অনেকদিন পর লেখার সময়-সুযোগ হল। ইদানিং সবজায়গায় ইয়ো ইয়ো টাইপের পোলাপাইনের অবস্থার দৌড় দেখে লিখতে বসলাম। কিছু বিষয় দেখে কেউ শঙ্কিত, কেউ আবেগে আপ্লুত, কেউবা আবার দুঃখিত। আমি দুঃখিতর দলে।
আসুন, একবার দেখে নেই আমাদের ঠিক পরবর্তী প্রজন্মের কিছু উজ্জ্বল দিক এবং এদের মধ্যকার চিন্তাশক্তি।
১। তোর কি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে? নাই? তার মানে তো তুই একটা আ**
২। ব্লগে লিখিস তুই? উফফফ... পণ্ডিত আসছে। পুরাই বোরিং!
৩। স্টার মুভিজে ওই ইংলিশ সিরিয়াল টা দেখসিস? কি? দেখিস নাই... তুই তো দেখি একটা খ্যাত।
৪। এত বছরেও মার্ডার মুভি দেখো নাই মামা? তুমি তো পুরাই বেরসিক। রস কস কিছুই নাই তোমার মধ্যে।
৫। হেয়ার স্টাইলটাতে আরেকটু ইমো লুক আনবি না?
............ আরও শত শত ডায়লগ, যা বলে শেষ করার মত নয়।
এবার আসুন দেখি আমাদের ফেসবুক জেনারেশনের পুলাপাইনের কাজের কিছু বহমান ধারা......
১। ধর্ম - এথিস্ট না দিলে তো মামা তুমি কুল হতে পারলা না। বন্ধু সমাজে ব্যপক ভাবে তুমি ব্যাকডেটেড হিসাবে পরিচিত হবা।
২। রাজনৈতিক মতবাদ?? - সাম্যবাদ না দিলে কি আর উঁচু ক্লাসে উঠা গেল? উহু, Communism ছাড়া কথা নাই।
৩। কমেন্ট কমেন্টে লুল না ঝরাইলা তো হাইড়া গেলা।
৪। প্রোফাইল পিকচারে কমেন্টের ঝড় নাই? নাহ, তুমি তো একটা গাড়ল।
৫। সিসা লাউঞ্জের পিক গুলা আপ দিসিলা? দেও নাই? আহহা, জলদি আপ দাও। বন্ধু সমাজে ক্লাসিক হইতে হবে না?
৬। রাস্তায় কুত্তার টয়লেট করার পিক টা তো পুরাই ডিটেইল পিক। তারাতারি লাইটরুম দিয়া এডিট মাইরা আপ দাও। সাবধান, কুত্তার বালের কালার কিন্তু চেঞ্জ হইতে হইব, নাইলে কইলাম তুমি এডিট এর বা** টাও বুঝ না।
৭। মোবাইল দিয়া দিনে কম হইলেও একটা স্ট্যাটাস দিবা, নাইলে মাইনসে বুঝব কেম্নে যে তোমার মোবাইল আসে, আবার মোবাইলে নেটও আসে! কমেন্টে যে যাই কউক, তুমি কিন্তু মামা, কথা ঘুরায়া তোমার নতুন কেনা সেটের দিকে নজর নিয়া যাবা।
...... আর কি বলব? আপনারা আমার চেয়েও বেশি বিজ্ঞ এই ব্যাপারে।
উপদেশ নয় অনুরোধঃ নিজের সংস্কৃতি কে তুলে ধরুন, নিজের ধর্ম কে সম্মান করুন, তবেই আপনি মানুষ। অন্যথায় আপনার সাথে পাশের বাসার পোষা কুকুর-বিড়ালের কোন পার্থক্য থাকবেনা, কারণ সেগুলোর ধর্ম নেই, সংস্কৃতি নেই; সেগুলো অনুকরণপ্রিয়। তাই অন্য কিছু অনুকরণ করে পশু-পাখির সাথে নিজের বিভেদটুকু কমাবেন না আশা করি।