somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমরত্বের সন্ধানে সাম্ভালার যাত্রা – প্রথম পর্ব (রিভিউ)

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ বেচে থাকতে চায়। অনেক বছর হাজার বছর। তাদের মধ্যে এই প্রবণতা আদি যুগ থেকেই রয়েছে। তারা সব সময় অমরত্বের পেছনে ঘুরেছে। মানুষ চায় পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত বেচে থাকতে। আদৌ কি সম্ভব। অমরত্ব পাওয়া কি খুব সহজ। এলিক্সিসর অফ লাইফ যদি সত্যি থেকে থাকে তবে মানুষ কেন আজও এর সন্ধান আবিস্কার করতে পারেনি। কেন আজও মানুষ অমরত্বের স্বাধ পায়নি।

সম্প্রতি পড়ে শেষ করেছির শরীফুল হাসানের সাম্ভালা ট্রিলজির “সাম্ভালা – প্রথম যাত্রা”। কিছু দিন ধরে বইটি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় নিয়ে অনেকের দ্বিমত রয়েছে। মুলত সব কিছু মিলিয়ে বইটি পড়ার সিদ্ধান্ত নেই। তাই প্রথম পর্ব পড়া শেষ করলাম। ভাবছি তিনটি বইয়ের আলাদা আলাদা রিভিউ দেব। সবশেষে একটি বিস্তারিত আলোচনা দেয়ার ইচ্ছে আছে। সম্ভব কিনা জানি না।

বইটির কাহিনী সংক্ষেপ করে যদি বলি সেটা কে স্পয়লার ফ্রী করে বলতে হবে। যদিও সেটা বেশ কষ্ট সাধ্য। তবে মুল কাহিনীর প্রোটগনিস্ট আসলে একজন নয়। কয়েকজন বলা যায়। তবে আমরা দুজন কে ধরে এগিয়ে যেতে পারি।

কাহিনীর সংক্ষেপে বলা যায় একটি বই ও তাকে ঘিরে রহস্যের জমাট বাধা। সেই বইটিতে আছে পুরো পৃথিবীর এক অপার রহস্য। এই রহস্য ভেদ করতে পারলে মানুষ হয় ধ্বংস হবে নয়ত মানুষের কল্যান হবে। কিন্তু মানুষের স্বভাব হচ্ছে ধ্বংসের। তাই একদল নিজেদের চরিতার্থের জন্য বইটি চাচ্ছে। আবার আর একদল বইটি রক্ষা করতে চাচ্ছে। তৃতীয় একজন আছেন যিনি বইটি ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছেন। কারণ মানব সভ্যতার ইতিহাস তিনি জানেন। তাই বইটিকে ধ্বংস করে দেয়া উচিত।

“সাম্ভালা-প্রথম পর্ব” এর কাহিনী শুরু হয় একটি খুন দিয়ে। বলা যায় প্রথমেই পাঠকে একটি ধাক্কা দেয়। এখানে থ্রিলার মুল বিষয়টি উঠে এসেছে। শুরুতেই পাঠকে ধরে রাখার জন্য একটি টুইস্ট তৈরি করা। বেশ ভালো ভাবেই সেটা করা হয়েছে।

এরপর আমরা দেখতে পাই কিছু চরিত্র। রাশেদ, শামীম, ড. কারসন, ড. আরেফিন, ড. শাখাওয়াত, মজিদ ব্যাপারি, আজিজ ব্যাপারী। মুলত এদের ঘিরের পুরো কাহিনী গড়ে উঠেছে।

বিশেষ ভাবে আমাদের প্রোটগনিস্ট হচ্ছে মজিদ ব্যাপারি ও রাশেদ। তাদের দুজন কে ঘিরেই এই বইটির কাহিনী গড়ে উঠেছে।

এখন আমরা এই বইটির শুরুর দিকে দেখলে দেখব যে খুন হয়েছে সেটার আর কোন হদিস পাওয়া যায় না। পাঠক যারা রিভিউ লিখেছেন তাদের অনেকের রিভিউ পরে একটি বিষয় দেখলাম তারা সবাই এই দিকটি এড়িয়ে গিয়েছেন। কেন সেটার উত্তর পাইনি।

আমি যদি সব কিছু বাদ দেই তবুও এটা কোন সুরাহ হয়নি এই বইয়ে। মানে প্রথম পর্বে। যদিও এটা করা দরকার ছিল। যেহেতু খুন বা মার্ডার তার মানে এখানে প্রসাশনিক কিছু কাজ করার থাকে। আবার এখানেও একটা কথা হচ্ছে যে লাশ পাওয়া যায়নি। তাহলে তো এখানে প্রসাশনিক অনেক কাজ থাকে। লেখক পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।

শুধু একটি খুনের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে তা নয়। আর একটি খুনের ক্ষেত্রেও ঠিক এমন হয়েছে। অনেক দায় সারা ভাবেই সেটাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। একটি খুন বা মিসিং কেস পুরো ঘটনাকে ঘুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

