somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

থার্টি ফাস্ট নাইট, সমূহ বিপদের সম্ভাবনা। আপনিও হতে পারেন, সেসব বিপদের শিকার।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখা টি কপি করা .....রিয়া গত বছর ৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য কিছু ছেলে ও মেয়ে বন্ধুদের সাথে একটা অভিজাত পার্টি সেন্টারে গিয়েছিল। সেখানে বিকাল থেকেই তারা অনেক বিনোদন করছিল। বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল রিয়া। সন্ধ্যায় হালকা নাস্তা সারল, তারপর কনসার্ট শুরু হল। নাচানাচি সহ সেই কি উন্মাদনা সেই পার্টি সেন্টারে। রিয়াও আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল।
রাতে ডিনার করল সবাই। ডিনার শেষে সবার হাতে একটা করে বোতল দেয়া হল। রিয়া আনন্দে এতটাই মাতাল ছিল, বোতলে কি আছে না ভেবেই তা পান করা শুরু করল। পান করা শেষ। কিছুক্ষন পড়ে রিয়ার মাথা ঘুরতে শুরু করল। চোখ অন্ধকার হয়ে গেল। সে অনুভব করল তার শরীরে কে যেন হাত দিচ্ছে। আর পাশ থেকে অট্ট হাঁসির আওয়াজ আসছে। কিছুক্ষন পরেই রিয়া জ্ঞান হারাল।
ভোরে যখন তার জ্ঞান ফিরল। দেখল- দু জন লোক তাকে তার বাসায় নিয়ে এসেছে। পাশে তার বাবা মা কাঁদছে। তার গালে ও শরীরে কামড়ের দাগ। পুরা শরীরেই অনেক ব্যাথা। অনেক চেষ্টা করেও উঠে দাঁড়াতে পারছিলনা সে।
তারপর রিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হল। কিছুদিন পর সে বাসায় ফিরল। কিন্তু চুপ-চাপ। কারো সাথেই কথা বলেনা। অনেক বুঝানোর পর মুখ খুলল। বলল- আমার এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তার বাসায় রাতে অনুষ্ঠান হবে বলে তার বাসায় নিয়ে গেল। পরে সে বলল- অনুষ্ঠান বাসায় হবেনা, অমুক খানে হবে। অন্যান্য বান্ধবীরাও সাথে থাকায় রিয়া স্বাচ্ছন্দ্যে সেখানে গেল। এবং ডিনারেরে পরে, বোতল টা খাওয়ার কিছুক্ষন পরেই তার মাথা আর কাজ করছিলনা। তখন সে বুঝতে পারছিল-তার ছেলে বন্ধুরা তার শরীরে হাত দিচ্ছে। পাশে থেকে তার বান্ধবীরা ও হাসাহাসি করছে। কিন্তু তখন মাথা কাজ না করায় তার আর কিছুই করার ছিলনা।
ঘটনা বুঝতে পেরে- রিয়ার বাবা –মা আইনের আশ্রয় নিলেন। আইনের কাছে রিয়ার বন্ধুদের বক্তব্য ছিল- আমরাও না বুঝে বোতল টা পান করেছিলাম। তারপর আমাদেরও মাতলামি শুরু হয়। পরে আমরা কখন কি করেছি, নিজেরাও বলতে পারিনা।
আরেকটা ঘটনা- ৩১ ডিসেম্বরে যখন রাত ১২ টা ১ মিনিট বাজল। সাথে সাথে তাওসিফ আতশ বাজি, পটকা ফুটানো সহ বিভিন্ন আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে গেল।
আনন্দের কোন এক ফাঁকে হঠাৎ তাওসিফের ডান হাত আতশবাজির জন্য প্রজ্বলিত আগুনে পুড়ে গেল। অবস্থা যখন বেগতিক তখন সবার আনন্দ পণ্ড। হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি শুরু হল।
বাংলাদেশ ধর্মীয় দিক থেকে মুসলিম প্রধান দেশ। থার্টি ফাস্ট পালন করা কোন মুসলিম সভ্যতা নয়। মুসলমানরা আরবী নববর্ষ পালন করবে এটাই তাদের সভ্যতা। অথচ আরবী মাস কোন দিক দিয়ে আসে, কোন দিক দিয়ে যায়, কয়জন তার খবর রাখে। অথচ হায় -আমরা বুক ফুলিয়ে নিজেদের মুসলিম দাবি করি।
