somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃত্যুপুরীর মৃত্যু মিছিলের দায়ভার কারঃ কবে থামবে এই মৃত্যু মিছিল

২০ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মৃত্যুর মিছিল ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে । সড়ক আর মহাসড়ক সব জায়গাতেই এখন মৃত্যু ফাদ পেতে আছে । দুই লেনের রাস্তা চার লেন করেও ঠেকানো যাচ্ছে না এই মৃত্যু মিছিল । এর দায়ভার কার? কে নেবে এর দায়ভার? কি কারনে এত এত মৃত্যু আমাদের দেখতে হচ্ছে । কোথায় সমস্যা । নাকি আমরা নিজেরাই সমস্যা ।

হ্যা, আমরা নিজেরাই সমস্যা । আমাদেরই সমস্যা । তবে আমরা সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাই এত বেশি যে বাংলা প্রবাদের মত অধিক সন্নাসীতে গাজন নষ্ট এর মত অবস্থা দাঁড়ায় । সত্যি বলতে আমরা হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা অনেক বলতে পারি । কিন্তু সময় হলে কাউকেই আর পাওয়া যায় না ।

এসি রুমে বসে বড় বড় বুলি আওড়ে কিছুই হয় না । দেশ পরিবর্তনের জন্য নিজেকেই দায়িত্ব নিতে হয় । নিজেকে আগে শুধরাতে হয় । নয়ত মুখের কথা মুখেই থাকা ভাল । সেটা মানুষকে না শোনানোই উচিত ।

গত বছর ছাত্ররা আন্দোলন করেছে শেষ পর্যন্ত সেটা অন্য দিকে মোড় ঘুড়িয়ে দেয়া হয়েছে । আর বাহিনী তো একটা আছেই । ক্ষমতা থাকার জন্য সেটা দরকার । নয়ত গদি চলে গেলে কেউ খবর ও রাখবে না । তারপরও কি ছাত্রদের দাবিটা অযৌক্তিক মনে হয়েছে । তাদের উপর লাঠি চালাতে একটু কাপেনি হাত ।

আমার মনে পরে আমি তখন অফিসের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম যখন ছাত্রদের পেটানো হচ্ছিল । সবাই দৌড়ে পালাচ্ছে যে যেদিকে পারেছে পালিয়েছে । হেলমেট মাথায় দাড়িওয়াল আংকেল যখন তার ছেলেমেয়ের বয়সীদের উপর লাঠি চার্জ করছে তখন শুধু মনে হয়েছিল তার ঘরে কি সন্তান নেই । নাকি তিনিও আছেন ধান্ধায় ।

আমি রাজনীতি কখনই বুঝতে চাইনি । আমার বাবা সাসপেন্ড হলো তখনও বুঝতে চাইনি । তারপরও কখনও একবারের জন্য মনে হয়নি বাংলাদেশ পরিবর্তন হবে না । আশায় থেকেছি । একদিনের জন্য হলেও একটা সুন্দর বাংলাদেশ দেখব ।

এই মৃত্যু পুরীতে ভয় লাগে । আজ ঘর থেকে বের হলে কেউ বলতে পারে না সে আর ঘরে ফিরবে কিনা । অজানা আতঙ্ক সব সময় যেন পিছু লেগে থাকে । আপনি রাস্তায় যে কাউকেই জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন । দিন শেষে যখন সবাই বাসায় ফেরে তখন একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার পর আবার পরবর্তি দিনের ভয় শুরু হয়ে যায় ।

তাহলে আজ কি মানুষের জীবনের মুল্য মুল্যহীন । আপনাদের জীবনের মুল্য আছে সাধারন মানুষের জীবনের নেই । নাকি ভিআইপিরাই শুধু থাকবে বাকি সব চুলোয় যাক ।
মৃত্যুর আগে ব্যবস্থা নিতে হয় । মরার পর তার নামে সড়ক ব্রিজ দিয়ে কি হবে । মানুষটাকে কি ফেরত আনতে পারবেন । পারবেন বাবা মায়ের বুকে সন্তান কে ফিরিয়ে দিতে । পারবেন সন্তানকে বাবা মায়ের কাছে ফেরাতে ।

