২০০৩ সালের শুরুর দিকের কথা। আমি তখন দেশে, চাকরীবাকরী ছেড়ে ব্যবসার নামে মোটামুটি সুখী বেকার জীবন পার করছিলাম। ভবিষ্যত স্বপ্নময়। এমন সময় লন্ডন থেকে সোহেল ভাই বললেন, "বৎস, চলে আসো এখানে। চারদিকে অনেক মাগুর মাছ (মানে মক্কেল)। দু'জন মিলে ভাল কোন ব্যবসা ফাঁদা যাবে।" অতএব আমিও স্বপ্নের বুদবুদে ভাসতে ভাসতে লন্ডনেই চলে যাবো বলে ঠিক করলাম। লন্ডনে যাবার সহজ বুদ্ধি হলো স্টুডেন্ট ভিসা। যথাসময়ে সোহেল ভাই লন্ডনের কোন এক বিল্ডিং-এর আধখানা ফ্লোর ভাড়া নিয়ে গজিয়ে উঠা এক ভিসা-কলেজে আমার ভর্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। সব মোটামুটি ঠিক। ভর্তি ফি-এর ১০০০ পাউন্ড অগ্রিম জমা দিলেই সেই কলেজ আমাকে সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দিবে। এসব দেখিয়ে ভিসা নিতে হবে। তারপর ভিসা হলেই ফুরুৎ।
প্ল্যান মোতাবেক বাবাকে পটিয়ে টাকা ম্যানেজ করলাম। লন্ডনের এই কলেজের মালিক বাঙ্গালী। তার কোন এক আত্মীয় থাকে খিলগাও-এর ওদিকে। তাকে গিয়ে টাকা দিয়ে আসলেই হবে। অতএব কোন এক শুভ দিনে (?) মাঞ্জা মেরে চেহারায় বিদেশ পড়ুয়া ফিরিঙ্গি টাইপের এক চৌকষ ভাব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে করতে বের হলাম বাসা থেকে। সাথের কাগজপত্র ও টাকাপয়সা সখ করে রাস্তার চোর-বাটপারদের হাতে তুলে দেয়াটা বিবেচকের কাজ হবে না, তাই বাসে না গিয়ে রাস্তা থেকে এক ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া নিলাম। নিরাপত্তার পাশাপাশি ভাবেরও একটা ব্যপার আছে তো!
এয়ারপোর্টের ফাঁকা রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। চারপাশে মনোরম পরিবেশ। তার মাঝে আমি বিরক্তি চেপে গাড়ির পিছনের সিটে হেলান দিয়ে ঢুলুঢুলু চোখে একটু আরামের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু বেরসিক ড্রাইভারের যন্ত্রনায় তা ঠিকমতো করে উঠতে পারছি না। ড্রাইভার না হয়ে উকিল হলে এই ব্যক্তি জীবনে যথেষ্ট উন্নতি করতো। আমি গাড়িতে উঠার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে তার জেরা পর্ব। কোথায় থাকি, কোথায় পড়ালেখা করেছি, কতদূর পর্যন্ত পড়েছি, এখন কি করি, চাকরী কেন ছাড়লাম, ইনকাম কেমন, ভবিষ্যতের প্ল্যান কি, বাবা-মা কি করে, কয় ভাইবোন, কে কি করে, এখন কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি, সে কি আমার কোন আত্মীয় কিনা, কতোক্ষণ থাকবো সেখানে, সেখান থেকে আবারও বাসায় ফিরে যাবো কিনা, এইরকম হাজারো প্রশ্ন। (বিয়ের পাত্র হিসাবেও জীবনে আমাকে কখনও এমন বিশদ ইন্টারভিউ দিতে হয়নি।) প্রশ্নের এক পর্যায়ে তার সম্বোধন আপনি থেকে তুমি-তে নেমে গেলো অটোমেটিক। আমি নাকি তার ছোট ভাইয়ের মতোই। ততোক্ষণে আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে এই লোক নির্ঘাত কোন ছিনতাই পার্টির সদস্য। আমার নাড়িভুড়ির সব খবর নিয়ে কায়দামতো রাস্তার কোথাও সাঙ্গপাঙ্গ সহ আমার অবস্থা ফার্দারফাই করে দিবে। ভাগ্যিস ভর্তি ফি-এর টাকাটা ড্রাফটে নিয়েছি, হাত ফসকে সাফাই হয়ে গেলেও লস হবে না। তারপরেও যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম আমার যাত্রার উদ্দেশ্য গোপন রাখার। আর এভাবেই সারা রাস্তা জেরার পাশাপাশি ড্রাইভারের বংশ ও জীবনবৃত্তান্ত শুনতে শুনতে আমরা গন্তব্যে হাজির হলাম।