জাতিগত দিক থেকে আমরা বাংলাদেশী। বাংলা নববর্ষ আমরা মোটামুটি ভালো ভাবেই উদযাপন করি। কিন্তু বাংলা মাস বলতে বললে- বর্তমান প্রজন্মের কয়টা ছেলে-মেয়ে ঠিক মতো বলতে পারবে? অথচ আমরা গর্বের সাথে বলি। আমরা বাংলাদেশী। ৩০ লক্ষ প্রানের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি।
কিন্তু আজ আমাদের চলাফেরা, কথাবার্তা সব দিনের পর দিন যেন পশ্চিমা হয়ে যাচ্ছে।
থার্টি ফাস্ট উদযাপন করা পশ্চিমা সভ্যতা। ধর্মীয় ও জাতিগত কোন দিক থেকেই এ নববর্ষ উদযাপন করা আমাদের জন্য উচিৎ নয়।
অথচ এ ইংরেজি নববর্ষই আমরা সবচেয়ে জাকজমকপূর্নভাবে উদযাপন করে থাকি। সবচেয়ে বেশী বেহায়াপনা করে থাকি। এ সময়ে আমরা মাতাল থাকি।
এজন্য এ রাতে অন্য সকল দিনের চেয়ে নারী ধর্ষণ বেশী হয়ে থাকে। নরপশুরা নারীদের সবচেয়ে বেশী নারীদের এ রাতেই আনন্দের নামে ভোগ করে থাকে। রিয়ার মত কেউ কেউ সমাজের চোখে ধড়া পরে যায়। কেউ কেউ লোক লজ্জায় চুপচাপ থাকে। কিন্তু তাদের বুক ফেটে যায়। কেউ আবার এ বেহায়াপনাকে নিজের সাথে মানিয়ে নেয়।
“মনে আছে- বাঁধনের কথা। ঢাবির শহীদুল্লাহ হল শাখার তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের আশ্রিত সভাপতি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা কিভাবে বাঁধনের কাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলেছিল, আনন্দের নামে। মেয়েটার শরীরের কোন অঙ্গই আর গোপন ছিলনা।”
এটা কি কোন আনন্দ হতে পারে। আমার দৃষ্টিতে এটা পুরা নারী ধর্ষণ।
ভারতের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়ে গতকাল কত করুন ভাবে মারা গিয়েছে। আনন্দের নামে আমাদের নরপশুগুলাও কোন নারীকে যে মারবেনা, তার গ্যারান্টি কি। কোন মেয়ে যে রিয়ার মতো অবস্থার শিকার হবেনা, তাই বা কে বলতে পারে। আবারও যে কোন বাঁধন কাহিনী ঘটবেনা কেউ কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন। তাই বোন সাবধান।
এ তো গেল- নারী কাহিনী। আনন্দ করতে গিয়ে তাওসিফের মত কত জন হাত হারাচ্ছেন। রোড এক্সিডেন্টে মারা যাচ্ছেন। তার কি কোন হিসাব আছে। পহেলা জানুয়ারী পেপার খুললেই দুর্ঘটনা আর দুর্ঘটনার ছবি শুধু চোখে পড়ে।
এ রাতে মা- বোনরা ধর্ষিত হচ্ছে, সম্ভ্রম হারাচ্ছে। অনেকে আনন্দ করতে গিয়ে করুন ভাবে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু কিসের জন্য। না ধর্মের জন্য। না দেশ ও স্বজাতির জন্য। যা করছি, যা ঘটছে সবই বিজাতির জন্য। আমরা আসলে কতটুকু বুদ্ধিমান। না পুরাই বোকা। আশা করি সবাই ভেবে দেখব।
তাই আসুন- বন্ধুরা, এ রাতে মাথা ঠাণ্ডা রাখি। অযথা বিপদ ডেকে না আনি। মন চাইলে শালীন পরিবেশে আনন্দ করি। বাবা- মা ও ভাই-বোনের সাথে আনন্দ করি। এর থেকে নিরাপদ জায়গা আর নেই।
সবচেয়ে ভালো হয়। যদি এ রাতে আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বরের কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করতে পারি। নিজের ও দেশের মঙ্গলের জন্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×