somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃত ভালোবাসার গল্প 'পরিণতি'!!!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ গল্পের কাহিনী শুরু করছি নীরব আর অর্নবকে দিয়ে। তবে গল্পের প্রয়োজনে আমরা তাদের ছদ্ননাম ব্যবহার করবো।
ছোটবেলা থেকেই নীরব এবং অর্নব অনেক ভালো বন্ধু। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সব সময় একে অপরের পাশে দাড়িয়েছে তারা। নীরব আর অর্নবের বন্ধুত্ব দেখলেই মনেহয় প্রকৃত বন্ধুত্ব্ব হয়তো এটাকেই বলে।
সময়ের ঘনঘটায় নীবর এখন জেলখানায়।
কিভাবে, কেন এবং কি কারনে জেলখানায় আনা হলো তাকে তার ব্যাখ্যাই নীরবের ব্রেষ্ট ফ্রেন্ড অর্নব তার ব্যক্তিগত ডায়েরীতে তুলে ধরেছে। আমি আপনাদের সামনে সেই ডায়েরীখানাই সহজ ভাষায় উপস্থাপনের চেষ্টা করছি মাত্র।

""নীরব যখন ১০ম শ্রেণীর ছাত্র, তখন তার জীবনে প্রথম একটা মেয়েকে ভালোবাসে সে।তাই সে বেশী দেরী না করে সরাসরিই মেয়েটাকে বলে দেয় তার ভালোবাসার কথা। মেয়েটা প্রথমে রাজি না হলেও পরে ঠিকই তার কথায় রাজি হয়ে
যায়।
তারপর কে দেখে নীরবের খুশি, এত খুশি ওকে আমি আগে কখনো হতে দেখি নি। কিন্তু কেই বা জানে এ খুশি
মাত্র দুদিনের ক্ষনস্থায়ী।কারন মেয়েটা দুদিন পরই নীরবকে না বলে দিল।আর এর কারণও ছিল নীরব নিজেই....
কারন নীরব মোটেই ভালো ছেলে ছিলনা। পড়া-লেখা তো করতোই না বরং সারাদিন ঘুরত, ফিরতো
আর খেত। শুধু তাই না,,,নেশায়ও আসক্ত হয়ে পড়েছিল নীরব।

আর এদিকে মেয়েটি ছিল প্রচুর ভালো student,আর দেখতেও ছিল অপরূপা।এছাড়াও তাদের পারিবারিক দিকও মোটামুটি ভালোই ছিল।তার মানে দাড়ালো মেয়েটা সব দিক দিয়েই perfect।
তবে সে কেনোইবা নীরবের মতো এত খারাপ একটা ছেলেকে
ভালোবাসবে??
আসলে মেয়েটা হয়তো তার ভুল বুঝতে পেরেই নীরবকে না বলে দিয়েছিল।
সাধারণত গল্পটা এখানেই শেষ হওয়ার কথা।আর এখানে শেষ হলেই হয়তো ভালোও হতো।
কিন্তু এ গল্পের কাহিনী এখানে শেষ না..........

কারন মেয়টা মাত্র ২৯ দিন পরই নীরবের সাথে আবার
কথা বলে.. মেয়েটা আবার এসে নীরবকে আশার আলো দেখায়, ওকে ভালো হওয়ার জন্য বলে....
নীরবের position থেকে আসলেই ভালো হওয়ার ব্যাপারটা এতটা সহজ ছিলনা।কারন ও তো মাদকাসক্ত ছিল।
কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই নীরব সকলের চোখ ধাঁদানোর মতো কান্ড করলো। কারন নীরব সকল কিছু বাদ দিয়ে লেখাপড়ায় পুরোপুরি ভাবে মনোনিবেশ করলো।
স্কুলের শিক্ষরাও অবাক হয়েছিলো নীরবের এ কান্ড দেখে। আসলেই নীরব প্রকৃত পক্ষেই ভালোবেসে ফেলেছিল
মেয়েটিকে। আর এটাও বুঝতে পেরেছিল ওর নিজের অবস্থার পরিবর্তন না করলে এই মেয়েকে পাওয়া কোনদিনই
ওর পক্ষে সম্ভব নয়।
কিন্তু হয়তো এটা বুঝতে ওর একটু বেশীই সময় লেগে গিয়েছিল। কারনটা এই যে, নীরবের S.S.C পরিক্ষার বাকি ছিল মাত্র ৪ মাস।
যে ছেলেটা পুরো Class 9 এবং class 10 এর এতো মাস পর্যন্ত বইই হাতে তুলে দেখেনি, সে মাত্র এই ৪ মাসে কি করতে পারবে???
এদিকে মেয়েটা বারবারই নীরবকে একটা কথাই বলতো,"তুমি যদি S.S.C তে Golden A+ না পাও, তবে আমাকে চীরকালের মত তোমাকে ভুলে যেতে হবে"।

যে নীরবের পক্ষে পাশ করাটাই ছিল অনেক কঠিন ব্যাপার। সে কি করে আনবে Golden S.S.C তে???
এই প্রশ্নটাই ছিলো আমাদের সকল বন্ধুদের মাঝে। তবে নীরবের চিন্তা ছিল সম্পূর্ন অন্য রকম।ও ভাবতো ও ঐ মেয়েটার জন্য সব করতে পারে।
আসলে নীরব এতটা ভালোবাসতো মেয়েটাকে যে, কখনোই ঐ মেয়েটাকে হারাতে চায়নি ওর জীবন থেকে।
তাই নীরব লাগাতার পরিশ্রম করতে লাগলো। আমরা দেখিছি নীরবের এমনও রাত যেত যে রাতে ১সেকেন্ডের জন্যও
ও ঘুমায়নি। পুরোটা রাত পড়ার মধ্যে কাঁটিয়েছে।

