somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা সাড়ে তিনটা কোরিয়ান ড্রামা

৩০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমানে আমাদের দেশে বিশেষ করে মেয়েদের মাঝে কোরিয়ান ড্রামা খুব জনপ্রিয় । সত্যি বলতে কি চার পাঁচ বছর আগেও আমি কোন দিন জানতামও না যে কোরয়ান ড্রামা বলে কিছু আছে । মাঝে মাঝে নিউজ ফিডে কিছু কোরিয়ান মুভির কথা আসতো। তার কয়েকটা দেখা হয়েছে । তবে ড্রামা আসলে দেখা হয় নি কোন দিন । না দেখার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে ওদের ভাষা !

মুভি দেখার পেছনে আমার ভাষা খুব বড় একটা ফ্যাক্টর । আমি সাবটাইটেল দিয়ে মুভি দেখতে একদম পছন্দ করি না । ভাষা হতে হবে বাংলা, ইংরেজি নয়তো হিন্দি, উর্দু । এই ভাষা গুলো আমি বুঝি তাই এই ভাষার বাইরে অন্য ভাষার মুভি কিংবা সিরিজ দেখতে আমার একদম পছন্দ না তা সে যতই ভাল হোক না কেন ! একবার সিনের দিকে তাকাও আরেকবার নিচে সাবটাইটেলের দিকে তাকাও এটা আসলে পোষায় না আমার ! আরও একটা কারণ হচ্ছে চরিত্রদের নাম গুলো আমার কোন ভাবেই মনে থাকে না । কার নাম যে কি সেটা কিছু পরেই ভুলে যাই।

তারপরও কয়েকটা কোরিয়ান ড্রামা গত বছর দেখা শুরু করেছিলাম । বেশির ভাগই এক পর্ব কিংবা অর্ধক পর্ব দেখেই বাদ দিয়েছি । কিন্তু এমন কয়েকটা ড্রামা ছিল যেগুলো বাদ দেওয়া যায় নি । কাহিনী এমনই ইন্টারেস্টিং ছিল যে দেখে শেষ করে ফেলেছি । আজকে সেই রকম তিনটা এবং আরও একটা কোরিয়ান ড্রামার কথা বলব ।

প্রথম কোরিয়ান ড্রামার নাম হচ্ছে ''ইটস ওকে নট টু বি ওকে''। এটা আমার দেখা প্রথম কোরিয়ান ড্রামা। আরও ভাল করে বললে, এই ড্রামাটা আমি প্রথম পুরোটুকু দেখে শেষ করতে পেরেছি ।



এই ড্রামার কাহিনী আসলেই আমার খুবই চমৎকার লেগেছে । দুই ভাই হচ্ছে এই ড্রামার প্রধান চরিত্র । বড় ভাই মানসিক ভাবে আন স্টেবল। ছোট ভাই তার দেখাশুনা করে । সে হাসপাতালের নার্স হিসাবে কাজ করে। নারী প্রধান চরিত্র হচ্ছে একজন বিখ্যাত রূপকথার লেখিকা । এরা সবাই ছোট একটা শহরে থেকে এসেছে । ঘটনা ক্রমে নায়িকা সেই নিজের শহরে ফেরৎ যায় । এবং নায়ক সেই শহরের এক হাসপাতালের কাজ নেয় । এভাবেই কাহিনী এগিয়ে যায় ।

এই ড্রামার আরও একটা চমৎকার দিক হচ্ছে ১৬টা পর্বের প্রতিটি পর্বের শুরু হয় একটা রূপকথার গল্প দিয়ে । এছাড়া এই ড্রামার কিছু সাউন্ডট্র্যাক খুবই চমৎকার । গান গুলো আমার বেশ পছন্দ হয়েছে । তার ভেতরে Elaine (일레인) - Wake Up It's আর Janet Suhh(자넷서) - In Silence

যদি কোরিয়ান ড্রামা পছন্দ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই এটা দেখার পরামর্শ থাকবে । যারা পছন্দ করেন না তাদেরকে কিছু বলবো না ।


দুই নম্বর ড্রামার নাম হচ্ছে ''স্ট্রং ওম্যান ডোবুং সুন'' । এটা রিকোমেন্ডেশন পেয়েছিলাম আমার ছাত্রীর কাছ থেকে । এটা বেশ মজার একটা ড্রামা ।



ডোবুংসুন দের ফ্যামিলিতে একটা সিক্রেট আছে । সেটা হল এই পরিবারের মেয়েরা খুব বেশি শক্তিশালী হয় । এবং এই ক্ষমতাটা তাদের ভাল কাজে ব্যবহার করতে হয় । যদি খারাপ কাজ কিংবা কোন অসৎ উদ্দেশ্য এই ক্ষমতা ব্যবহার করা হয় তাহলে তাদের ক্ষমতা চলে যাবে । যেমন ডোবংসুনের মায়ের ক্ষমতা চলে যায় ।


