
কিছু কিছু অভিনেতার মুভি আমাকে কখনও হতাশ করে না । টম ক্রুজ হচ্ছে তাদের ভেতরে একজন । আর মুভির নাম যখন টপ গান তখন যে মুভিটা অন্য রকম কিছু হতে যাচ্ছে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকার কথা না । টপ গান মুভির প্রথম পার্টটা যে আমি কবে দেখেছিলাম সেটা আমার ঠিক মনেও নেই । ৩৬ বছর আগে রিলিজ পাওয়া একটা মুভির সিকুয়্যাল বের হচ্ছে । তাও আবার টপগানের মত মুভির ।
টপগান ম্যাভেরিক মুভিটা শুরুর আগে অবশ্যই প্রথমপার্টটা দেখে নিতে হবে । নয়তো একটা খাপছাড়া ভাব থাকবে মুভির ভেতরে । মুভির ট্রেইলার আগে দেখে নেওয়া যাক ।
মুভি শুরু হয়েছে প্রথম মুভির শেষ হওয়ার ৩০ বছর পরে । এখানে আমাদের মুভির প্রধান চরিত্র পিট ম্যাভেরিক মিচেল একজন নেভির ক্যাপটেন । যদিও তার সাথের সবাই প্রমোশন পেয়ে এডমিরাল পর্যায়ে চলে গেছে কিন্তু সে এখনও রয়েছে গেছে ক্যাপ্টেন পদেই । কেন যে এখনও ক্যাপ্টেন পদেই রয়েছে সেটা প্রথম মুভির শুরুতেই বুঝা যাবে । নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না, উর্ধতন অফিসারের অর্ডার না মানা তাদের ভেতরে অন্যতম ।
যাই হোক মুভির শুরুতে দেখা যায় যে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পিট ম্যাভেরিক এখন প্লেনের স্পিড টেস্ট করা দায়িত্বে নিয়োজিত । সেখানে হাইপারসনিক একটা প্লেনের টেস্টের জন্য তারা অনেক দিন ধরে কাজ করছিলো কিন্তু সেটাকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ আছে । পিট এই অর্ডার অমান্য করে প্লেন আকাশে নিয়ে যায় এবং প্রোটোটাইপকে তার ম্যাক 10 গতিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এক সময়ে সেই গতিতে পৌছিয়েও যায় । কিন্তু যখন টেন ক্রস করতে যায় তখনই প্লেন ক্রাশ করে !
এরপর তাকে পাঠানো হয় টপগানে ! টপগান কি সেটা প্রথম পর্ব দেখলেই সবার জানার কথা । তবুও এখানে ছোট করে বলি যে টপ গান হচ্ছে নেভির একটা স্পেশাল প্রোগ্রাম সেখানে বেস্ট নেভি পাইলটদের ট্রেন করা হয় ! পিট ম্যাভেরিককে এইখানে পাঠানো হয় একদম পাইটলকে ট্রেন করার জন্য ! এই পাইলটদের উপর দায়িত্ব হচ্ছে একটা এনিমি এরিয়ার উপরে আক্রমন করে সেটা ধ্বংশ করে দেওয়া ।
পিট তাদের ট্রেইন করতে শুরু করে। এই ট্রেইনিদের ভেতরেই একজন থাকে যার নাম রস্টার । এই রস্টার আর কেউ নয়, পিট ম্যাভেরিকের পুরানো বন্ধু গুজ ব্রাডশয়ের ছেলে । যারা প্রথম পর্ব দেখেছেন তারা জানেন যে গুজ প্রথম পর্বে মারা যায় এবং এরপরেই ম্যাভেরিক অনেকটা বদলে যায় । সে নিজেকে খানিকটা গুজের মৃত্যুর জন্য দায়ী মনে করে আসছে । এই রস্টারকে এপ্লিকেশন ম্যাভারিক চার বছর আগে বাতিল করে দিয়েছিলো রস্টারের মায়ের অনুরোধে । তার বাবার মত সেও যাতে না মারা যায় এই ভয়ে । কিন্তু রস্টার পিটকে ভুল বুঝে আছে ।
প্রথম পর্ব থেকে এই পর্বে আসা আরেকটা চরিত্র হচ্ছে আইসম্যান । এই আইসম্যান হচ্ছে পিটের বন্ধু এবং রক্ষা কর্তা । সে পিটকে সকল নিয়ম ভাঙ্গার পরেও রক্ষা করে এসেছে এতো এবং তার বদৌলতেই সে আবার টপগানে পা রাখে । আবার তার সাথে দেখা হয় পেনির । পেনি সাথে আবারও সাখ্যতা গড়ে ওঠে । এভাবেই কাহিনী এগিয়ে যায় । পিট ম্যাভেরিক কি সকল পাইলট ট্রেইনিদের ঠিক মত ট্রেন করতে পারবে? আর সেই মিশন কি সফল ভাবে পূরণ করে আবারও ফিরে আসতে পারবে সবাই ? নাকি এবারও কাউকে মরতে হবে ?
এরপরের কাহিনী আর নাই বলা ভাল । তাহলে হয়তো মুভিটা দেখার আগ্রহ থাকবে না ।
সাধারনত সিকুয়্যায়লের বেলাতে প্রথম মুভিটাই সব থেকে ভাল হয় । কিন্তু আমার কাছে এই মুভির বেলাতে প্রথম টপ গানের থেকেও দ্বিতীয় টপগান মুভিটা আরও বেশি ভাল ছিল । অনেক গুনে বেশি ভাল । কাহিনী এবং সেই সাথে মুভির সকল ক্ষেত্রেই । অবশ্য এটাই তো স্বাভাবিক হওয়ার কথা । ৩৬ বছর আগে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা বিমান আর বর্তমান সময়ের বিমান যদি আমরা তুলনা করি তাহলে কোনটা দেখতে ভাল লাগবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । বিশেষ করে প্লেনের সিন গুলো এতো চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে সেটা প্রশংসা না করে পারা যায় না ! আধুনিক ফাইটার জেট গুলো যেভাবে চলাচল করে, নিমিষেই ঘুরে আবার অন্য দিকে যায় যেভাবে রকেটের হাত থেকে বাঁচে - সব মিলিয়ে পুরো মুভিটা আমার কাছে খুবই চমৎকার লেগেছে !
আপনাদের কাছে পরামর্শ হচ্ছে মুভিটা অবশ্যই হলে গিয়ে দেখবেন । এই মুভি পিসি স্ক্রিন আর বক্সের আওয়াজে কিছুই মনে হবে না । বড় স্ক্রিন আর মাল্টিপ্লেক্সের সাইন্ডে এই মুভিটা সব থেকে ভাল উপভোগ করা যাবে ! সময় করে পরিবার কিংবা বন্ধু বান্ধব অথবা প্রেমিকা নিয়ে মুভিটা উপভোগ করে আসতে পারেন ! সময় ভাল যাবে এই কথা বলতে পারি !
হ্যাপি ওয়াচিং
pic source
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২২ রাত ৯:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



