বিবাহ-পরবর্তি পর্বঃ
সেদিন রুবাই এর সাথে দেখা হল। ধানমন্ডি “স্টার” হোটেলে খাচ্ছে। সাথে বিশাল বাহিনী। রুবাইএর বউ, শ্যালিকা, আর রুবাইয়ের বউ এর বড় বোনের মেয়ে যার বয়স ৫ বছর। আর আমরা, মানে আমি আর আমার দুই বন্ধু। রুবাই সবাইকে খাওয়াচ্ছে। আমি অবশ্য দাওয়াতে ছিলাম না, আমার বাসা ওখানেই বলে পরে আমাকে ডাকা হয়েছে। নতুন জামাই বলে বিল দেওয়ার দায়িত্ব রুবাইয়ের। পিচ্চি মেয়েটা সাইজে ছোট হলে হবে কি, তার ও সবার মত সব মেনুই লাগবে। বেচারী রুবাই। শেষে অবশ্য যা হবার তাই হয়েছে, বেশির ভাগই সে নষ্ট করেছে।
খাওয়া তো হল, এরপর কই যাওয়া যায়? অনেকক্ষণ ভাবনা চিন্তার পর রুবাইয়ের শালিকা “বসুন্ধরা সিটি শপিং মল” এ যাওয়ার প্রস্তাব পেশ করল। রুবাই দেখি রাজি। তবে আমি জানি না, রাজি হওয়ার সময় রুবাইয়ের বাঁ চোখ কেঁপে উঠেছিল কিনা। যদি না কেঁপে থাকে সেটা এটাই প্রমাণ করে যে, বিপদ আসার আগে বাঁ চোখ কেঁপে উঠে বলে যে কথা প্রচলিত আছে তা সর্বৈব মিথ্যা।
গেলাম “বসুন্ধরা সিটি শপিং মল” এ। বিভিন্ন ফ্লোর এ ঘুরাঘুরি করছি, হঠাৎ এক দোকানে রুবাই একটা কালো টি-শার্ট পছন্দ করলো। আমি বল্লাম "তাড়াতাড়ি তোর বউ আসার আগেই কালো রংয়েরটা কিনে ফেল্"। সে করলো কি, তার বউ কে ডেকে পছন্দ করে দিতে বল্ল। তারপর তার বউ এর পছন্দে সে একটা ক্যাট্ক্যাটে হলুদ রংয়ের টি-শার্ট কিনলো। আবারো বেচারা রুবাই।
এর মধ্যে দোকানে এসে হাজির হল সেই পিচ্চি মেয়েটি। এসেই তার আবদার, সে ফতুয়া কিনবে। এখন ঠেলা সামলাও। অনেক বুঝায়ে তাকে ফতুয়া কেনা থেকে নিবৃত্ত করা হল। এরপর সামনে পড়ল খেলনার দোকান। এবার সে খেলনা কিনবেই। কী আর করা। তাকে খেলনা পছন্দ করতে বলা হল। সে খেলনা আর পছন্দ করতে পারে না। যেটাই দেখানো হয় সেটা হয়ত তার আছে অথবা তার ছিল। কয়েকটা দোকান ঘোরার পর অবশেষে তার খেলনা পছন্দ হল। দাম? সে কথা আর নাই বা বল্লাম।
তারপর সেখান থেকে যাওয়া হল সবচেয়ে উপরের ফ্লোরে, যেখানে যাবতীয় খাওয়ার দোকানের মেলা বসেছে। সেখানে গিয়ে আবার লাইম-লাইটে সেই পিচ্চি। সে আইস-ক্রিম খাবে। কেনা হল। জিনিস্টা যেহেতু আইস-ক্রিম আর সাথে রয়েছে শ্যালিকা, তাই শ্যালিকার জন্যও একটা। (ভাগ্য ভাল রুবাইয়ের বউ এর ঠান্ডার সমস্যা আছে, আর রুবাই এর দুরাবস্থা দেখে আর আমরাও কিছু বললাম না)
এই পর্যন্ত রুবাইয়ের সাথে থাকার পর আমি এক জরুরী কারণে চলে আসি। তাই এর পর কি হল তা আমি আর বলতে পারছি না।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ বিয়ের পর কোথাও বেড়াতে গেলে শ্যালিকা জাতীয় বস্তু পরিহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে ক্ষতির পরিমাণ হয় অপেক্ষাকৃত কম।