এবার আসি চরিত্রের গভীরতা নিয়ে কিছু কথা। যেহেতু তিন খন্ডের বই। তাই এটা নিয়ে বেশি কিছু বলছি না। প্রথম পর্বের প্রোগনিস্ট যিনি প্রধান চরিত্র তিনি একটু হলেও সাইড হয়ে গিয়েছেন। কারণ তার চরিত্রে ডেভলপমেন্টের জন্য ঐতিহাসিক বর্ণনা বেশি দিতে হয়েছে। যদিও হয়ত পরের পর্বে সেটা কাটিয়ে উঠতে পারব বলে মনে হয়। কিন্তু অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মাঝেই কাহিনী বেশ খানিকটা হালকা হয়ে গিয়েছে।

আমার যতদূর মনে হয়েছে। লেখক এই বইটি সেই প্রোটগনিস্টের চরিত্র ডেভলপ করার জন্যই লিখেছেন। তার যাত্রা শুরু থেকে এখন কোথায় আছে সেইটাই তিনি এখানে দেখিয়েছেন। তিনি কি ছিলেন কি হয়েছেন এসবের মাঝে কি কি হয়েছে সেটাই লেখক তুলে ধরেছেন।

এবার কথা বলি বইটির খল চরিত্র মানে আকবর আলী মৃধা কে নিয়ে। তিনি সাধক, সাধনা করেন। আর স্বাভবিক জীবন যাপন করেন। কিন্তু তার মধ্যে একটা চরিত্র খল বা ভিলেনের যেই গভীরতা সেটা কম ছিল। মানে সাধারণে মানের একজন ভিলেন হয়ে কাহিনীর শেষে হেরে গেলেন। ব্যাপারটা এমন হয়েই দাড়িয়েছে। অথচ এই ধরনের থ্রিলার এডভেঞ্চার প্লটের ক্ষেত্রে খল চরিত্র হওয়া উচিত ছিল বেশ গভীর চিন্তা শক্তি, রাজসিক ভাব, ও বুদ্ধিমান।

একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। সেটা হচ্ছে উনি বইটি পাবার আশায় একটা বাড়িতে আক্রমণ চালানোর জন্য লোক পাঠিয়ে দেন গভীর রাতে। উনি এটা কেন ভাবলেন না যে যেই বইটি নিয়ে এত কিছু তারা বইটি রক্ষায় কিছু করবে না।

যেহেতু প্রথম পর্ব শেষ। তাই কাহিনী সম্ভবত আরও গভীরে যাচ্ছে বা যাবে। আমিও অপেক্ষায় আছি। দ্বিতীয় বইটি পড়ার। আশা করছি দ্বিতীয় বইটিতে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কথা রাখেনি। না, রাখার ক্ষমতা নেই ?

লিখেছেন স্প্যানকড, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:২৪

ছবি নেট ।

ন হন্যতে বইটি মৈত্রীয় দেবীর যা উনি লিখেছিলেন ফরাসি লেখক মির্চা এলিয়াদের লা নুই বেংগলীর জবাব স্বরুপ।মৈত্রীয় দেবীর দাবি তিনি মির্চার প্রেমে পড়েন নি তিনি প্রেমে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসলেই কি সরকার এবার পারবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৫




সরকারী দলের কোন প্রার্থী হারতে চাইবে না। অত:পর যারা হারবে তাদের সবাই যদি বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। যারা নির্বাচনে আসে নাই তারা তো বলবেই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ সেই মহান এক এগার দিবস।

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫

এক মাস এগার বছর আগে আমি এই মহান ব্লগে মহান আইডি "বাকপ্রবাস" নাম করনে লেখালেখির সূত্রপাত করি। প্রবাসে থাকি তায় নামটা দিয়েছিলাম বাকপ্রবাস। প্রথমে আমি সোনার বাংলা ব্লগে লিখতাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

পুরুষ আমি মাংস খুঁজি

লিখেছেন পাজী-পোলা, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৩১

দীর্ঘ নিঃশ্বাসের হিমেল হাওয়ায় কেঁপে ওঠে হৃদয়
শিশিরের আদ্রে ভিজে যায় চোখ
ঝড়া পাতায় খসখসে দুঃখ।
একাকীত্বের সৃতির চাঁদরে নিজেকে ঢাকি, মনেপড়ে
মনেপড়ে উষ্ণতার জন্য তোমার বুক খুঁজছিলাম
তুমি বলেছিলে 'পুরুষ আমি মাংস খুঁজি।'
সেই থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি আছে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীদের মা-বোন আর স্ত্রীদের ধর্ষণ করা। এ যেন ৭১রে রাজাকারদের কার্বন কপি।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৩



এই মেয়েটার নাম নুরী। বাবা বিএনপি করে। বাবাকে বাড়ীতে ধরতে এসে না পেয়ে মা কে ধরে নিয়ে গেছে। মেয়েটার দাদী ওর কান্না থামাতে পারছে না। এটাই বাংলাদেশ।

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×