অফিসের বের হয়ে সাইন্সল্যাবের জ্যামে পরলাম । এই জ্যাম খাওয়া যায় না, না হলে একটু টেস্ট করতাম । ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলাম । পথে অফিসের এক কলিগ পেলাম উনি মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে । তাই ওনার সাথে মজা নিলাম । ওনার সামনে সাইকেল নিয়ে দাড়িয়ে গেলাম৷
ছোট জায়গাতে আগে আমি গেলাম আগে উনি পেছনে রইলেন । যদিও জ্যাম ছাড়ার পর উনি গেলেন ঝিগাতলার দিকে আমি চলে আসলাম কলাবাগানের দিকে । কিন্তু জ্যাম পিছু ছাড়ে না । তবে টেল লাইটের অভাব বোধ করেছি । সামনের মাসেই নিব ।
এবার আসি, পরের জ্যাম কলাবাগানেই লাগল । সেটা যাইহোক আমার দু পাশে তো স্পোর্টস বাইক সামনে কি বাইক ছিল মনে নাই । পেছনে বাইক পুরো ভিআইপি অনুভূতি । সুখ কপালে সয় নাই । জ্যাম ছেড়ে দিলে কে কার আগে যাবে সেটা নিয়ে লড়াই দেখলাম ।
সোবাহান বাগ পার হচ্ছিলাম তখন দুই বাইকার দেখালাম পাঠাও নিয়ে কথা বলছে । ভাই এখন ক্ষ্যাপ মেরে তার আয় চলছে না । আমি বললাম, ভাই একটা বাইকে হবে না এই বাইকের সাথে আর একটা বাইক লাগিয়ে নিন । তাহলে আয় ভাল হবে । আমার এডভাইজ ভাইয়ের পছন্দ হয় নাই । উনি ছো করে চলে গেলেন ।
আমি আর আমার স্পঞ্জবব(আমার সাইকেলের নাম) পরে রইলাম পেছনে । এবার ধীরে ধীরে সংসদের সামনে এসে দেখলাম লোকজন শীতের মধ্যেও আড্ডা দিচ্ছে । বাহ শীতে শেষ হয়ে আসতেছে । এখনই এটা উপভোগ করতে হবে৷
এবার চলে আসলাম খামার বাড়ির রাস্তায় । তবে জ্যাম পিছু ছাড়বে না । তিনি লেগেই থাকবেন সুপার গ্লু এর মত । আমিও দাড়িয়ে পরলাম । কয়েকজন ফুটপাতে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন । আমার পাশে দাড়ানো বাইকার ভাই আমাকেও বললেন, যে আপনিও যান । আমি কিছু বলি নাই । মাথা দুলিয়ে ভাবলাম । তারপর ওই জায়গাতেই বসে রইলাম ।
এরপর চার বারের প্রচেষ্টায় চন্দ্রিমা উদ্যানের রাস্তায় আসলাম ।
ফাকা ফাক দেখে ভাবলাম আহা লোকজন সন্ধ্যার আগেই বাসায় চলে গিয়েছে । কিন্তু না অন্ধকারে চোখ সয়ে আসার পর দেখলাম শীত উপেক্ষা করেও লোকজন স্বস্তফূর্ত ভাবে আড্ডা দিয়ে যাচ্ছে । আমি একা একা রাইড করছি । সে যাই হোক ।
সাইকেল নিয়ে দাড়ালাম । দুটো ছবিও তুললাম । এবার কিছু খেতে হবে । আজই খাচ্ছি কিন্তু এটা শেষ নয় আরও আছে ।
পেয়ারা বানিয়ে খেলাম । ভালই মজা । ঝাল একটু বেশি । এই রাস্তায়ও জ্যাম লেগেছে এটা ভেবে স্বান্তনা পাচ্ছিলাম । এবার বাড়ি ফেরার পালা । সাইকেল ছুটিয়েছি মোঃপুরের উদ্দেশ্যে । আবার সেই জ্যাম । এবার জ্যামের মধ্যে দেখলাম এক ভাই সাইকেল চালিয়ে নিজের কসরত দেখাচ্ছেন। মানে চিপা চাপ দিয়ে এগিয়ে চলেছেন । তার মোবাইলে আবার ভিডিও গান চলছে । সামনে হেড লাইট, আর পেছনে চিকিমিকি লাইট জ্বলছে ।
ভাবলাম আমিও এমন চিকিমিকি লাইট লাগাবো । আরও ভাল করে খেয়াল করলাম ভিডিও থেকে সাউন্ড আসছে না । পরে দেখলাম উনি হেডফোন কানে গুজে রয়েছেন । অনেক কসরতের পর কিছুটা সামনে গিয়েছেন কিন্তু সিগনাল পার হতে পারেননি । অনেক দুঃখ পেয়েছি আমি । এত কষ্টের পরও জ্যাম পার হতে পারেননি । এ দুঃখ নিয়ে আমি কোথায় যাবো ।
জ্যাম ছাড়লো সবাই ধীরে ধীরে পার হচ্ছে কিন্তু না উনি ধুম ১৩ এর মত উড়াল দিতে চেয়েও পারেননি । আমিও আস্তে আস্তে চালিয়ে বাসায় চলে আসলাম ।
এই ছিল জ্যাম কথা । আজ যাচ্ছি, আবার কবে আসব জানি না । দেখা হবে পরের পর্বে । সে পর্যন্ত ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০০