somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাইয়াদের যত রিক্সা রঙ্গ!! :P:P (সিরিয়াস পোষ্ট)

২০ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই রিস্কা, যাইবা?
-- হ যামু।
ঠিক আছে যাও!!


আজকালকার রিক্সাওয়ালাদের যে অবস্থা, কি আর বলিবো! এরা চরমভাবে আপডেটেড! ধরেন আপনে তিন মাস ধরে বাজারে যাইতেছেন না। কিন্তু প্রত্যেক সপ্তাহেই টের পাইবেন যে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িতেছে নাকি কমিতেছে। কারণ মুল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে আনুপাতিক হারে রিক্সা ভাড়াও বাড়িতে থাকিবে। তবে আমার প্রাণপ্রিয় ভাইজানেরাও তো কম যায় না। যেইভাবে বাজারে গিয়া সিন্ডিকেট ওয়ালাদের সিস্টেম দেয়, তেমনি সিস্টেম দিতে পারে রিক্সাওয়ালাদেরও! এহেন টাইটিংযের দৃশ্য -- ঢাকার রাস্তায় আজ এক পরিচিত রঙ্গ!


বড় রাস্তার মোড়ে, কিংবা চিপা গলির মাঝে, অথবা জানজটের ফাঁকে শ্রাব্য/ অশ্রাব্য ভাষায় চলিতে থাকে ভাইজানদের এই রঙ্গ। মধ্য আয়ের ভাইজানদের মহামূল্যবান আয় সমূহ গলায় “পারা” দিয়া হাতাইয়া লয় ওই রিক্সা শ্রমিকেরা। এহেন দূর্মূল্যের বাজারে সামান্য সম্বলখানির সিংহভাগ যদি মাঠে ঘাটে হারাইতে হয়- তা কি কারো সহ্য হইবে? আর তাই রিক্সাওয়ালা ভাইজান এবং জনতা ভাইজানদের মাঝে চলিতে থাকে দর কষাকষির তিক্ত রঙ্গ! ইহাতে কখনো ভাইজানদের জয় হয়, কখনো হয় রিক্সাওয়ালাদের। নিজ চোখে দর্শিত কিংবা শ্রবিত এমনই কতক রঙ্গ লইয়া অদ্য এই রচনা।



পলাশীর মোড়ে দাড়াইয়া আছি। শাহবাগ যাইবো। রিক্সাওয়ালারা সব উদাস ভঙ্গিতে চাহিতেছে। কেউ যাইবে না। হঠাৎ এক ভাইজান--
ওই রিস্কা যাইবা?
-- না।
ক্যাঁ?
-- এমনি।
যাইবানা তো রিস্কা লয়া বাইর হইসো ক্যা?
--হাওয়া/বাতাস খাইতে বাইর হইসি।
এই গরমে হাওয়া/বাতাস কই পাইলা?
-- ভাই, আপনে তো বড় ত্যাক্ত করেন! কইলাম তো যামু না। অন্য যায়গায় দেহেন।
কেন? তুমি যাইবা না কেন?
-- কইলাম না এমনি!
এমনি কেন?
-- আরে ভাই আপনের সমস্যাটা কি?
তুমি বইসা আসো এইটাই আমার সমস্যা!
-- এটূ আরাম করতাসি, এতে আপনের কি?!
ক্যান, তুমি আরাম করবা ক্যান?
-- আরে ভাই আশ্চার্য্য তো! আপনে এরুম করেন ক্যা?
তুমি এরুম করতাসো ক্য্য?
-- আইচ্ছা আপনে কি চান কন দেহি। বইয়া রইছি। কাউরে তো গুতা দিতাছি না। আপনে অন্য রিস্কা তে জিগাইলেই তো হয়!
তুমিও আমারে এটূ শাহবাগের মোড়ে দিয়া আসলেই তো হয়!!

ত্যাক্ত রিস্কাওয়ালা শেষে হাল ছেড়ে দেয়। দর কষাকষি করে ভাইজানকে রিস্কায় তুলে নেয়। আর আমাকে আবুল বানিয়ে ভাইজান রিস্কায় চড়ে শাহবাগ যায়!!




