ করে দিল তারপর খুব স্বাভাবিক ভাবে আবীরের পাশে গিয়ে বসলো ?
হতে পারে ?
মিলি একটু ইতস্তত করে উঠে দাড়ালো ! তারপর জানলাটা বন্ধ করে টুপ করে বসে পড়ল আবীরের পাশে !
-কিছু খাবে ?
মিলি হাসলো একটু ! বলল
-না এখন না !
মিলি আর একটু এগিয়ে যায় আবীরের দিকে ! মুখে একটু অস্বস্থি অবশ্য লেগে আছে ! আবীরের কাছে ধরা পরে গেলে লজ্জার সীমা থাকবে না !
অবশ্য আবীরের লক্ষ্য এখন ল্যাপ্টপের দিকে ! মিলি হঠাৎ বলল
-ট্রেন সামনে কোন স্টেশনে থামবে ?
-কি জানি ? কেন ? কিছু লাগবে ?
-না মানে অন্য কোন যাত্রী উঠবে না এখানে ?
-থামবে হয়তো কোথাও ! তবে এটা রিজার্ভ করা ! এখানে আর কেউ উঠবে না ।
-তাই ?
মিলির আসলেই খুব ভাল লাগল কথাটা শুনে । পুরোটা পথ কেবল ওরা দুজন ! মিলির ভাবতেই ভাল লাগছে !


ওদের বাংলোটা একেবারে টিলার উপরে । পুরো টিলাটায় কেবল সবুজের ছড়াছড়ি । জোছনার আলো পড়ে সবুজ গাছের উপর কেমন একটা অদ্ভুদ রং তৈরি করেছে । মিলি কেবল দুরে তাকিয়ে থাকে । চারিদিকে এতো সৌন্দর্য তবুও যেন ওকে এসব কিছুই স্পর্শ করে না ।
মিলি জানালা দিয়ে আর একবার উকি দিল । আবীর ল্যাপটপে কি যেন করছে । মিলির খুব ইচ্ছা করে আবীরকে ডেকে আনতে । এই চমত্কার পরিবেশে আবীরের সাথে বসে বসে গল্প করতে ।
কিংবা নিচে আঁকা বাঁকা পথটা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে । ঐ পথ ধরেও হাটা যায় !
আচ্ছা এমন কি হতে পারে না, মিলি এখন সোজা আবীরের ঘরে যাবে । তারপর ল্যাপটপটা বন্ধ করে দেবে । আবীর খানিকটা রাগ করবে । চোখ গরম করবে । এটা দেখে মিলি বলবে চোখ গরম করে লাভ নাই । বাইরে কি চমত্কার জোঁছনা উঠেছে আর তুমি নিজের বউকে একা রেখে এখানে ল্যাপটপ টিপছো । এখনই এসো আমার সাথে ।
তারপর মিলি আবীরের হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসবে । তারপর দুজন বারান্দায় দাড়িয়ে জোঁছনা দেখবে !
কিন্তু সেই বারান্দায় মিলি একা দাড়িয়ে । বাইরে তাকিয়ে আছে শূন্য দৃষ্টিতে । বাইরের কিছুই যেন মিলিকে স্পর্শ করছে না ।
-একা একা দাড়িয়ে কি করছো ?
আবীরের কথায় মিলি খানিকটা চমকে ওঠে । আবীর ঠিক ওর পাশের দাড়িয়ে । আসলে এমন তন্ময় হয়ে আবীরের কথা ভাবছিল যে বুঝতেই পারে নি আবীর কখন এসে পাশে দাড়িয়েছে । মিলি আবীরের কথার উত্তর না দিয়ে দাড়িয়েই রইল । আবীর বলল
-ঐ আঁকা বাঁকা পথটা সুন্দর লাগছে না ?
আবীর হাত দিয়ে সামনের দিকে দেখাল । মিলির এখন সামনের দিকেই তাকানো উচিত্ কিন্তু মিলি তাকিয়ে আছে আবীরের দিকে ।
কথা বলার সময় আবীরের কন্ঠ যেন একটু কাঁপছিল । সকাল বেলাতেও আবীর যখন ওকে এখানে আসার কথা বলছিল তখনও আবীরের কন্ঠস্বরটা এমন ছিল । যেন কিছুটা অস্বস্থি লাগছে ।
মিলির ভাবতে অবাক লাগে মানুষ নিজের বউয়ের সাথে কথা বলতে এতো অস্বস্থি বোধ কেন করবে ?
মিলি আবীরের দিকে তাকিয়েই বলল
-হুম ।
মিলির আরো কিছু বলতে ইচ্ছা করল । কিন্তু বলতে পারল না । আবীর বলল
-যাবে ওখানে ?
মিলির প্রথমে মনে হল হয়তো ও ভুল শুনলো । আবীর কি সত্যিই ওকে কথাটা বলল ? আবীর আবার বলল
-চল ওখান থেকে হেটে আসি ।
-চলুন ।
মিলির হার্টবীট আবার বেড়ে গেছে । আজ কি হচ্ছে ওর সাথে ? কেবলই অপ্রত্যাসিত আনন্দ ওকে বারবার ছুয়ে যাচ্ছে ! আবীর বলল
-বাইরে একটু ঠান্ডা আছে । চাদর জড়িয়ে এসো ।