খিলগাঁও-এর কোন এক অলির ভিতর গলি, তার ভিতরের তস্যগলির এক কানা মাথায় ঠিকানার বাসাটি। এতদূর পর্যন্ত আমার তেলিসামাদসম চিকন শরীর নিয়ে কোনমতে ঢুকতে পারলেও গাড়িটিকে কোন ঠেলা-ধাক্কাতেও সেই কানাগলিতে ঢুকানো সম্ভব হবে বলে মনে হলো না। তাই গলির মুখেই একপাশে গাড়ি পার্ক করে ড্রাইভার বললো যে পাশের এই ৭ তলা বাড়ির মালিক তার পাতানো বোন। আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত সে এখানেই থাকবে। আমি ফিরে এলে যেন তার গাড়ির হর্ণ বাজাই। আমাকে নিয়েই সে আবার টঙ্গী ফিরে যাবে। সেইসব সোনালী দিনে ঢাকার ট্যাক্সিক্যাবচালকেরা মোটামুটি মিটারেই চলতো। তায় আবার ফিরে যাওয়ার সময় এই পান্ডববর্জিত গলিঘুপচিতে নতুন করে কোন ক্যাব খুঁজতে হবে না ভেবে আমি বেশ খুশিই হলাম। বললাম তাহলে এপর্যন্ত যতো ভাড়া হয়েছে তা দিয়ে যাই। তাতেও ক্যাব ড্রাইভার রাজি না। বলে যে একবারে ফিরে গিয়ে পুরোটা দিলেই চলবে, সে জানে যে আমি তার টাকা মেরে খাবো না। আমার প্রতি তার এহেন বিশ্বাসে আমি তখন বেশ মুগ্ধ। গলির এখানে সেখানে দুর্গন্ধময় আবর্জনার স্তুপ এবং দেয়ালের পলেস্তরা খসানো চেহারাও বেশ আর্টিস্টিক মনে হতে লাগলো। ব্রিফকেস হাতে আমি হাটা দিলাম লন্ডনী কলেজের আত্মীয়ের বাসায়। অল্প সময়েই কাজ সেরে ফুরফুরে মনে আবার ফিরেও এলাম। এসে দেখি গাড়ির দরজা লক করা, হর্ণ বাজানোর উপায় নেই। পাতানো বোনের বাড়ির কেচিগেটেও কয়েক মন ওজনের তালা ঝুলছে। তাছাড়া সেই বোনটি যে কোন তলার কোন ফ্ল্যাটে থাকে, তাও জানা নেই যে কলিংবেল বাজাবো। আশেপাশের দুর্গন্ধের মাঝে নাক কুঁচকে ভাবছি কি করা যায়। এমন সময় উপরতলার এক বারান্দায় ড্রাইভারের চেহারা উঁকি দিলো। আমাকে দেখেই সে খুশিতে বাকবাকুম। বললো উপরে এসে তার বোনের সাথে একটু দেখা করে যেতে। বেশিক্ষণ সময় লাগবে না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ড্রাইভার নিচে এসে গেট খুলে আমাকে নিয়ে আবার উপরে রওয়ানা হয়ে গেলো। বাড়িটি বাইরে থেকে দেখতে যেমনই হোক, মালিকের বাসার ভিতরে বেশ আয়েশী খানদানী ভাব। দামী দামী ফার্নিচার আর নানারকম ট্রফির ভিড়ে আমি বেশ নাদুসনুদুস সাইজের পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলাকে আপা হিসাবে আবিস্কার করে বেশ বিগলিত হয়ে গেলাম। আরও জানতে পারলাম যে ইনি শুধু আপাই নন, একইসাথে লেখক, কবি, আন্তর্জাতিক সাংবাদিক এবং আমাদের দেশের নারী আন্দোলনের এক বিশিষ্ট পথিকৃত। সাংবাদিকতার খাতিরে নানা দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ান। বিভিন্ন দেশের উঁচু উঁচু মহলে তার বেশ জানাশোনা। এমন একজন মহিয়সীর সাথে বছরে ক'বারই বা দেখা হয়? আমিও তাই শ্রদ্ধায় বেশ গদগদ হয়ে তার সাথে আলাপচারিতা চালিয়ে যেতে লাগলাম। কথাপ্রসঙ্গে মহিলা যখন জানতে চাইলেন যে এখানে কি উদ্দেশ্যে আসা হয়েছে, এবার আর এড়িয়ে গেলাম না। লন্ডনের ভর্তি কাহিনী খুলে বললাম। শুনে ড্রাইভার তো খুশিতে আটখানা! বললো যে তার মেয়েকেও নাকি লন্ডনে পাঠানোর প্রসেস চলছে। আর এই আপার কাছে নাকি আমার মতো অনেকেই আসে বিদেশে যাওয়ার ব্যপারে নানা রকম পরামর্শ নিতে। তো আমি যেহেতু ঘটনাক্রমে তাঁর কাছে চলেই এসেছি, আর কোন চিন্তা নেই। আপা ৫ মিনিট আমার ইন্টারভিউ নিলেই বুঝে ফেলবেন আমার ভিসা হবে কি হবে না। ড্রাইভারের কথায় আপাও বেশ উৎসাহী হয়ে আমাদের নিয়ে রওয়ানা হলেন তার স্টাডি রুমে। চারপাশের দেয়ালে নানারকম বইয়ে ঠাঁসা ছোট এক রুম, তার টেবিলের একপাশে গিয়ে তিনি বসে অপর পাশে আমাদের বসতে বললেন। বললেন যেন ধরে নেই তিনি আমার ভিসা অফিসার, এবং এটাকে সত্যিকারের ভিসা ইন্টারভিউ ধরে নিয়েই যেন তার প্রশ্নের