somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেডিও ফূর্তি, ভূত এফ. এম. এবং আমার অভিজ্ঞতা...

২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেইলটা হঠাৎ করেই ভূত এফ. এম. এ করা। একদিন বিকেলে আর. জে. রাসেল ভাই আমাকে ফোন করে বলে যে, এ শুক্রবারের ভূত এফ. এম. এ আপনি গেস্ট হিসেবে নির্বাচিত। আপনার পাঠানো ঘটনাটা আমাদের ভালো লেগেছে। তো আপনি কি আমাদের স্টুডিওতে এসে আপনার ঘটনাটা শেয়ার করতে পারবেন। আমি সানন্দে বললাম, কেন নয়; অবশ্যই আমি যাব এবং লিসেনারদের কাছে আমার ঘটনাটা শেয়ার করব। সব কিছু ঠিকঠাক হবার পর রাসেল ভাই আমাকে তাদের লোকেশনটা বলে দিল; গুলশান-২, ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিঙের ৮ম তলা।

লোকেশনটা খুঁজে বের করতে আমার বিন্দুমাত্র কষ্ট হয় নি। গুলশান-২ এ নামলাম এবং ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিং সাথে সাথেই চোখে পরে গেল। রাত ৮টা ৩০; আমিই মনেহয় ভূত এফ. এম. এর গেস্ট হিসেবে খুব আগেই পৌছে গেছি। রাসেল ভাই আমাকে রাত সাড়ে দশটার একটু আগে আসতে বলেছিল। বিল্ডিঙের সমস্ত দোকানপাট কিংবা বড় বড় কর্পোরেট অফিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুধু মাত্র বীর দর্পে সমস্ত রুমে আলো জ্বলিয়ে সকল শ্রোতাদের মন যুগিয়ে যাচ্ছে রেডিও ফূর্তি।

লিফট বন্ধ তাই সিঁড়ি দিয়েই উপরে উঠতেছি। সুনসান নীরবতা আমরা দু’জন উপরের দিকে আস্তে আস্তে উঠছি। আমরা শুধু উপরেই উঠতে থাকি কিন্তু রেডিও ফূর্তির অফিস আর খুঁজে পাই না। মনে হচ্ছিল আমরা ২২ তলা বিল্ডিঙের ছাদে পৌছে গেছি। পাশেই কয়েকজন মামা একটা অফিসে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছিল; তাদের জিগাইলাম, মামা এইডা কয় তলা। তারা কইল এইডা ৭ম তলা। কি আর করার উপরের সিঁড়িতে উঠেই রেডিও ফূর্তির অফিস দেখে মন ভরে গেল। শুধুই কি তাই চোখও জুড়িয়ে গেল; অসাধারণ একটা অফিস দেখে (যদিও গ্লাসের ভিতর দিয়ে দেখছিলাম কারণ গেটে কেউ নেই এবং ভিতরে যাবারও পারমিশনও পাচ্ছিলাম না)। তারপর হঠাৎ করে দেখি আর. জে. সারজিনা আপু ফোনে কথা বলতে বলতে আমাদের দিকে আসতেছেন এবং উনি আমাদের দেখে গার্ড মামাকে ডেকে কাঁচের দরজা খুলে ভিতরে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করলেন। ভিতরে গিয়েই ওয়াশ রুম থেকে হাতমুখ ধুয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে রিসিপসনে বসলাম। পুরো অফিস রেডিও ফূর্তি টিউন করা; ফূর্তির সবাই যেন এখানে সব সময় ফূর্তিতেই থাকে। এবার মূল অফিসে ঢুকলাম। উফফফফফফ...এক কথায় অসাধারণ একটা অফিস। ছোট্ট একটা অফিস। ছিমছামভাবে সাজানো-গোছানো। হার্ড বোর্ড দিয়ে প্রত্যেকটি টেবিল বর্গাকৃতি করে ঘেরা, টেবিলে একটি করে ডেক্সটপ, ফুলের টব আর ফাইলপত্র।

