তাদের সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল ৬ বছর আগে, হঠাৎ করেই। প্রথমে ছিল শুধু বন্ধুত্ব, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা গভীর হয়ে উঠেছিল। সে ডিভোর্সি ছিল, এবং তার জীবনের অনেক কষ্ট ও যন্ত্রণার সাথে লড়াই করে চলেছিল। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে তারা কথা বলত, যেন তাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল এই কথোপকথন।
সে প্রায়ই ফোন লাইন রাখত, তাদের কথোপকথন শেষ করতে চেয়েও না চেয়ে। তার জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা, মামানিল্য চলছিল, এবং সে সবসময় হতাশার মধ্যে ডুবে থাকত। কিন্তু সে বুঝত না, তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষটির হৃদয়ের গভীরে কেমন ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
এই মানুষটি তাকে বোঝাতে চাইত, তার অনুভূতি, তার ভালোবাসা। সে জানত যে তার কথাগুলো সহজে পৌঁছায় না তার কাছে। সে চেয়েছিল, তার বান্ধবী তাকে বুঝুক, তার হৃদয়ের প্রতিটি শব্দ অনুভব করুক।
প্রতিদিন সকালে সে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই তার বান্ধবীকে ফোন করত। "সুপ্রভাত," সে বলত। "কেমন আছো আজ?" তার কণ্ঠে একটা বিশেষ মায়া ছিল, একটা গভীরতা ছিল। সে জানত যে তার বান্ধবী তার কথাগুলো শুনে কিছুটা হলেও স্বস্তি পায়।
কিন্তু তার প্রতিক্রিয়া সবসময় একরকম ছিল না। কোনো দিন সে হাসত, কোনো দিন সে বিষণ্ণ থাকত। "ভালো আছি," সে বলত, কিন্তু তার কণ্ঠে সেই কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে হত না।
সন্ধ্যায় যখন তারা আবার কথা বলত, তখনও একই রকম হত। "কেমন দিন কাটল?" সে জিজ্ঞেস করত। "বেশ ভালো," তার বান্ধবী উত্তর দিত, কিন্তু তার কণ্ঠে একধরনের নির্লিপ্ততা ছিল।
"আমি তোমার প্রতিটি দুঃখ, প্রতিটি আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই," সে বলত। "কিন্তু তুমি কি বুঝতে পারছো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি? তোমার প্রতিটি অনুভূতি আমি হৃদয়ে ধারণ করতে চাই।"
তার বান্ধবী হয়তো তার এই অনুভূতিগুলো বুঝতে পারত না, বা হয়তো বুঝতে চাইত না। সে তার নিজের জীবনের যন্ত্রণার মধ্যে ডুবে থাকত। তার মামানিল্য তাকে সবসময়ই চিন্তিত করে রাখত।
তাদের মধ্যে এই সম্পর্কের গভীরতা থাকা সত্ত্বেও, একধরনের অপূর্ণতা ছিল। সে চেয়েছিল তার বান্ধবী তার অনুভূতিগুলো বুঝুক, তার মনের কথা শুনুক। কিন্তু তার বান্ধবী নিজের সমস্যায় এতটাই ব্যস্ত ছিল যে সে সবসময় তা করতে পারত না।
এই মানুষটি আশায় ছিল, একদিন হয়তো তার বান্ধবী বুঝবে। একদিন হয়তো সে তার মনের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবে। সে জানত, এই অপেক্ষা হয়তো দীর্ঘ হবে, কিন্তু সে অপেক্ষা করতে রাজি ছিল। কারণ তার ভালোবাসা ছিল সত্যিকারের, গভীর এবং নিঃস্বার্থ।