উত্তর দেই। অতঃপর শুরু হলো ইংরেজীতে ভিসার ইন্টারভিউ পর্ব। আমি সারা জীবন বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র ছিলাম। তারপর ৫ বছর ভারতে ইংরেজী মিডিয়ামে পড়ালেখা করে এলেও ইংরেজীতে খুব একটা পাকতে পারিনি কখনোই। তাই ইন্টারভিউ-র শুরুতে বেশ সংকুচিতই ছিলাম বলা যায়। তবে নানা দেশ বেড়ানো আপার ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজী কথায় কিছুক্ষণের মধ্যেই সব সংকোচ ঝেড়ে ফেলে পূর্ণউদ্দমে ইন্টারভিউ-র উত্তর দিতে লাগলাম। সম্ভবতঃ আমার কথার তোড়েই কয়েক মিনিটে আপা পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গেলেন যে শুধু লন্ডন না, যেকোন দেশের ভিসার জন্য দাঁড়ালেই আমার ভিসা হয়ে যাবে। সেই আনন্দে তাঁর লেখা কয়েকটা বইও আমাকে গিফট করে ফেললেন তিনি।
ইন্টারভিউ-র মাঝখানে নতুন এক ছেলে প্রবেশ করেছিলো রুমে। বয়সে হয়তো আমার থেকে কয়েক বছরের বড় হবে। ধারণা করলাম এটা আপার ছেলে। কারণ আপার বয়স নিশ্চিন্তে আমার মায়ের থেকেও অনেক বেশি হবে। তো এই ছেলেও আমার ছোটখাট ইন্টারভিউ নিয়ে ফেললো। পাশাপাশি এই মহিলার নানা জায়গায় নানারকম সম্পত্তিরও হালকাপাতলা একটা ধারণা পেয়ে গেলাম নানা কথায়। এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর ফেরার সময় হলো। ড্রাইভার আমাকে একপাশে ডেকে নিয়ে একটু কাচুমাচু হয়ে বললো যে আপারাও যেতে চাচ্ছে টঙ্গীর ওদিকে। কোথায় নাকি কেনার জন্য জমি দেখবে। তো এদিকে সে আমাকে আগেই বলে ফেলেছে যে আমাকে নিয়ে ফিরবে। এখন আমি যদি কিছু না মনে না করি, তাহলে আপাদের আমার সাথে নেয়া যায় কিনা। এক বাসায় এসে এতটুকু আপ্যায়িত হওয়ার পর না বলার তো প্রশ্নই আসে না। তাই আমিও খুশিমনেই রাজি হয়ে গেলাম। আমি সামনের সিটে গিয়ে বসলাম, আর আপা ও তার ছেলে গাড়ির পিছনের সিটে।
চলতে চলতে নানারকম কথা হচ্ছিলো। আপা জানতে চাইলেন টঙ্গীর ঠিক কোথায় থাকি আমরা। আমি বললাম। শুনে ওনি আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলেন। আমাদের বাসা অনেক আগে একসময় পতিত জমি ছিলো। আর তার ঠিক সামনের বাড়িটাই নাকি ছিলো ওঁনার। সেখানেই থাকতেন তিনি। কিন্তু তাঁর স্বামী তাঁর সাথে প্রতারণা করে সেই বাড়ি বিক্রি করে দেয়। পুরানো দিনের কথা ভাবতে ভাবতে তিনি আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে লাগলেন। তাঁর দুঃখে আমিও বেশ কাতর হলাম। বললাম যাওয়ার পথে সময় থাকলে আমাদের বাসায় একটু বসে যেতে। তাহলে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটাকেও কাছে থেকে দেখার সুযোগ হবে। আপাও তাতে খুশিমনে রাজী হয়ে গেলেন। অতঃপর তিনি তাঁর জীবনের দুঃখের কথা বলতে লাগলেন। তার বড় বড় দুই মেয়ে আছে, দু'জনই বিদেশে সেটেলড। এর আগে বেশ কয়েকবার বিয়ে হলেও কারও সাথেই আপার সংসার বেশিদিন টিকেনি। তবে বর্তমান স্বামী নিয়ে তিনি এখন বেশ সুখেই আছেন। আর এতোক্ষণ যাকে আমি আপার ছেলে ভেবে আসছিলাম, তাকে তাঁর স্বামী হিসাবে জানতে পেরে আমি পুরো তব্দা মেরে গেলাম! একেবারেই স্পিকটি নট অবস্থা! কেউ তার ছেলের বয়সী কাউকে বিয়ে করলে করুক, তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের বাসায় নিয়ে গিয়ে বাবা-মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। আমরা অনেক স্বাধীনতা পেয়ে বড় হলেও আমাদের পরিবার যথেষ্ট রক্ষণশীল মনোভাবের। সেখানে তাদের নিয়ে কিভাবে উপস্থিত হবো তা ভাবতেই আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো!