রাত ৯টা ৩০...প্রচণ্ড ক্ষুধায় আমাদের পেটে ক্ষুধা বাহিনী ফুটবল খেলতেছিল তাই তাদের শান্ত করার জন্য আবার গ্রাউন্ড ফ্লোরে চলে আসি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটা দোকান থেকে কেক আর কলা কিনে খাই তারপর আবার ফূর্তি রুমে। তবে এবার এসে দেখি ভূত এফ. এম. এর সমস্ত গেস্ট অলরেডি চলে এসেছেন আর রাসেল ভাই তাদের কাছ থেকে গল্পগুলো শুনতেছেন। রাসেল ভাই অসাধারণ পার্সোনালিটি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি। তার কথা রেডিওতে যেরকম; বাস্তবেও একই রকম। ভূতের ঘটনা শোনার সময় তিনি অত্যন্ত গম্ভীর হয়ে ঘটনাগুলো শোনেন আর কেউ যদি তার সাথে কথা বলে তিনি তার কথা হাসি মুখে উত্তর দেন আর উপস্থিত কথাবলায় রাসেল ভাইয়ের উপরে আমি এখন পর্যন্ত কোন উপস্থাপককেই রাখতে পারি নি। এই হচ্ছে রাসেল ভাইয়ের বৈশিষ্ট্য। অফ এয়ারে সবার গল্প শেষে আমাদের রুমে মধ্যরাতের খাবার চলে আসে-নানরুটি, ভিতরে গ্রিল আর কোক। দ্বিতীয় দফায় আবারো খেলাম। আমার প্রিয় অফিসে এসে আমি না খেয়ে যাব তা কি করে হয়।

১১টা ৪৫ এ সারজিনা আপু তার লাইভ একটা স্টুডিও কনসার্ট শেষ করে ভূত এফ. এম. কে ফ্লোর দিয়ে চলে যায়। দুঃখের বিষয় সারজিনা আপুর সাথে একটা ছবি তুলতে পারি নি। এবার অপেক্ষার পালা ওয়ান এয়ার রুমে যাবার। শুরু হয় ভূত এফ. এম. আর আমরা সবাই তখন ওয়ান এয়ার রুমে। সাউন্ড প্রুফ রুম। রাসেল ভাইয়ের সামনে একটা ডেক্সটপ যেখানে প্রতিনিয়ত সব টেক্সট আসছে আর ফেসবুক আপডেট হচ্ছে; অন্যদিকে মাসুম ভাইয়ের হাতে পুরো কন্ট্রোলারটা। উনি একের পর এক ব্যাকগ্রউন্ড মিউজিক দিয়ে যাচ্ছেন। শুরু হল রাসেল ভাইয়ের কথা। একদম ন্যাচারাল এবং নরম্যাল ভাবে কথাবার্তা। আমি মনে করেছিলাম যে, রাসেল ভাই অনেক প্রিপারেশন নিয়ে, দেখে দেখে কথা বলেন কিন্তু আমার ধারণা ভূল। রাসেল ভাই অনর্গল স্ক্রিপ্ট ছাড়াই কথা বলে যাচ্ছে। আমরা একে একে আমাদের ঘটনা শেয়ার করলাম। রাসেল ভাই ঘণ্টা দু’ই প্রোগ্রাম চালানোর পর ইতি টানলেন। এরপর শুরু হয় ছবি তোলার পর্ব। রাসেল ভাই, বাবু ভাই, মাসুম ভাই এবং আমরা যারা যারা গেস্ট ছিলাম সবাই সবার সাথে ফটো খেলায় মেতে উঠলাম। তখন কেন জানি মনে হচ্ছিল আমরা সবাই রেডিও ফূর্তি পরিবারেরই সদস্য। রাত সাড়ে আটটা থেকে ভোর রাত ৩টা পর্যন্ত থাকার পর আমাদের পৌছে দেবার জন্য ভি. আই. পি. স্ট্যাইলে একটা পংক্ষীরাজ দেয়া হয়। তারপর আমরা সেই পংক্ষীরাজে করে যার যার গন্তব্যে.../

ধন্যবাদ রেডিও ফূর্তি / ধন্যবাদ ভূত এফ. এম. / ধন্যবাদ রাসেল ভাই এবং সকল রেডিও ফূর্তি পরিবারকে; আমাদের কয়েক মুহুর্ত দুঃখ, ব্যাথ্যা, কান্না থেকে ভূলিয়ে কয়েক ঘণ্টা আনন্দের ভরিয়ে রাখার জন্য।
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×