আমার আব্বু মরহুম প্রচ্ছদশিল্পী আবদূর রোউফ সরকার জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে চাকুরী করতেন। সেখান থেকে আমার আব্বুকে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হতো। কখনো কোন প্রশিক্ষণে বা কোন আন্তর্জাতিক বই মেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে। আব্বু সেখান থেকে অবসর গ্রহণ করে, তখন সেখানে আব্বুর সমতুল্য কর্মী নিয়োগ দিতে পারে নাই।
যাক, আব্বু বিভিন্ন দেশে যেত, আর আমার এবং আমার বোনের জন্য বিভিন্ন খেলনা নিয়ে আসতো। অনেক সমবয়সীরা আমাদের বাসায় আসতো শুধু আমাদের খেলনা দেখতে। ১৯৮৭ সালে আমি যখন বিলাতে গিয়েছিলাম, তখন আমিও অনেক খেলনা নিয়ে এসেছিলাম। ছোটবেলায় আমি আমার খেলনাগুলো ভিতরটা খুলে দেখতাম ভিতরে কি আছে? আজও মানুষের মনের ভিতরে কি আছে তা দেখার চেষ্টা করি? প্রায় হতাশ হই। এতো সুন্দর মানুষগুলোর ভিতর এমন কুৎসিত হৃদয় কিভাবে হতে পারে? আজ খেলনাগুলি বের করলাম। আব্বু বেঁচে নাই, এসব দেখলে তার কিছু স্পর্শ পাই। কি মধুর করে আমাকে ঠসা ডাক্তার বলে ডাকতো? সব খেলনা আমার নয়, আমার বোনেরও আছে। আমরা ভাই বোন ছোটবেলায় এক সাথে খেলা করতাম। খেলার মধ্যে নাটকও করতাম। আমি হতাম পুতুল বিয়ের ছেলেপক্ষ আর ও হতো মেয়েপক্ষ। আমি এটা দিবো, ও বলতো ওটা দিবে। শেষে আমি বললাম, সব তো শেষে ছেলেপক্ষই পাবে।