somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসচাপায় পথচারীর মৃত্যু: কয়েকটি কথা

২৭ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন মানুষের মৃত্যু মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন। এজন্য বাস মালিক, ড্রাইভার কিংবা সংশ্লিষ্টদের শাস্তি হওয়া দরকার। অবশ্যই তা দৃষ্টান্তমূলক।

কিন্তু এখানেও একটি কিন্তু থেকে যায়।

একটু পেছনে ফিরে তাকনো যাক। হামীম-এর কথা মনে আছে আপনাদের? উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছয় বছরের শিশু হামীম। স্কুল ছুটি হবার পর মায়ের হাত ধরে বাড়ি ফিরছিল। টুকটুকে মুখের টগবগে প্রাণ ঝরে গিয়েছিল নিমিষেই।
এই শিশুর মৃত্যুর পর কম কথা হয়নি। দেশের বড় বড় বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এটা নিয়ে শোক করেছেন। কথা উঠেছে বাস ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবারও। এরপর আমি আর্ কিছু জানি না। আপনারা জানলেও জানতে পারেন।
তখন একটি কথা কেউই উচ্চারণ করেনি, তা হল হামীম-দের মায়ের কতটুকু সাবধান হওয়া উচিত! ওই দুর্ঘটনার স্থান ছিল কাকরাইল ফুটওভার ব্রীজের ঠিক নীচেই। শিশুটির মা ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যাবার সময় কিংবা খাটুনিটুকু করতে চাননি। ফলাফল সবার জানা। একটু কথাও হয়নি এটা নিয়ে।

আজকের ঘটনা কি, এখনও বিস্তারিত জানি না। কিন্তু এটুকু বুঝতে পারি আমাদের সভ্য নাগরিক পথচারি হবার দায়টুকু নিতে আমরা নারাজ। আমরা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করতে রাজী না, আমরা সিগন্যাল পড়ার অপেক্ষা করতে রাজী না। আমরা আগে যেতে চাই। রাস্তা আমাদের জন্য বানানো হয়েছে, তাই যখন-তখন যেভাবে খুশি সেভাবে রাস্তা পার হব-এই আমাদের অধিকার। শতমণ ওজনের বাস একটুর জন্য আমাদের ছুঁয়ে গেলে কি হবে তা ভাবতে নারাজ আমরা। দেড় মণ ওজনের শরীর সামলাতে পারি না আমরা, আশা করি অশিক্ষিত বাস ড্রাইভার শতমণ ওজনের বাস সামলাবে চোখের পলকে-এক সেকেন্ড এদিক ওদিক হলেই শেষ আমি। তবু আমার সময় নাই। আমাকেই আগে যেতে হবে। বাসে বসা পঞ্চাশ জন লোকের চেয়ে আমার একার সময়ের দাম আমার কাছে অনেক বেশি- এমনকি আমার জীবনের চেয়েও। এই হলাম আমি, আমরা।

স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা আজকাল তাদের ভব্যতার সীমানা ভূলে গেছে। যেখানে সেখানে স্কুল কলেজ গেয়ে ওঠায় পরিবহন ব্যবস্থা হুমকির মুখে। অনেক স্কুল কলেজের সামনে দিয়ে যাবার সময় বাস ড্রাইভার কিংবা হেলপাররা দ্রুত পার হতে পারলে বাঁচে। স্কুল কলেজের ছাত্রদের আচরণ তাদের এতে বাধ্য করে। এরকম উদাহরণ সবা্রই জানা আছে ভূড়িভুড়ি। যা ইচ্ছে করার স্বাধীনতা তাদের। সব দায় যেন বাস চালকদের।

প্লিজ, দায় অস্বীকার করে যান। কেউ মাথা ঘামাবে না। বরং কথা উঠবে শালা ড্রাইভারেরই যত দোষ। চল্লিশ কিমি স্পিডের শতমণি বাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার দোষ আমার আপানার তিন কিমি স্পিডের শরীর নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার চেয়ে অবশ্যই অনেক বেশি।

ভাই, জীবনটা আপনার-আমার। চিন্তা করুন তো, আপনি বাসের নিচে জীবন দিলেন আর আপনার মা আপনার লাশ সামনে নিয়ে বসে আছে! কি বুক মুঁচড়ে ওঠে? তাহলে রাস্তা পারাপারের সময় আপানার জানমালের দায়িত্ব আপনিই নিন। বাস কিংবা গাড়ীর ড্রাইভার বেপরোয়া- এটা চিন্তা করেই আরো বেশি সাবধান হওয়া দরকার আপনার-আমার।

তবে অবশ্যই ঢাকার বাস চালকরা অনেক বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, অনেক সময় আমাদের সহ্যের সীমানার বাইরে। কর্তৃপক্ষ এই দায় অস্বীকার করতে পারে না। অঘটন-দুর্ঘটনা কম ঘটছেনা এই শহরে। টাইলেই কেউ যেখানে সেখানে ইচ্ছেমত গতির ঝড় তুলতে পারে না। চাইলেই ওভারটেক করতে পারে না। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে কঠোরভাবে।

বুয়েট ছাত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের জন সমবেদনা প্রকাশ করছি।


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৩৭
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×