যাকগে, যা হবার হবে! এখন আর পিছু ফেরার উপায় নেই। ঘটনা যাই ঘটুক সেটা আমাকে ফেস করতে হবে। কয়েক মিনিটেরই তো ব্যপার। এটা নিয়ে এতো ভেবে কোন লাভ নেই। এসব বলে একসময় নিজেকে ঠান্ডা করলাম। এবং এক সময় আপা, তার ছেলের বয়সী স্বামী, এবং ড্রাইভার মেহমান নিয়ে আমি আমাদের বাসায় উপস্থিত হলাম। গিয়ে দেখি বাসায় তখন এলাহী কান্ড চলছে। ঢাকা থেকে আমার চাচা-চাচী, চাচাতো ভাই-বোন ও তাদের পরিবারপরিজন সবাই আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। পুরো বাসা কলরবে মুখরিত। তো এতো মেহমানের মধ্যে আমিও আমার তিন মেহমান নিয়ে ড্রয়িং রুমে অধীষ্ট হলাম। এবং সবার সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দিলাম। আপার স্বামী নিজে থেকেই নিজেকে আপার স্বামী হিসাবে পরিচয় দিলেন। আমি নিজেও সারাক্ষণ চেহারায় সতেজ ভাব ধরে রাখার চেষ্টা করলাম, যেন এই সমাজে এরকম সম্পর্ক কোন ব্যপারই না। তবে পরিচয় পাওয়ার পর অন্যদের চেহারায় যে প্রতিক্রিয়া চাক্ষুষ করেছি, সেটাও সহজে ভুলবার না। অন্যকে লুকিয়ে একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি, এবং আমার দিকে তীর্যক দৃষ্টি নিক্ষেপ, সবই লক্ষ্য করেছি। অন্দরমহলেও অসম বিয়ে নিয়ে কানাঘুষা চলছে টের পেলাম। তবে একে অনাকাংক্ষিতও বলতে পারছি না। আমি এতেই খুশি যে সবার সাথে এই মেহমানদেরও সমানভাবেই আপ্যায়ণ করা হয়েছে। এবং আমার বিব্রতকর অবস্থাটি আরও বড় কোন বিব্রতকর অবস্থায় পরিণত হয়নি।
ফিরে যাওয়ার আগে ড্রাইভার আমার মায়ের বেশ বড় একজন ভক্ত হয়ে গেলো। ফোন নাম্বার দিয়ে বলে গেলো যেকোন দরকারে কখনও গাড়ি লাগলে যতো রাতই হোক না কেন তাকে ফোন দিলেই সে চলে আসবে। এবং এরপর বেশ কয়েক বছর ট্যাক্সির প্রয়োজন হলেই আমার মা তাকে ফোন দিতেন। ড্রাইভারের মেয়েও সত্যিই একদিন লন্ডন চলে গেলো। মেয়ের সাথে ইন্টারনেটে কথা বলার জন্য ড্রাইভার মাঝেমধ্যে আমাদের বাসায় আসতো। তবে সেদিনের পর আপার ব্যপারে আর কখনও কোন খবর রাখা হয়নি। ঘটনার পরদিন এলাকার এক বড় ভাই আমাকে পাকড়াও করেছিলো আপা কেন এখানে এসেছিলো তা জানতে চেয়ে। তার কাছ থেকেই জানতে পারলাম যে এই মহিলা সম্পত্তির জন্য একেকবার একজনকে বিয়ে করেছেন। টঙ্গীর বাড়িটিও এভাবেই পেয়েছিলেন। তার মেয়েরাও নাকি এলাকায় ফাজিল বলে বেশ স্বনামখ্যাত ছিলো।
বিঃ দ্রঃ - লেখাটি ইতিপূর্বে বকলমে প্রকাশিত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৬