
অনেকেই দেখি অনেক রকম কথা বলছেন, কিন্তু আসল কথা আসলে কেউ জানেন না। এই জুলাই বিপ্লবের আসল মাস্টারমাইন্ড আসলে আমি। আমিই সব গোপনে শুরু করেছিলাম সেই যখন থেকে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিল, ঠিক সেই সময় থেকেই। আমি আগে থেকেই জানতাম যে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেই প্রথমে বিডিআর বিদ্রোহে করে সেনা অফিসারদের মেরে ফেলবে। তারপর তারা তের সালের হুজুরদের উপরে চড়াও হবে। ভোট চুরি করবে, তারপর এভাবে দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজাবে, অর্থ পাচার করবে তারপর এভাবে মানুষ মেরে ফেলবে । আসলে এই সবই আমি আগে থেকেই টের পেয়েছিলাম। সেই মোতাবেগই আমি প্লান করি। ধীরে ধীরে আগাই। সব বিরোধীদলদের সাথে নিই। তারপর আমেরিকা চীন জাপান ফ্রান্স রাশিয়া সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাই । তারপর সিআইএ, এফবিআই, কেজিবি, মোসাদ আইএসআই এর সাথে আমার হাজার হাজার মিটিং হয়। তারপর আমরা মাঠে নামি এবং শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করি। আমিই আসলে এই বিপ্লবের মাস্টার মাইন্ড !
গাজাখুড়ি মনে হচ্ছে না?
এই গাজাখুড়ি দুই দিন ধরে ফেসবুকে চালু হয়েছে। এখন দেখি এই ব্লগেও এসে হাজির হয়েছে।
এখন বিপ্লব বা গন-অভ্যুত্থান শেষ হওয়ার পর আরও কত থিউরি যে আমাদের সামনে চলে আসবে তার কোন ঠিক নেই। গন-অভ্যুত্থান শেষে এমন ক্রেডিট দেওয়ার-নেওয়ার খেলা শুরু হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ একটা সহজ ব্যাপার ভুলে যায় যে প্লান করে শুধু চোরাগুপ্তা হামলা করা যায়, সরকার প্রধানকে মেরেও ফেলা যায় কিন্তু প্লান করে কোন ভাবেই একটা গন-অভ্যুত্থান ঘটনা সম্ভব না। হ্যা এটা অবশ্য ঠিক গন-অভ্যুত্থান শুরু হওয়াটা কেউঁ প্লান করতেই পারে। কিন্তু সেটা যে সফল হবে সেটা নিশ্চিত ভাবে কেউ বলতে পারে না। পারা সম্ভব না । একটা গন-অভ্যুত্থান সফল হতে হলে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এক সাথে মাঠে নামতে হয়।
এই গন-অভ্যুত্থান ঘটার পেছনে অনেক কয়টি ফ্যাক্টর এক সাথে কাজে দিয়েছে। শেখ হাসিনার দুঃশাসন, অতি আত্মবিশ্বাস এবং একগুয়েমীর তার ভেতরে অন্যতম। সেই সাথে যোগ হয়েছে মানুষের এতোদিনের জমে থাকা ক্ষোভ। এই সবের সংযোগ স্থলে বলা যায় আগ্নেওগিরি তৈরি হয়েছি সেটার বিস্ফোরণ ঘটেছে নিরীহ ছাত্রদের উপরে শেখ হাসিনার পুলিশ যখন গুলি চালিয়েছে তখন। সেটাই শুরু। জাস্ট একবার ভাবুন যে এই আন্দোলনে একজন মানুষই পুলিশের গুলিতে মারা যায় নি । আবু সাইদকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয় নি। ১৭/১৮ তারিখে যে নিরস্ত্র ছাত্রগুলোকে মেরে ফেলা হল গুলি করে সেই রকম কোন ঘটনা ঘটে নি। আপনার কি মনে হয় যে তাহলে গন-অভ্যুত্থানহত? শেখ হাসিনার পতন হত?
গন-অভ্যুত্থান একটা স্বতঃস্ফুর্ত ঘটনা । এখানে একের পর একটা ঘটনা ঘটতেই থাকে। এবং কারো বাপের সাধ্য নেই যে এই ঘটনাগুলোকে প্লান করে একের পর এই ঘটনা গুলো ঘটানো। একাত্তরের কথাই যদি ধরি, পাকি আর্মি যদি প্রথমে ১৯ তারিখে হামলা এবং পরে ২৫ তারিখ নিরস্ত্র বাঙালির উপরে গনহত্যা না করত তাইল শেখ মুজিব কেবল হরতালই দিত আর কিছুই করত না।
গত ১০ বছর ধরে জামাত কিংবা বিএনপি তো কম চেষ্টা করে নি। কিছু ছিড়তে পেরেছিল আওয়ামীলীগের? না আমি মোটেই বলছি না যে এই গন-অভ্যুত্থানে তাদের অবদান নেই। আছে। এই গন-অভ্যুত্থানে সবার অবদান রয়েছে। এটাই তো গন-অভ্যুত্থানের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এখানে সবাই সামনে এগিয়ে আসে। একজোট হয়। এরশাদকেও এমন ভাবেই সরানো হয়েছিল । এখানেও সবাই সব কিছু ভুলে গিয়ে, তাদের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য ঠিক করেছে, যে কোন মূল্য শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে। এটাই সব থেকে বড় মাস্টার মাউন্ড । শেখ হাসিনার পতন।
একটু আগে দেখি এক বলদে আবার এই গন-অভ্যুত্থানের পেছনে আইএসআইয়ের হাত খুজে বের করেছে। এক্সপায়ার্ড বয়সে নিয়মিত গাজা খাওয়ার ফলেই আসলে এই টাইপের চিন্তা ভাবনা মানুষের মনে আসে। অবশ্য খেয়ে দেয়ে যেখানে কোন কাজ কর্ম নেই সেখানে এমন চিন্তা আসাটা অস্বাভাবিক না।
আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে এদেশের উপরে আসন গেড়ে বসেছিল তাকে হটানো কোন একক গ্রুপের পক্ষে সম্ভব ছিল না। কেবল মাত্র সকলের সম্মিলিত চেষ্টাতেই এই পতন সম্ভব হয়েছে। এই কথাটা আমরা যেন ভুলে না যাই।
pic source
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