চারিপাশে শুনশান নিরবতা । কেবল কি একটা পোকার ডাকার শব্দ আসছে । ডাক টা ঠিক ঝিঝি পোকার না । অন্য কোন পোকা হবে । দুধারে গাছগাছালীতে ভর্তি, মাঝখান দিয়ে রাস্তা । মিলির প্রথম মনে হল ও মনে হয় স্বপ্ন দেখছে ! এমন একটা স্বপ্ন মিলি প্রতিদিন দেখে এসেছে । আজ যেন তা সত্যি হতে চলল ।
আবীর চুপ করেই হাটছে । মিলির মনে হল ওর কিছু বলা উচিত্ । মিলি বলল
-আপনার ঠান্ডা লাগছে না ?
-একটু লাগছে ।
মিলি নিজের গায়ের চাদর খুলতে গেল তখন আবীর বলল
-আরে চাদর খুলতে হবে না !
-আপনার ঠান্ডা ..
-কোন ব্যাপার না ।
দুজন আরো কিছুক্ষন চুপচাপ হাটতে থাকে । আবীর হঠাত্ বলল
-মিলি ! জি ! তুমি আমাকে ভালবাসো ?
মিলি দাড়িয়ে পড়ল । কেবল অবাক বিশ্ময়ে আবীরের দিকে তাকিয়ে আছে । আবীর যে এমন একটা প্রশ্ন করবে এটা ও ভাবতেই পারে নি । আবীর থামে নি । হাটতে হাটতে সামনে একটা বড় গাছেয় নিচে গিয়ে দাড়ায় । গাছের নীচটা পাকা করে বাধানো । আবীর ঐ গাছের নিচটাতে গিয়ে বসল ।
মিলি তখনও দাড়িয়ে এক জায়গায় । আস্তে আস্তে আবীরের কাছে এগিয়ে যায় । আবীরের পাশে বসতে বসতে মিলি লক্ষ্য করে ওর হাত কেমন যেন একটু কাঁপছে ।
উত্তেজনায় কাঁপছে !!
আবীর আজ এ কি প্রশ্ন করল ওকে !
ও কি জবাব দেবে ?
আবীরকে কি ও ভালবাসে ?
বাসেই তো !
আবীর আবার বলল
-কই বলল না তো ?
মিলি কোন কথা বলতে পারে না । কেবল চুপ করেই থাকলো । কিছুক্ষন
চুপ থাকার পর আবীর বলল
-আমি জানি তুমি বাসো । তোমার মনে আছে একবার আমার হাত কেটে গিয়েছিল বলে ঠিক মত ভাত খেতে পারছিলাম না ?
মিলির খুব ভাল করেই মনে আছে । বেশ খানিকটাই কেটে গিয়েছিল । আবীর কিছুক্ষন চামচ দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করে তারপর ছেড়ে দিল । চামচ দিয়ে খাওয়ার ঠিক অভ্যাস নাই আবীরের !
মিলির খুব ইচ্ছা করছিল ওকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতে কিন্তু বলতে পারে নি । আধ পেট খেয়েই আবীর উঠে পড়ে ।
আবীর মিলির দিকে তাকিয়ে বলল
ঐ দিন তুমি নিজেও ভাত খাও নি তাই না ? সারা রাত না খেয়ে ছিল । কি অদ্ভুদ মানুষের মন তাই না ? এই এখন আমার ঠান্ডা লাগছে দেখে তোমার শান্তি লাগছে না । গায়ের চাদরটা আমাকে দেওয়ার কথা ভাবছো ।
মিলি আবারও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে । আবীর আজকে ওর মনে কথা গুলো কেমন করে বুঝে ফেলছে । এতো দিন কেন বুঝে নি ?
আবীর বলল
-আচ্ছা একটু কাছে এসে বস । তোমার চাদরটা যথেষ্ঠ বড় । দুজন একসাথে গায়ে দেওয়া যাবে ।
মিলি আবীরের আরো একটু কাছে এসে বসল । আবীর নিজেই চাদর জড়িয়ে নিল । মিলির হঠাত্ করেই একরাশ ভাললাগা ঘিরে ধরে । চাদর দিয়ে জড়িয়ে ধরাতে মিলি আবীরের খুব কাছে চলে এসেছে । এতো কাছে আর কখনও আসে নি । বুকের ভেতরে কেমন একটা আনন্দ কাজ করছে । আবীর আবার বলল
-জানো মিলি আমি কোন দিন এতো ভালবাসা পায় নি । কারো কাছ থেকে না । আমার বয়স যখন দুই বছর তখন আমার মা আমার বাবাকে ছেড়ে চলে যায় । তার কিছুদিন পরে বাবাও । আমি এতিম খানায় বড় হয়েছি । প্রথম প্রথম খুব অভিমান হত মা বাবার উপর । তারপর সয়ে গেছে । তারপর যখন কলেজে উঠি একটা মেয়েকে আমার খুব মনে ধরে । কিন্তু পরে সেও আমাকে রেখে চলে যায় । আমি ...
-আবির থাক না পুরোনো কথা । আপনার কষ্ট হচ্ছে । আমি এসব শুনতে চাই না ।
-না তুমি শোন প্লিজ । একটু মন খারাপ হোক ! তবুও আমি তোমাকে বলতে চাই ।
