
বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি আরও যাবে৷ একটা ভঙ্গুর সিস্টেম কোন দেশের কাঠামো হতে পারে না৷ ঘুণে ধরা সিস্টেমের অংশ হিসেবেই বেচে আছি।
আজ আব্বু সকাল হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পরে৷ আমি অফিসের কাজে তখন পূর্বাচল। সেখান থেকে সোজা হার্ট ফাউন্ডেশনে চলে এলাম। দেখি ভর্তি নিয়েছে৷ বেশ ভালো অবস্থা তখন কিছুটা স্বাভাবিকের পর্যায়ে আছে৷ তো ডাক্তার তার পুরাতন ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দেখে চাইলেন। আবার বাসায় দৌড়ালাম।
বাসা থেকে পুরাতন ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আবার হার্ট ফাউন্ডেশন। কিন্তু যেয়ে দেখি ভর্তি ক্যান্সেল। কেন? কারণ আব্বু মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তো আগে সিটি স্ক্যান করতে হবে তারপর তার চিকিৎসা শুরু হবে। উনি হার্টের রোগী। চারটা রিং পড়ানো। কিন্তু সিটি স্ক্যান ছাড়া ওয়ার্ডে রাখা যাবে না৷
তো এটা জরুরী বিভাগের ডাক্তার কি ঝাক মারার জন্য বসে ছিল। তিনি এই ব্যাপারটা খেয়াল কেন করেনি। আমার রোগীর অবস্থা তো নেয়ার পর তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাহলে ভর্তি করাতে কেন বললেন।
যাইহোক এরপর আবার ভর্তি ক্যান্সেল করে সিটি স্ক্যানের জন্য গেলা নিউরো সায়েন্স। কারণ হার্ট ফাউন্ডেশনের সিটি স্ক্যানের মেশিন নাকি নষ্ট বা তাদের এই মেশিন নেই৷ দুটোর যেকোনটা হতে পারে। আমি সঠিক ভাবে খোজ নেয়ার সময় পাইনি।
তারপর গেলাম নিউরো সায়েন্স। সেখানে টিকেট কেটে ডাক্তার দেখালাম। এরপর সিটি স্ক্যানের জন্য কাগজ জমা দিলাম। সিরিয়াল আসবে ভেবে বসে রইলাম। কিন্তু সিরিয়াল আর আসে না৷
এক ঘন্টা ধরে ধৈর্যের পরীক্ষা দিলাম। তারপর পারলাম না সিকিউরিটি যিনি কাগজ জমা নিয়েছেন তাকে হালকা ভাবেই ঝেড়ে দিলাম। কারণ আমার রোগী জরুরী ভিত্তিতে নিয়ে এসেছি৷ অথচ ওনাদের পরিচিত ও ভর্তি রোগীদের সিরিয়াল যাচ্ছে কিন্তু আমাদের সিরিয়াল আসে না৷
সিকিউরিটি গার্ড বলল ভিতরে কথা বলেন। গেলাম ভিতরে বললাম এক ঘন্টা ধরে আমি আমার বাবা কে নিয়ে অপেক্ষা করছি। প্লিজ আমাদের সিরিয়াল দিন।
তখন যেয়ে তাদের টনক নড়ল। সাথে সাথে আব্বুকে ভিতরে নিয়ে গেল। সিটিস্ক্যান শেষ করে আবার হার্ট ফাউন্ডেশন।
এখনও শেষ হয়নি। জানি না আবার ভর্তি করাতে বলবে নাকি। আপাতত জানি এই ভঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থা বাংলাদেশের জনগণের জন্য৷ এখানে যাদের টাকা আছে তারা ভালো চিকিৎসা পাবে।
কারণ তারা চলে যাবে বাইরে৷ কোথায় যাবে সেটা সবাই জানে৷ তারা দেশে জনগণকে বলবে আমি দেশেই মরতে চাই, কিন্তু যখন সময় আসে তখন তারা ওই জায়গাতেই দৌড় দেয়৷
ভঙ্গুর এই চিকিৎসা ব্যবস্থা শুধু মাত্র সাধারণ জনতার জন্য। আর এভাবেই চলতে থাকবে আজ, কাল ও পরশু৷
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