দেখতে.....দেখতে....
S.S.C পরিক্ষাও চলে আসলো নীরবের।সব পরিক্ষা ভালোই দিচ্ছিল ও।কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস....!!
পদার্থ বিজ্ঞান পরিক্ষার দিনে নীরব মাত্র ১৭টি নৈব্যত্তিক মেশাতেই
স্যাররা তার খাতা নিয়ে নিল।
আসলে এতে নীরবের কোন দোষই ছিলনা।হলের সমস্ত স্টুডেন্টদের সাথেই এমন ঘটনা ঘটেছিল। স্যাররা টাইম নিয়ে নিজেদের মধ্যেই সমস্যায় পাকিয়ে ফেলরছিল। আর তার ফল দিতে হলো সমস্ত স্টুডেন্টদের।

তবে এখন প্রশ্ন হলো,,
নীরব কি এখানেই হেরে গেল???
-হ্যা।
কারন নীরব S.S.c তে golden তো দূরের কথা; A+ও পায়নি।
নীরবের GPAছিল মাত্র 4.94।
এই গল্পের কাহিনী এখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা না হয়ে মেয়েটা ছেলেটাকে বলে,
"টেনশন নিচ্ছ কেন এবার হয়নি তো কি হয়েছে H.S.Cতে নিচ্শই Golden পাবে"।
সেদিন নীরব মেয়েটির এই কথা শুনে অনেক কেঁদেছিল এবং মেয়েটিকে কথা দিয়েছিল, ও নিশ্চই এবার গোল্ডন পেয়ে দেখাবে।

কিন্তু এই দুটি সম্পর্কে হয়তো ঈশ্বর নিজেই রাজি ছিলেন না, কারন নীরবের বাবা নীরবকে
কলেজে না ভর্তি করিয়ে ভর্তি করলেন ডিপ্লোমা লাইনে।এখানে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে নীরব প্রথমে না মত করেছিল কিন্তু ওর বাবা ওকে সম্পর্ক ভঙ্গের হুমকি দিয়ে এখানে ভর্তি করাতে বাধ্য করে।
আসলে ওর বাবার যেই বিশ্বাসটা অনেক আগেই হারিয়েছিল নীরব, সেটা হয়তো এতোটা পরিবর্তনের ফলেও আর ফিরাতে পারেনি। ওর বাবা হয়তো ভেবেছিল, ছেলে যদি খারাপ রেজাল্ট করে তবে কোথায় চান্স পাবে??

মেয়টাকে এখানে ভর্তি হবার পর জানিয়েছিল নীরব। মেয়েটারও এই বিষয়ে কম অভিঙ্গতা থাকার ফলে কিছুই বলে নি।
তবে মানুষের সময়ের সাথে সাথে অভিঙ্গতাও বাড়ে।
তাই আজ শুরুর সময়ের থেকে প্রায় ২ বছর পর অভিঙ্গতা বেড়েছে নীরবের আর মেয়েটারও।
আজ তারা ফিরে গিয়েছে সেই আগের দুনিয়ায় সেখানে নীরব জানে তার এই অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া ও এই মেয়েকে জীবন সঙ্গী বানাতে পারবে না।
তবে কি হবে শেষ পর্যন্ত???
তারা কি এক হতে পারবে, না কি এই স্বার্থপর পৃথিবীব কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে যাবে????
নাকি আবার নীরব পরিণত হবে আগের সেই ভয়ঙ্কর নীরবে????

উপরের এই প্রশ্নগুলো ছিল আজ থেকে ১ বছর আগের। এখন নিশ্চই সবার মনে প্রশ্ন জাঁগছে, এখন তবে কি অবস্থায় আছে তারা?
তাদের ভালোবাসা কি সফল হয়েছে নাকি হেরে গেছে নীরব এই স্বার্থপর পৃথিবীে কাছে?
-হ্যা হরে গেছে নীরব এই স্বার্থপর পৃথিবীর কাছে। তার ভালোবাসার কোন মূল্যই দেয়নি এই স্বার্থপর পৃথিবী। পদে পদে আজ লান্ঞ্চনা,ঘৃর্ণা, অপমান সহ্য করতে হয়েছে তাকে। তার অবস্থান আজ জেলখানায়। অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন জাঁগছে তার মানে কি নীরব আগের সেই ভয়ঙ্কর নীরবে পরিণত হয়ে গেছে??
কেন তাকে আজ জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হলো তাকে???
-না। এখন পর্যন্ত নীরব ভয়ঙ্কর নীরবে পরিণত হয়নি। এখন পর্যন্ত নীরব সেই নীরবই আছে, যে কিনা নিজের হাতে একটা সিগারেট পর্যন্ত ধরেনা। তবে কেন আনা হলো তাকে কারাগারে, তার বর্ণনাই নিচে তুলে ধরলাম।

