রোজার মধ্যে সাইকেলটা কিনেছি । তারপর থেকে সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাওয়া আসা হয় । যদিও গরমে এটা একটা চ্যালেঞ্জ তারপরও জ্যামের মধ্যে বসে থাকার চেয়ে ঢের ভালো ।
স্কুলে থাকতে সাইকেল চালিয়েছি । আবার কলেজেও । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সময় থেকে চালানো হয়নি । কিন্ত ঢাকা শহরে সাইকেল চালানো একটা যুদ্ধ জয়ের মত ই ব্যাপার । কয়েকটা ঘটনা শেয়ার করছি ।
ঘটনা - ১
ধানমন্ডি শংকর । আমি সাইকেল একদম আস্তে চালাই । বলা যায় মনের সুখে রাইডের মজা নেয়া । কিন্তু হঠাৎ পিছন থেকে দু পাশ দিয়ে দুটো রিকশা চলে আসে । আমি সাইকেলের ব্রেক চেপে আমার সাইকেলটা আরও স্লো করে দিলাম । কিন্তু আমার ডান পাশ থেকে যেই রিকশা ছিল সেটা চেপে আসে ।
আমাকে একটা ব্রেক করতে হয় । আমি চাকার ঘষার শব্দ পেলাম । আর বাম পাশেরটা আমার বামে দাড়িয়ে পরে একদম পায়ের কাছে । মেজাজ অনেক গরম হয়ে যায় । কিন্তু কিছুই হয়নি এমন ভাব করে দুই রিকশাওয়ালি আমার দিকে না তাকিয়ে নিজের মত চলে যাচ্ছিল ।
আমি সাইকেল টেনে ডান পাশের রিকশার সামনে নিয়ে দাড় করাই । রিকাশায় একজন ভাই বসা উনি সরি বলেন । কিন্তু আমি তো ওনার সরি নেবো না । রিকশাওয়ালার গরম দেখে তো আমার মনে হলো দোষ সব আমার । নিজেকে শান্ত করে আস্তে করে বললাম আমি তো তোমার লেভেলে নামতে পারি না । তাই কিছু বললাম না । অন্য কেউ হলে তোমার খবর করে ছেড়ে দিতো ।
ঘটনা - ২
এটা অবশ্য কি বলব বুঝতেছি না । আমি সাইকেল কেনার পর থেকে ফুটপাতে সাইকেল চালাইনি । হ্যা সাইকেল থেকে নেমে সেটা ফুটপাতে উঠিয়ে ঠেলে নিয়ে গিয়েছি ।
তো আমি সেদিন অফিস থেকে ফিরছিলাম । বাটা সিগনাল থেকেই জ্যাম । আমি বাম পাশ ধরে ধীরে ধীরে সামনে যাচ্ছি । আমার পিছনে এক সাইকেল ওয়ালা ভাই এসেই আমাকে ঢাকা দিচ্ছে ভাই সামনে যান । ওই ফাকে যান । আমি চুপ করে ছিলাম ।
এক পর্যায়ে আর সহ্য হলো না । বললাম ভাই আপনার এত জলদি আছে পেটে কি সমস্যা নাকি । ডায়েরিয়ে হয়েছে ? স্যালাইন আনি । সে চুপ করে গেলো । তারপর দেখি ফুটপাতে সাইকেল উঠিয়ে দিয়েছে । তারপর চালিয়ে যাচ্ছে । আমার সামনে এক বাইক ছিল । উনি বললেন ভাই আপনিও যান ।
আমি বললাম ও গাধা বলে কি আমিও গাধা হবো নাকি । জ্যাম ছাড়লো আমি সামনে এগিয়ে যেতেই মাল্টিপ্ল্যান এর আগে দেখলাম এক বয়স্ক আংকেলের সাথে ফুটপাতে দাড়িয়ে ঝগড়া করছে । মুচকি হেসে পার হয়ে গেলাম ।
ঘটনা - ৩
এটা ধানমন্ডি ১৫ এর ঘটনা । আমি সাইকেল কেনার সাথে সাথে একটা মিউজিক হর্ন কিনে নিয়েছি । যাতে কেউ বলতে না পারে বেল ছাড়া বা হর্ন নাই । আমার ঘাড়েই দোষ চাপাবে ।
তো ওইদিন আমি আস্তেই চালাচ্ছিলাম । ধানমন্ডির ১৫ এর ঠিক আগে একটু ফাকা থাকাতে আমি একটু ফাস্ট চালালাম । আমি হর্ন ধরেই চালাচ্ছিলাম । এক লোক সম্ভবত রাস্তা পার হবেন । আবার নাও হতে পারেন একবার সামনে পিছনে করছেন ।
উনি আবার সোজা দিকে তাকিয়ে আছেন । আমি মোঃপুরের দিকে যাচ্ছিলাম । উনিও ওইদিকেই তাকিয়ে আছেন মানে ওনার পিছনের দিক থেকে কি আসছে তার তা খেয়াল নেই ।
আমি হর্ন চেপে ধরলাম । আমার পাশে গাড়ি । তাই ডানে যাওয়া যাবে না । হর্ন অনেক দূর থেকেই শোনা যায় । কিন্তু তার মনে হয় দিপীকা পাড়ুকোনের কথা মনে আসছিল । তাই চোখ বন্ধ করে ভাবনায় ডুবে ছিল । আমি একদম ওনার পিছনে গিয়েও হর্ন চেপে ধরে আছি ।
উনি খুব স্লো-মোশনে মানে মনে হচ্ছে যেন তিনি নায়ক নায়িকার কোন দৃশ্যপটে আছেন, সেভাবে পিছনে ফিরে বললেন এত হর্ন দেন কেন । আমি বললাম যাদের কান থাকতেও চিলের পিছে ছুটে চলে তাদের কানের মধ্যের পোকা বের করে দেয়ার জন্য ।
মেজাজ এত খারাপ হয়েছে । আরে ভাই এত হর্ন শোনার পর কি সাইডে যাওয়া যায় না । রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে কি করে ।
আরও কিছু আছে । পরে লিখব ।
ভাল থাকুন । সুস্থ থাকুন । গাছ লাগান । আপনার চারপাশ পরিস্কার রাখুন ।
#রাস্তা_ঘাটে_চলতি_পথে_৩
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৪৩