
আজকের প্রোপোজ ডে উপলক্ষে আমার প্রথম প্রোপোজের গল্প
আমার জীবনে ব্যর্থতার শেষ নেই। তবে জীবনের একেবারে শুরুর ব্যর্থতা ছিল প্রথম ভালোবাসার প্রস্তাবে ব্যর্থ হওয়া। আমি কোন দিন ভাবতেও পারি নি এই ব্যাপারটা আমার সাথে ঘটবে।
সেই সময়ে আমি স্কুলের দশম শ্রেনীতে পড়ি। আমি বরাবরই নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার পাব্লিক। স্কুল ফাঁকি দিতাম না। তবে এই সময়ে স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ আগের থেকেও অনেক বেশি ছিল। আমাদের স্কুল ছিল কম্বাইন স্কুল । তবে সেখানে ছেলে আর মেয়েদের ক্লাস আলাদাই হত। কেবল ক্লাস টেনে ওঠার পরে ছেলে মেয়েরা এক সাথে একই ক্লাসে বসে ক্লাস করত। আসলে আসলে এই কম্বাইন স্কুলে পড়ে নাই তারা এই আনন্দের কথা কোন দিন বুঝতেও পারবে না। সেই বয়সে এই ব্যাপারটাই অন্য রকম ছিল।
আমার ক্ষেত্রে আনন্দের আরেকটা কারণ ছিল যে আমি যে মেয়েটাকে সেই সেই ক্লাস সেভেন থেকে পছন্দ করে এসেছি সেই মেয়েটা এখন আমার সাথে একই ক্লাসে বসছে নিয়মিত। এই যে সকাল দশটা থেকে বিকাল চারটা পছন্দ পছন্দের মানুষটাকে চোখের সামনে দেখতে পাওয়ার ব্যাপারটা, এটা সত্যিই চমৎকার একটা ব্যাপার ছিল। সেই সময়ে এই অনুভূতির কোন তূলনা ছিল না।
ক্লাসে যেমন নানান রকম গ্রুপ থাকে আমাদের ক্লাসেও ছিল। আমরা কয়েক জন সব সময় এক সাথে বসতাম। গল্প করতাম। একই ভাবে মেয়েদের মাঝেও গ্রুপ ছিল যারা একই সাথে বসত আড্ডা দিত। ঘটনা ঘটল যখন আমাদের গ্রুপের একটা ছেলে ঐ মেয়েদের গ্রুপের একটা মেয়ের সাথে প্রেম শুরু করে দিল। এই ব্যাপারটা কিভাবে হল আমি জানতে পারি নি। একদিন আমার সেই বন্ধুই আমাকে জানালো যে ক্লাসের ঐ মেয়েটার সাথে তার একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমি তো শুয়ে আকাশ থেকে পড়লাম। সেই সাথে আমার মনে একটা অনুভূতি এসে জড় হল । এই অনুভূতির নাম কী আমি জানি না।
আমি তখনই আমার এই পছন্দের কথা স্কুলের কাউকেই জানাই নি। এমন কি আমার কাছের বন্ধুদেরও না। কিন্তু যখন আমার এই বন্ধু ঐ মেয়েটির বান্ধবীর সাথে প্রেম করে ফেলল তখন আমারও ইচ্ছে হল যে যদি আমিও এই রকম একটা কিছু করতে পারতাম! একদিন সেই বন্ধুকে জানিয়েও ফেললাম যে ঐ মেয়েটিকে আমার অনেক দিন ধরেই পছন্দ। তবে এটা নিয়ে আমি আর কোন ইচ্ছে পেষণ করি নি।
সপ্তাহ খানেক পরে ঘটলো আচানক ঘটনা। আমার সেই বন্ধু সাথে আরও একজন বন্ধু মিলে আমাকে জানালো যযে আমার পছন্দের মেয়েটি পছন্দ করে । আমি যযদি তাকে ভালবাসার প্রস্তাব দিই তাহলে সে রাজী হয়ে যাবে। এই কথা সে নিজের মুখেই নাকি বলেছে। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। বুকের মাঝে এক আনন্দের বাতাস বইতে থাকল। তারপর সত্যিই বন্ধুদের পরামর্শ একদিন স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে সেই মেয়েটির কাছে ভালবাসার প্রস্তাব সূচক ছোট একটা চিঠি পাঠিয়ে দিলাম। আমার সেই দুই বন্ধুই সেটা নিয়ে গেল। আমি তো নিশ্চিত ছিলাম যে আমার ভালোবাসার প্রস্তাব গৃহীত হবে। আমাকে তো এমন কথাই জানানো হয়েছে।
কিন্তু আমি আকাশ থেকে পড়লাম যখন জানতে পারলাম যযে মেয়েটি জানিয়েছে সে এখন এসবের ভেতরে যাবে না । আমার চিঠি আর রুমাল সে ফেরত দিয়ে দিয়েছে। অথচ আমার বন্ধুরা আমাকে নিশ্চিত করেছিল যে মেয়েটি নাকি বলেছে আমি প্রস্তাব দিলেই সেই প্রস্তাব সে গ্রহন করবে। পরে আমি জেনেছিলাম যে মেয়েটি আসলে এমন কোন কথাই বলে নি। আমার সেই বন্ধু দুইজন আমাকে খানিকটা ধোকা দিয়েই এই কাজ করিয়েছিল।
এই হচ্ছে আমার জীবনে প্রথম প্রেমের প্রস্তাবের ব্যর্থতার গল্প।
এখানে দুইটা কথা বলে রাখা ভাল। সেদিন স্কুলের ছুটির আগেই মোটামুটি এই কথা প্রথমে ক্লাস এবং পরে স্কুলে ছড়িয়ে পড়লো যযে আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম এবং ছ্যাকা খেয়েছি। আর এর ঠিক মাস দুয়েক পরে এই মেয়েটিই আমার প্রেমিকা হয়েছিল, মানে আমার প্রস্তাবে সে রাজি হয়েছিল।
ছবিটি এআই দিয়ে বানানো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