ডিপ্লোমা লাইন মানে নীরবের বাবা নীরবকে ভর্তি করায় ম্যাটসে অর্থাৎ ডিপ্লোমা চিকিৎসক লাইনে। সেখানেও ভালোই পড়ালেখা করছিল ও। ১ম বর্ষের ফাইলান পরিক্ষায় পুড়ো ইনিষ্টিটিউটের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সে। সত্যিই এখনকার নীরব আর আগের নীরবের মধ্যে রাত-দিন পার্থক্য।
বর্তমান নীরবের স্বপ্ন হচ্ছে, এই ম্যাটস পাশ করার পর পরই সে আবার চিকিৎসা শাস্ত্রে এমবিবিএস করবে। তারপর আসবে সেই কাঙ্খিত স্বপ্ন মেয়েটাকে তার জীবন সঙ্গী বানানো। সবকিছু তাকে করতেই হবে মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য ।ম্যাটসে ভর্তি হবার প্রথমে প্রথমে তার কাছে ব্যাপারগুলো কঠিন মনেহলেও এখন আর মনেহয়না। সে তার স্বপ্ন পূরণের পথে দৃহ প্রতিজ্ঞো ।এটাই যে তার নিয়তি ছিল তা সে মেনে নিয়েছে।

এটিকে মেয়েটা সবে এই ২০১৫ সালে এসএসসি পরিক্ষায় গোল্ডেন প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে সে ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এই গোল্ডেন পাওয়াতেই হয়তো তার মধ্যে অহংকারবোধের জন্ম নিয়েছে। মেয়েটি সেটা মুখে না বললেও তার কাজকর্মে সেটা প্রকাশ পায়। এছাড়া স্কুল জীবন পার করে কলেজে নতুন ওঠাতে হয়তো নিজেকে অনেক বড় বড় ভাবতে শুরু করেছে মেয়েটা। গ্রাম্র ভাষায় এটাকে বলে, উড়ির নতুন পাঁখা গজানো। সত্যিই মনেহয় মেয়েটার পাঁখা গজিয়েছে, না হলে সে এমন করবে কেন।