সিস্টেম সিস্টেম বলে চিৎকার করলেই সিস্টেম বদলানো যাবে না । আমি আপনি চাইলেও সিস্টেম বদলাবে না । বদলানোর দায়িত্ব নিতে হবে । কিন্তু এখানেই সবাই ভুল করে থাকে । কারন তখন নিজের কথাই মানুষ বেশি ভাবে । কি দরকার আমার ঝামেলায় যাওয়ার । তাই না ঝামেলা মনে হয় । তাহলে সেই ’৪৭ এরপর থেকে যত আন্দোলন হয়েছে সেগুলো না হলেই পারত । বাংলাদেশের জন্ম না হলেই ভাল হতো ।

আমাদের পুরো সিস্টেম ঘুনে ধরা । এর জন্য দায়ী তো আমরাই । আমরা একে ঘুনে ধরিয়েছি । আমরাই একে পচিয়েছি । আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য । নিজেদের জন্য । সিস্টেম একা দায়ী নয় । দায়ী আমরা । গালি দেবার আগে ভেবে দেখুন তো একবার ।

আইন তো সবার জন্য সমান । যে ছেলেটি আজ মারা গেলো সেও কিন্তু আইন মেনেছে । কিন্তু চালকের ব্যাপারে আইন কি করেছে । বাঙ্গালদেশের পরিবহন সেক্টর কতটা অসহায় সেটা কাছ থেকে দেখলে বুঝতেন । এখানে টাকা আর পেশি শক্তি কতটা প্রবল সেটা তো গত বারই দেখেছেন । তারা চাইলেই পারে । আর আমরা জনতা তাদের কাছে জিম্মি । সত্যিকার অর্থেই জিম্মি ।

আবার দুপুরে অফিসে বসে একটা ভিডিও দেখলাম । বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি ওভার পাসের নিচের । মানুষ জন কত দক্ষতার সাথে রাস্তা পার হচ্ছে । সার্কাসের এক্রোব্যাটরাও তাদের কাছে নস্যি । রডের ভেতর দিয়ে একে বেকে বের হয়ে আসছে । যেন বাইন মাছ । আমরা বাঙালিরা সত্যি পারিও বটে । পুলিশের কথাও অমান্য করেছে । ভিডিও কারি কে আঙুল দেখিয়ে শাসিয়েছে । কিন্তু বাসায় যেয়ে ঠিক ই বলবে শালার পুলিশরা কোন কাজের না । রাস্তায় এক্সিডেন্ট হইছে চোখে দেখে না । সব দোষ পুলিশ আর বাস চালকদের ।

আমরা আইন না মানলে দোষ নেই । তাহলে আইন সবার জন্য সমান হতে পারবে না । আলাদা আলাদা আইন হবে ।

আমি বলছি না যে সব দোষ জনগনের । আবার এটাও বলছি না আমাদের দেশের চালকরা খুব দক্ষ এবং শিক্ষিত । তারা রাস্তায় কোন কিছুই পরোয়া করে না । এর সাহস তারা কোথায় পেয়েছে । অবশ্যই বিচারহীনতাই এর জন্য দায়ী । কত গুলো দুর্ঘটনার বিচার আমরা দেখেছি । সব কিন্তু ফাইলের উপর চাপা পরে আছে ।

আমাদের আসলে কি দরকার আমরা নিজেরাই জানি না । তবে যেটা দরকার তা হলো, স্কুল শিক্ষকদের মত বেতের বাড়ির উপর রাখা ।

আশা রাখি এই দুর্ঘটনার বিচার হবে ।

শেষে একটা জোকস বলি,

কোর্টে মামলা চলছে এক দুর্ঘটনার উপর । দুই উকিলের কথোপোকথন,

১ম উকিলঃ মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল ৩০ বছর ধরে গাড়ী চালাচ্ছে । তার পক্ষে দুর্ঘটনা ঘটানো অসম্ভব ।

২য় উকিলঃ মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল ৪০ বছর ধরে হাটিয়ে । সে ৪০ বছর ধরে হাটছে । এমন দক্ষ হাটিয়ের পক্ষেও দুর্ঘটনা ঘটানো অসম্ভব ।

ভাল থাকুন । সুস্থ থাকুন । নিরাপদে থাকুন । আপনার চারপাশ পরিস্কার রাখুন ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০১
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×