ডোবুংসুন তার ক্ষমতা লুকিয়েই রেখেছিলো । তবে মাঝে মাঝে সে মানুষকে সাহায্য করতো । গল্পের শুরুতে দেখা যায় যে একদম গুন্ডা একটা স্কুল বাসের ড্রাইভারকে মারধরো করছে । ডো সেই ছবি তুলে পুলিশকে ফোন দিতে গেলে গুন্ডাদের একজন ডো এর সাথে খারাপ ব্যবহার করে । ডো তাদের সেই মাইর দেয় । এটাই দেখে ফেলে গল্পের নায়ক । সে আবার বিশাল একটা কোম্পানীর মালিক । নায়ক ডো এর খোজ বের করে তাকে নিজের বডি গার্ড হিসাবে নিয়োগ দেয় । তারপরই একের পর এক মজার কাহিনী ঘটতে থাকে । এক সময়ে নায়ক ডো এর প্রেমে পড়ে কিন্তু ডো ভালবাসে তার স্কুল জীবনের এক বন্ধুকে । সে আবার পুলিশ অফিসার ।
এই কাহিনীর আরেকটা দিক হচ্ছে ডো দের এলাকাতে এক লোক রাতে মেয়েদের একা পেয়ে আক্রমন করে এবং তাদের ধরে নিয়ে যায় । ঠিক এমনই এক ঘটনাতে ডো এর কাজিন টাইপের কাউকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ডো সেই বদমাইসকে রড দিয়ে এক বাড়ি মেয়ে কাত করে ফেলে । তারপর থেকেই সে ডো এর পেছনে লাগে ।

শেষ পর্যন্ত এই বদমাইস ধরা পড়ে কিভাবে পড়ে তারপর ডো তার পুলিশ অফিসার বন্ধুর মন পায় কিনা কিংবা নায়কই ডোকে নিজের মত করে পেয়ে যায় কিনা এসব নিয়েই কাহিনী । অনেকটাই হাস্যরসে পরিপূর্ন পুরো ড্রামা । এটাও দেখতে পারেন ।


তিন নম্বর ড্রামার নাম ''হোম সুইট হোম''। এই ড্রামাটা দেখতে আমার বিশেষ অসুবিধা হয় নি । কারণ এটা ইংরেজি ডাব করা ছিল ।


পুরো দেশে এক অদ্ভুত ভাইরাসে ভরে গেছে । মানুষ জোম্বী হয়ে যাচ্ছে । কাকে কিভাবে এই ভাইরাসে আক্রমন করছে কেউ বলতে পারছে না । অন্য জোম্বী মুভিতে আমরা দেখেছি এক জোম্বী কোন মানুষকে কামড় দিলেই এই ভাইরাস ছড়ায় কিন্তু এখানে এমন কিছু না । কিভাবে যে আক্রান্ত হচ্ছে সেটা অজানা ।
মূলত একটা বড় বিল্ডিংয়ের ভেতরে আটকা পরা অনেক কয়জন মানুষকে নিয়ে এই কাহিনী । কিভাবে তারা টিকে থাকে কিভাবে লড়াই করে এটা নিয়েই গল্প ।

এই তো গেল তিনটার গল্প । আরও একটা দেখা শুরু করেছিলাম তবে তবে সেটা এখনও শেষ করতে পারি নি । ১৬ পর্বের ভেতরে এগারো পরে গিয়ে আটকে আছি । আর কেন জানি দেখতে ইচ্ছে করছে না । এই ড্রামার নাম ''দ্যা কিংঃ ইটার্নাল মোনার্ক''



এই ড্রামার কাহিনীটাও বেশ ইন্টারেস্টিং । এখানে প্যারালাল ইউনিভার্সের একটা ব্যাপার দেখানো হয়েছে । দুইটা বিশ্ব । দ্য রিপাবলিক অব কোরিয়া আর দ্য কিংডোম অব কোরিয়া । নায়ক কিংডোম অব কোরিয়ার কিং । অন্য দিকে নায়িকার বাস দ্য রিপাবলিক অব কোরিয়াতে ।

ছোট বেলাতে নায়কের চাচা তার বাবাকে হত্যা কে একটা প্রাচীন বাঁশি ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলো । এই বাঁশিটা তাদের রাজাদের কাছে বিশেষ গুরুতপূর্ন । সেই সময়ে একজন চলে আসে এবং নায়ককে রক্ষা করে । নায়ক তাকে দেখতে পা পারলেও তার গলাতে ঝুলানো আইডি কার্ডটা নিয়ে রাখে । সেটা হচ্ছে নায়িকার গলার আইডি কার্ড । তারপর থেকে ২৫ বছর ধরে সে নায়িকা খুজতে থাকে ।

সেই বাঁশির কথা বলেছিলাম, সেই বাঁশিটাই মূলত দুই বিশ্বের ভেতরে ঢোকার একটা উপায় । সেটা হাতে নিয়ে জঙ্গলের একটা বিশেষ দরজার ভেতর দিয়ে অন্য বিশ্বে প্রবেশ করা যায় । সে কিংডোম থেকে রিবালিকে প্রবেশ করে তার ঘোড়া নিয়ে । এবং নায়িকার দেখা পেয়ে যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:০৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×