এই কিছুদিন আগে একটা ছেলের প্রপোজ পায় মেয়েটা। এর আগেও বহুবার এমন প্রপোজ পেয়েছে সে। কিন্তু বরাবরই তাদের সেই প্রপোজে রাজি না হয়ে নীরবের সাথে রিলেশনের কথা জানিয়ে এসেছে মেয়েটা। এবারও তার ব্যাতিক্রম করেনি। তবে ছেলেটা চলে চলে যাবার বেলায় নিজেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় মেয়েটা। আর ছেলেটাও তাতে রাজি হয়ে যায়।
এতো বড় একটা কান্ড করলো মেয়েটা বিন্তু নীরবকে একবার জানানোর মতো প্রয়োজন বোধ করলোনা সে। সত্যিিই উড়ির পাঁখা গজানো হয়তো এটাকেই বলে। এলাকার স্থানীয় এক ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে এ সম্পর্কে তথ্য পায় নীরব। কিন্তু কথাটা সে বিশ্বাস করেনি। কারন নীরব মেয়েটাকে প্রচন্ড বিশ্বাস করতো আর ভাবতো যাই হোক না কেন, মেয়েটা সব সময় তাকে সবকিছু জানাবে। আর তার এই বিশ্বাসকে কখনোই নষ্ট করবেনা সে। নীরবের ধারনা ভুল ছিল। মেয়েরা যে ক্ষণে ক্ষণে তাদের রূপ পাল্টাতে পারে এই ব্যাপারটা হয়তো নীরবের জানা ছিলনা। নীরব মোটেই বিশ্বাস করতে রাজি নয় যে, তার 'সন্ধ্যা' এমন করতে পারে। তাই কথাটা সে আমলেই নিলনা এবং এ বিষয় সম্পর্কে একটা কথাও বললনা সন্ধ্যাকে। সত্যিই ভালোবাসায় উন্মাদ ছেলেটা, এতটা বিশ্বাস কাউকে করা কখনোই উচিত নয়। তারপরেও কে বুঝাবে কাকে, সন্ধ্যার বিপক্ষে কথা নীরবকে বোঝানোর সাধ্য কারও নাই।
একই তথ্য আবার দুদিন পর পেল নীরব আমাদের ব্যাচেরই ফাহাদে কাছ থেকে। ফাহাদ সরাসরি বলেই ফেললো নীরবকে, আমার সামনে সন্ধ্যা এই মুহূর্তে ছেলেটার সাথে কথা বলছে, এখন বিশ্বাস করা না করা তো ব্যাপার। নীরবের মাঝে এ কথা শোনার পর একটা সন্দহের জটলা তৈরী হয়েছে ঠিকই তবে কথাগুলো সে এখনো সম্পূর্ণ বিশ্বাস করছেনা। সন্দেহটা কাটানোর জন্য নীরব ফোন করে সন্ধ্যার এক বান্ধবীর কাছে এবং তাকে জিঙ্গাসা করে, সন্ধ্যা এখন কই?
সে কোন উত্তর না দিয়ে বলে, ভাইয়্যা কিছুক্ষণ পর আপনাকে আমি ফোন করছি।
কিছুক্ষণ পর তার বান্ধুবীর ফোন না এসে সরাসরি সন্ধ্যার ফোন আসে।সন্ধ্যা নীরবকে জিঙ্গাসা করে, আমার নামে তুমি কি শুনেছ বলো??
নীরব থমকে দাড়ায়! এমন করে বলছে কেন সন্ধ্যা। তারমানে কি তার শোনা সমস্ত কথাগুলো সত্য!!!
নীরব কোন উত্তর না দিয়ে মুত্তির মতো চুপ করে আছে।পরক্ষণেই সন্ধ্যা আবার বলে উঠলো, ছেলেটা আমার ফ্রেন্ড হয়। নীরবরব গম্ভির গলায় বললো কেমন ফ্রেন্ড??
সন্ধ্যা তারপর কোন উপায় না দেখে সব কথাগুলো খুলে বললো নীরবকে। নীরব সন্ধ্যার মুখের সবগুলো কথা শুনে রীতিমত আবাক।
এতদিন কেন জানাওনি এই ফ্রেন্ডশীপের কথা? এর কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করিয়ে নীরব শুধু একটা প্রশ্নই করলো, একটা ছেলে এসে তোমায় প্রপোজ করেছে আবার তার থাকে ফ্রেন্ডশিপ করতে হবে কেন??
এছাড়া এই ফ্রেন্ডশিপ কন্টেনিও কররে ভবিষ্যৎে আরও কি কি হবে এবং হতে পারে তা নিয়ে কিছু নেতিবাচক ভবিষ্যৎবাণী করলো নীরব। সন্ধ্যা এই কথাগুলোয় রেগে গিয়ে ফোন কাঁটলো। সেদিন এটুকুই কথা হয়েছিল নীরব আর সন্ধ্যার মাঝে এর বেশী আর কিছুনয়।
সন্ধ্যার উপর রাগ করে নীরব দুদিন কথা বললোনা তার সাথে কিন্তু দুদিন পর ফেসবুকে সে একটা আবাক করা জিনিস দেখলো। নীরব দেখলো, সেই ছেলেটা সন্ধ্যার নাম এবং তার নাম একত্রে জুড়িয়ে একটা ফেসবুক আইডি খুলেছে। নীরব আর নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারলোনা। ছেলেটাকে সরাসরি ফোন করে জোড় গলায় বললো এই তোমার সন্ধ্যাকে ফ্রেন্ড ভাবা??
ছেলেটা যে কখনোই ফ্রেন্ড ভাবেনি সন্ধ্যাকে তা সে তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে নীরবকে বুঝিয়ে দিল। নীরব এখন আশ্চার্য অবস্থায় বোকার মতো হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে। একটা কথাও মনেহয় তার মুখ থেকে আর বের হচ্ছেনা। ছেলেটা হ্যালো হ্যালো করতে করতে অবশেষে ফোন কেঁটে দিল। ছেলেটার ফোন কাঁটার পর নীরব কিছুটা স্বাভাবিক হলো। এবং অনুধাবন করলো, তৎক্ষণাত সন্ধ্যাকেড় বিষয়গুলো জানানো দরকার।
নীরব ফোন করলো সন্ধ্যাকে কিন্তু সে ফোনই উঠালোনা। কয়েকবার ট্রাই করার পর হতাশ হয়ে নীরব সন্ধ্যার এক বান্ধুবীকে পুরো বিষয়টা জানালো এবং তা বললো, সন্ধ্যার সাথে দেখা হতেই যাতে তাকে বিষয়টা জানায়।
তারপর এদিকে, নীরব আবার ফোন করে ছেলেটাকে এবং বলে, তোমার সাথে আমার সামনাসামনি কিছু কথা আছে । আর সেজন্যই আমি আগামীকাল ঢাকা থেকে বাড়িতে আসছি; তাই তুমি কাল আমার সাথে এসএম এর মধ্যে দেখা করবে। ছেলেটাও সেই কথামতো রাজি হয়ে যায়।
কিন্তু বিকালবেলা ছেলেটার মুখ থেকে অন্য রকম কথা ভেসে আছে। সে নীরবকে এমন ভাবে বলছিল তাতে বোঝা যাচ্ছিল নীরব কোন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী আর সে নীরকে ভিষন ভয় পায়। তার কথায় আরও মনেহচ্ছিল নীরব ছেলেটাকে সামনে পেলেই মনেহয় খুন করে ফেলবে। (আপনারা নিশ্চই কলকাতার 'আমি শুধু চেয়েছি তোমায়' ছবিটা দেখেছেন। সেখেনে যেভাবে 'শুভস্রীর' সামনে 'অঙ্কুশকে' খারাপ বানানোর জন্য ছেলেটা শুভস্রীকে একের পর পর মিথ্যা বলে যায় এখানেও তেমনটাই ঘটছিল।)
আসলে বাস্তবতায় ঐ ছেলেটার সামনে সেই সময়টায় স্বয়ং সন্ধ্যাই দাড়িয়ে ছিল আর সন্ধ্যার সামনে নীরবকে খারাপ বানানোর জন্যই ছেলেটার এতসব নাটকের আয়জন। সন্ধ্যাও ছেলেটার এই নাটকের আয়োজনে মুগ্ধ হয়ে নীরবের প্রতি তার যত ভালোবাসা ছিল তা ত্যাগ করে, ঘৃর্ণার প্রকাশ করে বলেছে, এতদিন আমি তোমাকে ভুল চিনেছি ; আজ আমি তোমাকে চিনলাম এবং তেমার বাস্তব রূপটাও দেখলাম। আসলে তুমি কখনো আমার জন্য পরিবর্তনই হওনি, সব আমার ভুল ধারনা ছিল। আজকের পর থেকে আমার লাইফ নিয়ে কোন ইন্টারফেয়ার করবানা তুমি। আজ থেকে তোমার-আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ !! আরো বলেছে, আমি ১০টা ছেলের সাথে রিলেশন করবো তাতে তোমার কি। আজ থেকে আমাদের রিলেশন এখানেই ব্রেকাপ করলাম।
নীরব শুধু কথাগুলো শুনে গিয়েছে প্রতিত্তরে একটা জবাবও দেয়নি। তিন দিনের একটা ছেলের চক্রান্তে তার তিন বছরের ভালোবাসার মানুষকে ভুল বুঝেছে ; এখানে কিই বা বলার আছে তার। তবে ফোনটা কাটার শেষ মুহূর্তে নীরব মেয়েটাকে শুধু একটা কথাই বলেছে,
" তুমি ঠিক একদিন বুঝতে পারবা নীরবের ভালোবাসা কতটা পবিত্র ছিল, আর অনুতপ্তের আগুনে সেদিন শুধু জ্বলবে। তবে সেদিন বুঝে কোন লাভ হবেনা। কারন আজকের পর থেকে এই নীরব কোনদিন তোমার দিকে ঘুরেও তাকাবেনা। মনেরেখ, আল্লাহ উপর থেকে সব কিছু দেখছে আর তিনি সবকিছুর বিচার একদিন করবে। "'

