ঈদ থেকে এই পর্যন্ত কত গুলো বই শেষ করেছি বলতে পারব না । বলা যায় অনেকটা গতিতেই পড়েছি । তবে আবার এত দ্রুত না । আসলে অনেক গুলো বই জমে গিয়েছে বলেই একটু তাড়াতাড়ি পড়েছি । কিন্তু রিভিউ লিখিনি । আজ একটার লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে ।
বইয়ের নাম হচ্ছে নিঃশব্দ শিকারী, লেখক জুলিয়ান । বইয়ের নাম শুনে প্রথমে ভেবেছি যাক ভাল একটা থ্রিল পাওয়া যাবে । যদিও আমি বইয়ের উপর কোন রকম আশা রাখি না । চেষ্টা করি সব সময় একদম শান্ত মন নিয়ে বই পড়ি । মাথায় কিছুই নেই না তখন, কারন বইয়ের প্রতিটি অক্ষর তখন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন ।
তাই বইটির একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছি । খুব মনোযোগ দিয়ে । বইয়ের কাভার দেখে মনে হয়েছে বইটি কিছুটা বড় হবে । সেটা নয় মাত্র ১১২ পৃষ্ঠার একটা বই । বইয়ের শুরুতেই একটা বিশাল ভূমিকা । সেখানে লেখক তার কর্মযজ্ঞের বর্ননা দিয়েছেন । এই বই লেখার পিছনের গল্প বলেছেন । তবে এখানেই গোলমাল শুরু ।
তিনি এই বইটির চেয়ে তার একটা স্বপ্নের কথা বলেছেন বই নিয়ে । তিনি অন্য একটি বই লিখছেন যেটা তার স্বপ্নের প্রজেক্ট । এভাবেই তিনি বর্ননা করেছেন । তখন ই প্রশ্ন আসল তাহলে এই বইটি তিনি কি শুধু শুধু এমনি লিখেছেন । খেয়ালের বসে লিখে ফেলেছেন আস্ত এক থ্রিলার। বাহ ভাবা যায় ।
যাইহোক ভুমিকা শেষ করলাম । এরপর বই শুরু । গল্পের একটা ছোট অংশ দিয়ে বইটি শুরু হয়েছে । কিন্তু সেখানে কাহিনী কিছুটা ঘোলাটে । যাইহোক রহস্যের বই এটা তো হবেই । তবে তিনি আমাজনের কথা বলেছেন এই রহস্যময় জায়গাতে, সেখান থেকে সোজা চলে এসেছেন বাংলাদেশে । এটা কোন সমস্যা নয়, তবে বাংলাদেশে এসেই খুন করে দিলেন একজন ব্যবসায়ী কে । সেটার তদন্তের জন্য ঢাক পরল এক শখের গোয়েন্দার ।
আর এখানেই ভুলটা করলেন । এত বড় ব্যবসায়ী খুন হলে মিডিয়া জানবে কিন্তু মিডিয়া জানলো না । আচ্ছা বাদ দেই মিডিয়া জানলী না, শখের গোয়েন্দাদের সাহায্য নিল পুলিশ । ছোটখাটো কেসে মানা যায় । যাইহোক এই গোয়েন্দা আগেও পুলিশ কে অনেক সাহায্য করেছে । তাই তার ঢাক । সেই গোয়েন্দার সাথে আবার তার এক সহকারীও আছে । তবে সেই সহকারী আবার শুধু নাম মাত্র তার কোন রোল নেই বললেই চলে ।
সেই শখের গোয়েন্দা গেলো ব্যবসায়ীর বাড়ি ঘর দেখতে । ক্ল খুজতে খুজতে পেয়ে গেলো । একদিনেই মাথায় কেস সলভ । এতো সিআইডির অফিসারদের প্রধান হবার যোগ্য ।
একটু পিছনে ফিরে যাই । বলে ছিলাম আমাজনের কথা । সেখানে কি রহস্য আছে বা কিভাবে সেখান থেকে লোকজন ফিরে এসেছে সেটা তিনি বর্ননা করেনি । একটা ঘোলেটে অবস্থা রেখে দিয়েছেন । গল্পের সিকুয়েন্স একদম নেই বললেই চলে । কিভাবে তিনি বইটি শেষ করেছেন সেটা তিনি ই ভাল জানেন ।
সত্যি বলছি, তিনি থ্রিলার লিখেছেন কিন্তু থ্রিলার নিয়ে আগে কোন গবেষনা ই করেনি । এটা আমার মত, কারন থ্রিলারের টানটান উত্তেজনার দরকার নেই আপনি যদি কাহিনীতে টুইষ্ট দিতে পারেন । লেখক সত্যি একটা দারুন প্লট পেয়েছিলেন । এখানে দুর্ভাগ্যটা কার সেটাই ভাবছি । মনে হয় আমার । নয়ত এই বই আমার সামনেই পরবে কেন ।
বইয়ের আরও একটা বিষয় খারাপ লেগেছে । এর লেখার ফ্রন্ট । মনে হয়েছে পৃষ্ঠা বাড়ানোর জন্য ফ্রন্ট বড় বড় করে লেখা হয়েছে । যেটা একদম বেমানান । জানি না প্রকাশনী বা প্রকাশক কি ভেবে এই ফ্রন্ট ব্যবহার করেছেন । তবে সত্যি বলতে নতুন হিসেবে লেখক যেটা চেষ্টা করেছেন সেটা হয়নি । তিনি চাইলে আরও সুন্দর করে গোছাতে পারতেন । কেন জানি মনে হচ্ছে তাড়াহুড়ো করে লিখেছেন ।
সবশেষে বলব, আমি বই বোদ্ধা নই । আমার কাছে যা মনে হয়েছে সেটাই আমি বর্ননা করেছি ।
#হ্যাপি_রিডিং
বইঃ নিঃশব্দ শিকারী
লেখকঃ জুলিয়ান
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৯ রাত ১:০৭