মিলির মন খারাপ হয় । আবীরের পুরানো কথা গুলো ওর শুনতে ইচ্ছা করে না । মানুষটার বুকের ভিতর এতো গুলো কষ্ট লেগে আছে । পুরানো কথা মনে করলেই কষ্টা পাবে মানুষটা ।
কি দরকার !
সামনের দিন গুলোর কথা বলুক । সামনের আনন্দের কথা গুলো । আবীর বলল
-জানো আমি ধরেই নিয়ে ছিলাম আমার জীবনটা হয়তো ভালবাসা শূন্যই কাটবে । কিন্তু তোমাকে দেখার পর ...
আবীর চুপ করে গেল ।
মিলি কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে আবীরের দিকে ! তারপর বলল
-আমাকে দেখার পর ?
-আসলে তুমিও খানিকটা আমার মতই ! আদর আর ভালবাসা ছাড়া বেঁচে ছিলে ! আমাকে পেয়ে যেন জীবনের সব টুকু ভালবাসা আমার জন্য ঢেলে দিলে । কিন্তু সেখানেও যেন কিছু হচ্ছিল না । যাকে ভালবাসছ সে তোমাকে ভালবাসছে না ! তাই না ?
-আমি কি তাই বলেছি ? আপনি ....
আবীর একটু চুপ করে থেকে বলল
-আমাকে একটু সময় দাও ! আসলে এরকম ভাবে কারো কাছে কোনদিন আসি নাই তো তাই একটু অস্বস্থি লাগছে ! আস্তে আস্তে ঠি হয়ে যাবে ! আর একটা কথা বলবো ?
-বলেন !
-আমি কোন অফিসের কাজে এখানে আসি নি ! কেবল তোমার সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্যই এখানে এসেছি ! অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম কথা গুলো বলার জন্য কিন্তু অস্বস্থির কারনে ঠিক মত বলতে পারছিলাম না !
আবীর চুপ করেই রইলো !
মিলি কিছুক্ষন কিছু বলতে পারলো না ! কেবল তাকিয়ে রইলো । মিলি ভাবতেই পারছে না আবীর কেবল ওর সাথে সময় কাটানোর জন্যই এখানে এসেছে !!
আচ্ছা আবীর কে যদি এখন জড়িয়ে ধরি ! মিলি ভাবে ! আবীর কি তাহলে খুব রাগ করবে ?
করুক ! এই সময়ে যদি ওকে জড়িয়ে না ধরতে না পরে আর হয়তো পারবে না কোনদিন !
মিলি আবীরকে জড়িয়ে ধরার কথা ভাবছেই এমন সময় আবীর বলল
-তোমার গায়ে তো চাদরই নাই ! শীত লাগছে তো ! আচ্ছা চল এখানে আর বসে থেকতে হবে না ! বাংলোতে চল ।
-না ! যাবো না !
-কেন ?
-এখানে থাকতে ভাল লাগছে ! এই যে আপনার এতো কাছাকাছি বসে আছি ফিরে গেলে বসতে পারবো না !
আবীর একটু হাসলো যেন ! বলল
-চাইলে আর একটু কাছে এসে বসতে পারো !
-আমি কেন চাইবো ? আপনি চান না ?
আবীর চট করেই কোন জবাব দিল না !
একটু সময় নিয়ে বলল
-আমি বললাম না আমাকে একটু সময় দাও ! আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে !
মিলির কি হল মিলি নিজেই বলতে পারবে না । বলল
-না আস্তে আস্তে হলে হবে না ! আমি একটা বছর ধরে অপেক্ষা করে আছি ! আর না !! আমি আর অপেক্ষা করতে পারবো না ! আমি কত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেআছি !!!! কত কিছু বলার আছে !! কত কল্প কথা সাজানো আছে মনের ভিতরে । কত কিছু শোনার আছে ! নআর তুমি বলছো আস্তে আস্তে !!
মিলি একবারে এতো গুলো কথা বলে যেন হাপিয়ে উঠল ! চুপ করে তাকিয়ে রইলো আবীরের দিকে !!

আবীর অবাক হয়ে দেখল মিলি কাঁদছে ! চাদের আলোয় সেই চোখের জল কেবল একটু চিকমিক করছে !! আবীর মিলির দিকে আর একটু এগিয়ে বসলো ! মিলির হাত টা নিজের হাতের ভিতর নিয়ে বসে রইলো !!



আগের পর্বটা লিখে মনে হয়েছিল যেন আর লেখার দরকার নেই ! কিন্তু বেশ কয়েকজন পরের পার্ট টা লিখতে বলে । তাই আবার লিখতে হল !
সবাই ভাল থাকবেন !!
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা !!
সবাই ভাল থাকবেন

২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×