নীরব কথাগুলো শেষকরে বাচ্চা ছেলের মতো কাাঁদছিল। তাকে বুঝানোর মতো ভাষা আমাদের জানা ছিলনা। তারপরেও আমরা বলছিলাম,
'দোস্ত যে যেতে চায় তাকে যেতে দে। কে জানে, এর থেকেও হয়তো ভাল কোন মেয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করছে। এটাই তোর নিয়তি ছিল, এটা তুই মেনে নে।তুই যা হবি তার জন্য এটা প্রয়োজন ছিল। হতাশ হবিনা স্হির লক্ষে এগিয়ে চল। মেয়েটাকেই দেখিয়ে দে, তুই জীবনে কি হতে পারিস কিংবা না পারিস"।

নীরবের ঢাকার বন্ধু ইমরান বলছিল,
" মেয়েটি তোর ভালবাসা পাওয়ার যোগ্যই ছিলনা। এত ভালোবাসা পেতে কপাল লাগে ; সেই কপাল ওর ছিলনা। আমি নিশ্চিত মেয়েটা একদিন তোর ভালোবাসা বুঝবে এবং অনুতপ্তের আগুনে শুধু চোখের পানি ফেলবে। আর কাঁদা তো উচিত ওর, যে তোর মতো একটা প্রকৃত ভালোবাসার মানুষকে সে হারালো। তুই কাঁদছিস কেন বোকা?"
এছাড়া আরও অনেকেই সেদিন নীরবকে দিকনির্দেশনা মূলক পরামর্শ দিয়েছিল। নীরব সেদিন কতটা বুঝেছিল তা আমরা জানিনা তবে আমারা সকলেই সেদিন তাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি।
এরঠিক দুদিন পর নীরব ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছিল,
" আজ থেকে অতীতের সকল দড়জা বন্ধ ককরে দিলাম। আজ থেকে শুধু আজকের জন্য বাঁচা শুরু করলাম। এখন থেকে যা করবো শুধু আজকের জন্যই করবো। যেহেতু আমার জীবন আমাকেই গড়কে হবে সেহেতু আজ থেকে শুরু হলো এক নতুন পথ চলা। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। "
নীরব যে এক নতুন জীবনের সন্ধান করছে তার প্রমাণ হচ্ছে, এই স্টাটাসটি। তারপরেও কেন জানি একটা কিন্তু থেকেই যায়। কারন নীরবকে তো আমি চিনি, সে এতো সহজে সন্ধ্যাকে ভোলার পাত্র নয়।
এতো ভালোবাসতো ছেলেটা ওকে যে, প্রতিরাতে শোবার আগে একবার ছবি না দেখলে ঘুম আসতোনা ওর। আমি জানতাম, এই রাতেও হয়তো নীরব সন্ধ্যার ছবি দেখবে আর নোনা জলে প্লাবিত করবে দু'চোখ। তারপরেও তার এই পোষ্টটা আমাদের মাঝে একটা নতুন আশার সন্ঞ্চার করেছে। আশা করছি ছেলেটা খুব তাড়াতাড়িই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে।

এর ঠিক দু'দিন পর নীরব ঢাকা থেকে বাড়ী চলে আসে। আমাদের বলছিল, ভোটার তালিকায় নিজের নাম হালনাহাত করার জন্য নাকি ও বাড়িতে আসছে। কেউ বুঝুক আর না বুঝুক আমি নিশ্চিত বুঝেছিলাম, সন্ধ্যাকে দেখার জন্যই নীরব বাড়ীতে আসছে। আসলে ভোটার হবার কথাটা তো ওর বাহানা।
এদিকে নীরব বাড়ীতে আসার শুনে। নীরব এসে নাকি ছেলেটাকে মারবে, সেই ভয়ে সন্ধ্যা নাকি দু'দিন হলো খাওয়া-দাওয়া করেনা। নীরব কথাটা শোনে ঐ ছেলেটার মুখ থেকে। অবাক হয়ে য়ায় নীরব!! কি করছে সন্ধ্যা এসব। দুদিনের একটা ছেলের জন্য খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে??
এরপর যাই হোক, নীরব বুঝতে পারে এখানে থেকে ওর কোন লাভ। তার সন্ধ্যা আর সেই আগের সন্ধ্যা নেই। যে সন্ধ্যা নীরবকে ছাড়া কিছুই বুঝতোনা, সেই সন্ধ্যা' আর নেই। তার আজ অনেকগুণ বেশী পরিবর্তন হয়েছে।
নীরবের চোখের সামনের এ দৃশ্য দেখে তার ২ বছর আগের একটা ঘটনা মনেপড়ে যাচ্ছে। নীরবের সেবার ভিষন অসুখ হয়েছিল; তিনদিন কোমায় ছিল সে। আর এই তিনদিন সন্ধ্যা নামাজের পড়ে সারাক্ষণ দোয়া করেছিল তার জন্য; আর নীরবের মুখে অনেবার শুনেছি, এই তিনদিনে সন্ধ্যা নাকি পানি ছাড়া কিছুই মুখে দেয়নি।
সত্যি আবাক লাগে! এত তাড়াতাড়িই কি করে মানুষ এতটা পরিবর্তন হতে পার? কি করে???


