somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৈয়দপুরের ‘চিনি মসজিদ’

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উপমহাদেশে সুফী সাধকদের প্রেরণাতেই এক সময়ে মুসলিম শাসন ও মোগল আমলে বহু মসজিদ গড়ে উঠে। ধর্ম প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি মুসলিম সাধকরা শিল্প-সুষমা মণ্ডিত অসংখ্য উপসনালয়ও (মসজিদ) তৈরি করেন।

এমনি একটি উপাসানালয় নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগে ১৮৬৩ সালে তৈরি ঐতিহাসিক ‘চিনি মসজিদ’। প্রথমে এটি ছিল একটি দোচালা টিনের ঘর। পরবর্তীতে ১৯২০ সালে ইমাম হাজী হাফিজ আবদুল করিমের উদ্যোগে মসজিদের ৩৯x৪০ ফুট আয়তনের পাকাঘর নির্মাণ করা হয়। এর নকশা তৈরি করেন হাজী করিম নিজেই। ১৯৬৫ সালে এর দ্বিতীয় অংশটিরও নির্মাণ শেষ হয়।

এসময় কলকাতা থেকে ২৪৩টি শংকর মর্মর পাথর এনে মসজিদে লাগানো হয়। মসজিদের স¤পূর্ণ অংশ চীনামাটির টুকরা দিয়ে আবৃত করতে বগুড়ার একটি গ্লাস ফ্যাক্টরি মসজিদে ২৫ মেট্রিক টন চীনামাটির পাথর দান করে। এই পাথরেই মোড়ানো হয় মসজিদের ৩২টি মিনারসহ ৩টি বড় গম্বুজ। নির্মাণ করা হয় উত্তর ও দক্ষিণে দু’টি ফটক। মসজিদের গোটা অবয়ব ঢেলে সাজানো হয় রঙিন চকচকে পাথরে। মসজিদের বারান্দা বাঁধানো হয় সাদা মোজাইকে।

দেয়াল জুড়ে চীনামাটির পাথরেই আঁকা হয় নানান সুদৃশ্য নকশা। স্থানীয়রা জানান, মসজিদের পুরো অংশ চীনামাটি দিয়ে তৈরি বলে এর নাম হয় ‘চিনি মসজিদ’। মসজিদকে ঘিরে আছে নানা কাহিনী। এর অনন্য নকশা আর স্থাপত্য শৈলীর কারণে এটি আকৃষ্ট করেছে শিল্প বা স্থাপত্য সমঝদারদেরকেও।

মসজিদটি নিছক উপাসনালয়ই নয়, নয়নাভিরাম স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছেও সমান আকর্ষণীয়, তেমন ধর্মানুরাগী মুসলমানদের মনেও মসজিদের আবহ সঞ্চার করে এক দারুণ আধ্যাত্বিক অনুভূতি। দৃষ্টি মনোহর ও ঐতিহ্যমণ্ডিত মসজিদটির দ্বিতীয় তলায় পর্যটকদের থাকার বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ফলে প্রতিবছরই দেশ-বিদেশের উলে¬খযোগ্য সংখ্যক পর্যটক, প্রথিতযশা ব্যক্তি ঘুরে আসেন এ মসজিদ। এ পর্যšত দেশের দু’জন রাষ্ট্রপ্রধানও পরিদর্শন করেন এ মসজিদ।

মসজিদটি সম্প্রসারণের দাবি উঠলেও এর বাঁয়ে একটি ইমামবাড়া, ডানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমে গা ঘেঁষে খ্রিস্টিয় সম্প্রদায়ের কবরস্থান আর পূর্বে পাকা সড়কের কারণে মসজিদটি সম্প্রসারণের সুযোগ সীমিত। তবে এরই মধ্যে ডানদিকে কিছুটা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ধর্মানুরাগী ও বিচক্ষণ আবদুল করিম এলাকায় নির্মাণ করেন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৯ সালে তিনি পরলোকগমন করেন। নিঃসন্দেহে ‘চিনি মসজিদ’ এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করতে রেখেছে অনন্য ভুমিকা।

মূল লেখা
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×