আরেক বার। বন্ধু লইয়া ভ্রমণ চলিতেছে। বন্ধুদের মধ্যে একজন আবার বেশ জাউরা প্রকৃতির। হঠাৎ এক রিক্সা ওয়ালাকে দেখে--

ওই খালি যাইবেন নি?
-- কই?
জাহান্নামের চৌরাস্তা!?
-- হ যামু। (রিক্সাওয়ালাও দেখি কম জাউরা না!)
ভাড়া কত?
-- ত্রিশ ট্যাকা।
পনের ট্যাকা যাইবা?
-- না।
ধুর মিয়া। এহেন তে পনর ট্যাকার বেশী ভাড়া না। না গেলে ফুটো।

রিক্সাওয়ালা বেল বাজিয়ে ফুটে যায়।




প্রচন্ড বৃষ্টি। চকবাজার দাড়াইয়া আছি। একটাও রিক্সা পাইতেছি না। দু একটা যাও আছে সেইগুলান হুড ঊঠাইয়া গা বাঁচাইতেছে।এমন সময় এক রিক্সা দেখিয়া আমি পুলকিত হইলাম--

এই যে চাচা যাবেন?
-- কই?
আরমানিটোলা বটগাছ।
-- যামু।
ভাড়া কত?
-- পঞ্চাশ টাকা!
এত্ত!? এইখান থেইকা এইখানে যাবেন। এট্টূক রাস্তা কি কখনো ৫০ টাকা ভাড়া হয়?
-- ত্রিশ ট্যাকা যাইবেন?
দেখেন চাচা। এটুকু রাস্তা ১৫ টাকাও ভাড়া হয় না। তবু ২০ টাকা দিবো। যাবেন?
-- ভাড়া ২০ ট্যাহা হেইডা তো আমিও জানি। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজ্জা আপনেরে লইয়া যাইতাছি। ঠান্ডা লাগলে তো আর ঔষুধ কিন্যা দিবেন না!! হের লিগা ১০ ট্যাহা বেশী না দিলে যামু না!!

এহেন অকাট্য যুক্তি খন্ডাইতে না পারিয়া শেষমেষ ৩০ ‘ট্যাকা’ই গচ্চা দিলাম!




প্রচন্ড জ্যামে বসিয়া আছি। হঠাৎ গগন বিদারী চিৎকার শুনিয়া চমকাইয়া গেলাম। না, কোন নারীর ইজ্জ্বত লুন্ঠিত হইতেছে না, কিন্তু এক পুরুষের সর্বস্ব ছিনাইয়া লইবার চেষ্টা চলিতেছে মনে হয়! ফিরিয়া তাকাইতেই দেখি বাকবিতন্ডা--

ভাইজান, ট্যাহা দিয়া যান!?
-- কেন? ট্যাকা দিমু ক্যান?
ট্যাহা দিবেন না মানে! হেই কোন আজিমপুর তে আপনেরে এহেনে (পল্টন) লইয়া আইলাম! ভাড়া দিবেন না?! কম করে হইলেও তো ৫০ ট্যাহা দিবেন।
-- ওই তুই আমারে চিনস?
না।
-- ওইটা কি চিনস? আগে আইসোস কুনোদিন? (আওয়ামী লীগের অফিস দেখিয়ে)
না চিনি না। আইন্নে আমার ট্যাহা দেন।
-- চিনবি কেমনে? লাইত্থানি খাস নাই ত! তাই চিনস না। ঐখানে দেশের নেতারা আসে। আমিও তো ঐখানেই আইলাম। তাইলে আমি কে?
আপনে কে হেইডা জানি না। আপনে আমার ট্যাহা দেন? ৫০ ট্যাহা না দেন, ৪০ ট্যাহা দেন।?
-- নাহ্‌! তোরে তো বুঝাইবার পারতাছি না! ঠিক আছে তুই আয় আমার লগে। তোর ট্যাকা ভিতরে থেকা দিমু।

রিক্সাওয়ালা ‘নেতা’ ভাইজানের পিছে পিছে গিয়াছিলো। এই রঙ্গে পরে কি হইবে, কে জিতিবে, বোধ করি সবাই ধরিতে পারিয়াছেন!



শেষ করিব দু’ ছত্র মনের কথা দিয়া--

‘ যার অঙ্গখানি করিয়া মাটি সদা বহিয়া আনছে তোমায়
সে যে রিক্সা শ্রমিক, তোমারই ভাই, ধরোনা ওর জামায়! ’



আপুদের যত রিক্সা রঙ্গ! (দুষ্টামী পোষ্ট)
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×