পরদিন সকালে নীরব ছেলেটাকে ফোন করে বলে, সে যাতে সন্ধ্যাকে নিয়ে তার সাথে দেখা করে। এবং তাকে সে কোন কিছুই করবেনা সেই প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই কথামতো বিকাল ৩ টায় এসএস- এর পিছনের গলিতে সন্ধ্যাকে সঙ্গে নিয়ে তার সাথে দেখা করে ছেলেটা।
নীরবের চোখে কালো চশমা। কেন কালো চশমা পড়েছে সেটা কেউ না জানলেও আমি জানি। কারন কথা বলার সময় নীরবের চোখের পানি লুকানোর জন্য এর থেকে ভালো কিছু হয়তো আর ছিলনা। আমি নীরবের সঙ্গেই ছিলাম। মেয়েটার দিকে একবার তাকিয়ে দেখলাম, তাকে অনেক বেশী নির্জীব, ভীত এবং যন্ত্রনায় কাতর মনেহচ্ছে। নীরব ছেলেটাকে মারবে সেই ভয়েই হয়তো তার এ অবস্থা। নীরব কথা শুরু করলো। কি বলেছিল সেদিন তা হুবাহু নিচে তুলে ধরলাম...
.
""আমি জানিনা এই তিন বছরে তুমি আমায় কি চিনেছ। এই নীরব কোন দিন তোমার কোন ক্ষতি করবে সেটা তুমি ভাবলে কি করে। তুমি জানো তো, এই নীরব তোমার সুখের জন্য সব করতে পারে। আজ তুমি ভেবেছ, এই ছেলেকে তুমি তোমার জীবনে পেলে সুখী হবে। তবে আজ তোমার সেই সুখ আমি কি করে নষ্ট করি বলো। জানো তো, ভালোবাসা মাঝেমাঝে ত্যাগের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। তাই আজ ত্যাগ করলাম তোমাকে। তোমার সুখের জন্যই এটা আমাকে করতে হলো।
আর একটা সত্যি কথা বলছি, এই ছেলেটাকে মারার কথা আমি একটি বারও ভাবিনি। এটা তোমার ভুল কল্পনা ছিল।
যদি কোন ভুল করে থাকি এই তিন বছরে তবে আমায় ক্ষমা করিও।
আর সবসময় ভালো থাকিও, সুখে থাকিও। তোমার লাইফের প্রতিটা মুহূর্ত হোক আনন্দময়,সুখময়। বিদায়!!!""

আমি নীরবের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। কি করে বলতে পারলো সে কথাগুলো। সন্ধ্যা কতটা অন্ধ যে তার এত ভালোবাসকেও বুঝতে পারছেনা। নীরব যখন কথাগুলো বলছিল তখন সন্ধ্যার চোখের কোণায় বিন্দুমাত্র জল জমতে দেখেছিলাম কিন্তু সেটা কি কারনে তা আজও বুঝে উঠতে পারিনি।
ওরা চলে যাবার পর নীরব আর আমি এসএমের মধ্যে যেয়ে বসি। এতকিছুর পরও নীরব তার মুখের হাসিহাসি ভাবটা আমার সামনে বজায় রাখার চেষ্টা করছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ভালো থাকার অভিনয় করে চলছে সে ; চোখে পানি জ্বলজ্বল করছে তারপরেও কাঁদছেনা। আমার মনেহচ্ছিল, এই আমি যদি ওর সামনে না থাকতাম তবে গলা ছেগে দিয়ে ইচ্ছামতো কাঁদতো ও। সত্যিই প্রচন্ড খারাপ লাগছে আজ ওকে দেখে।
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর নীরব তার পকেট থেকে ফোনটা বের করে আমায় বলে,
সন্ধ্যা সবসময় আমায় একটা কথাই বলতো, নীরব তোমার জন্যই আজ আমি আমার পরিবারের বিশ্বাসটা হারিয়েছি, তুমি যদি আমার জীবনে না আসতা তবে কখনোই এমন হতোনা।
আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, তবে তুই এখন কি করতে চাচ্ছিস??
নীরব আমার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়েই ফোন দিল সন্ধ্যার মাকে। সন্ধ্যার নামে কেন জানি শুধু ভালো ভালো কথা বলছিল ওর আম্মুকে। কিছুক্ষণ কথাগুলো শোনার পর বুঝলাম, নীরব সন্ধ্যার সম্পর্কে তার বাবা-মার আগের হারানো বিশ্বাসকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। এবং সে যথারীতি একটা মিথ্যা কথাও বলে বসলো তাদের। ও বলছিল, আমি বর্তমানে অন্য একটা মেয়ের সাথে রিলেশন করছি তাই বাড়ীতে কোন কিছু হতে না হতেই আমার নামটা যাতে তার সামনে আর না উল্লেখ করা হয়।
ফোনটা কাঁটার পর নীরব বলছিল, এখন আমি ঋণমুক্ত। অবশেষে হয়তো তার বাবা-মার বিশ্বাসটা আবার ফেরাতে পারলাম। এই বিশ্বাস ফেরানোটাই যে ছিল নীরবের সবথেকে বড় ভুল , সেটা সে তখন না বুঝলেও পরে ঠিকই বোঝে। কারন এরপর সন্ধ্যা তার বাবা-মার এই বিশ্বাসের গালাত ইস্তেমাল করতে থাকে। ঐ ছেলেটার সাথে এদিক ওদিন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় ও। কি একটা মেয়ে ছিল আর এ কয়দিনে কি হয়ে গেল।

নীরব তখনও বাড়িতেই ছিল। আমি বললাম ওকে, তুই ঢাকা চলে যা আর এই অভিনয়টা বন্ধ কর। আমি জানি, চোখের সামনে তুই এসব সহ্য করতে পারছিসনা। নিজের চেহারাটা কি একবার আয়নায় দেখেছিস; এই কয়দিনে কি অবস্থা হয়েছে তোর??
নীরবের চোখগুলো হর্তের মধ্যে ঢুকে গেছে। চোখের নিচে কালো সানি পড়েছে; চেহারার উজ্বলতা নষ্ট হয়ে গেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সে কয়েকদিন হলো মনেহয় ঠিকমতো ঘুমায়না; সারাটা রাত হয়তো নিদ্রাহীন কাঁটায় ছেলেটা।
এছাড়া তার ব্যবহারও কেনজানি খারাপ হয়ে উঠেছে কয়েকদিন হলো; হঠাৎই রেগে যাচ্ছে।
এই নীরবকে আগের সেই ভয়ঙ্কর নীরবের মতোই মনেহচ্ছে মাঝেমাঝে।

পরদিন সকালে নীরব একটা চিঠি লিখে এনে আমাদের শুনায়। সন্ধ্যাকে উদ্দেশ্য করে চিঠিটা লেখা ছিল। নীরব তাতে রির্চাজ করে এই কয়দিনে ঐ ছেলেটার সম্পর্কে যে তথ্যগুলো পেয়েছিল তাই লিখেছিল। সত্যি বলছি একটা তথ্যও ভুল লেখেনি ও। আমরাও জানতাম, ছেলেটা লেখাপড়ায় ততটা ভালো ছিলনা, প্রেম করতো বেশ কয়েকটা। এছাড়া ফেনসিডিল ও সিগারেটও খেত নিয়মিত।
কিন্তু একটা কথা বুঝছিলাম না, নীরব কেন এখনো ঐ মেয়েটাকে নিয়েই ভাবছে। যেখানে তার কোন মূল্যায়ন নেই তার ভালোটা নিয়ে ভেবে তার কি লাভ?
নীরব আবার আমার এই প্রশ্নটারই উত্তর পত্রের একেবারে শেষের দু'লাইনে উল্লেখ করেছে। সে সেখানে সন্ধ্যাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছে,
"উপরের কথাগুলো তুমি কিভাবে নিবে আমি জানিনা তবে আমার সহ্যের সীমা একেবারে অতিক্রম হয়ে গিয়েছে তাই আর কথাগুলো না বলে থাকতে পারলামনা। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম একটা ভালো ছেলের হাতেই তোমাকে তুলে দিচ্ছি। এখন তুমি সুখে থাকবে; তোমার ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে। কিন্তু পরক্ষণেই যখন এ কথাগুলো জেনেছি তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারছিনা। আমি তোমার সুখের জন্য তোমায় ছেড়েছি কিন্তু যখন দেখছি ঐ ছেলের সঙ্গে থাকলে সেই সুখই তোমার জীবনে আসবেনা তখন আমার এই ত্যাগের কি মূল্য থাকে বলো?
আমি জানিনা তুমি আমার কথাগুলো বিশ্বাস করবে কিনা করবেনা।তবে শেষে একটা কথাই বলবো, প্লিজ নিজের জীবনটা নষ্ট করিওনা। সামনে আরও অনেক সময় পড়ে আছে। আর এখন তোমার পড়ালেখার সময়; রিলেশনের নয়।একটা ভালো জায়গায় চান্স পাও তারপর নিজেকে রিলেশনের মাঝে জড়াইও প্লিজ""।
কত বোকা একখানা ছেলে আমার বন্ধু নীরব, একবার ভেবেছেন?
ভালোবাসায় উন্মাদ একটা ছেলে। একে কি করে কে বুঝাবে যে, সন্ধ্যা এখন তাকে আর সহ্য করতে পারেনা। সে আর তার কোন কথাই শুনতে রাজি নয়।
আমার নীরবের প্রতি প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল তার এই মাত্রাতিরিক্ত ভালো মানুষী দেখে।
ভালো মানুষের পৃথিবীতে কোন দাম নাইরে ভাই ; তুই কি প্রমাণ করতে চাচ্ছিস এই ভালো মানুষী দেখিয়ে?
নীরবকে আরও বুঝানোর চেষ্টা করলাম, সন্ধ্যা এখন যা করতে চাচ্ছে তাকে করতে দে। সময় তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিবে সে কতবড় ভুল করেছে। আর যখন সেটা বুঝবে তখনই তো তার ভীতরে অনুতপ্তের আগুনটা জ্বলবে। আর এখনি যদি তুই ওকে সাবধান করে দিস তবে তার ভিতর সেই অনুতপ্তবোধটা আসবে কি করে। আর সন্ধ্যা যা করেছে তার শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে। প্লিজ ভাই, তুই সন্ধ্যার ব্যাপারে ভালো কিংবা মন্দ একটা কথাও ভাবিসনা। দেখ, সময়ই কি বলে। প্লিজ দোস্ত একটু বোঝার চেষ্টা কর ; প্লিজ চিঠিটা ছিড়ে ফেল।
চিঠিটা ও ছেড়েনি তবে আমায় কথা দিয়েছিল, সন্ধ্যাকে ও আর চিঠিটা দেবেনা কিংবা দেওয়ার চেষ্টাও করবেনা।

পরদিন সকলে আমি, নীরব এবং আরেকজন ফ্রেন্ড মিলে সরকারী কলেজে যাই বর্ণমালা সিমের রেজিস্ট্রেশন করতে। সেখানে গিয়ে দেখি, ঐ ছেলেটা এবং সন্ধ্যা একটা রুমের মধ্যে পাশাপাশি বসে গল্প করছিল। নীরবের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, সে ওদিকে একবার দেখেই যথা সম্ভব না তাকানোর চেষ্টা কররছিল। আমি বুঝছিলাম, ওর বুকটা হয়তো জ্বলেপুড়ে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছিল। তারপরেও ও শান্তই ছিল। একদল ছোটভাই এসে নীরবকে বললো, ভাই এটা কি দেখছি; আপনিই কিছু করবেন নাকি আমরাই কিছু করবো। কিছু একটা তো বলেন; আমাদেরও তো খারাপ লাগে...
নীরব শান্ত গলায় উত্তর দিল, তোমরা এতদিন যাকে 'ভাবী' বলে চিনে এসেছো। সে এখন থেকে আর তোমাদের 'ভাবী' নয় ; তাই সে যা করে করুক, তা তোমাদের দেখার দরকার নেই।

কিছুক্ষণ পর হঠাাৎই কেনজানি সন্ধ্যা বলে ডেকে উঠলো নীরব। হয়তো তার আর সহ্য হচ্ছেনা, তাই সন্ধ্যাকে ডেকেছে, কিছু একটা বলার জন্য। কিন্তু সে কি কথা বলবে? আমি গতকাল তাকে যেভাবে বুঝিয়েছি তাতে তো তার এই মেয়ের সঙ্গে আর কোন কথা থাকার, কথা নয়।
দেখলাম একেএকে দুবার ডাকলো তাকে। কিন্তু সে কোন সাড়াই দিলনা। তিনবারের বেলায় সন্ধ্যা উচ্চ আওয়াজে বলে উঠলো, তোর সাথে আমার রিলেশন নেই আর কোন কথাও নেই!!
নীবর ফেলফেল তাকিয়ে আছে সন্ধ্যার দিকে, না চাওয়া শর্তেও চোখ দিয়ে ক্রমাগত অশ্রু ঝড়ছে ওর। কিন্তু এসবের কোন কিছুই সন্ধ্যার হৃদয় পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারছেনা। মনেহচ্ছে নীবর যেন রূপকথার কোন ভয়ংকর ডায়নীর সামনে দাড়িয়ে আছে আর সে ডায়েনীর নেই মায়া, নেই মমতা,নেই কোন বিবেক, আছে শুধু ক্রোধ ; আর সেই ক্রোধেরর আগুনে নীরবকে শেষ করে ফেলবে। সন্ধ্যা প্রচন্ড অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে নীরবকে। সন্ধ্যার মুখের এ অকথ্য ভাষা শুনে নীরবের অনেক কথার প্রতিই আজ কেনজানি সন্দেহ জাগছে আমার, নীরব মাঝেমাঝেই সন্ধ্যার এত প্রশংসা করে ফেলতো আমাদের সামনে, যে মাঝে মাঝে হিংসাই হতো। এই কি তার প্রশংসার পরিচয়!
নীরব মাঝেমাঝে বলতো, আমার সন্ধ্যা পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে ভালো মেয়ে যে কিনা আমায় এতো ভালবাসে, সত্যিই ও একটা পাগলী।
এটাই কি তার ব্যক্ত করা সেই ভালোবাসার পরিচয়!!
কি দোষ করেছে আমার বন্ধু, যে তাকে খোলা ময়দানে এভাবে এতগুলো মানুষের সামনে অপমান, অপদস্থ করা হচ্ছে । একটা মেয়েকে জান-প্রাণ সবকিছু দিয়ে ভালোবাসাই কি তার দোষ? নিজের চিন্তা না করে এই মেয়ের ভালো চেয়েছে; এটাই কি তার দোষ??

সন্ধ্যা ক্রমাগত নীরবের সম্পর্কে যা নয় তাই বলে চলছিল। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা কথা কথা বাড়াতে বাড়াতে সরাসরি নীরবের বাবা-মাকে তুলে গ্যালি দেয়। ওকে 'কু....বাচ্চা' বলে।
একবার কি ভেবেছেন, যে মাকে যে বাবাকে এই দুদিন আগেও বাবা বলে ডাকতো, তাদের আজ এভাবে গ্যালি দিতে পারলো ও । শুনেছি সময় মানুষকে পরিবর্তন করায়, কিন্তু তাই বলে এতটা পরিবর্তন। নীবর হয়তো আর ধৈর্য ধারন করতে পারেনি তার সকল ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছে সন্ধ্যার এ কথাতে। অবশেষে নীবর রাগে ক্ষোপে সন্ধ্যার গালে একটা ধাপ্পর মারে। সাথে সাথেই স্তম্ভিত হয়ে যায় চারদিক, একটা দম বন্ধ করা হাওয়া বইতে থাকে আশেপাশে। সন্ধ্যা কাঁদতে কাঁদতে মাথা নিচু করে চলে যায় তার সামন থেকে। সন্ধ্যা চলে যাবার পর নীবরকে কল্ট্রোলে রাখা আমাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিলনা। সে শুধুই লাগাতার কেঁদে চলছিল আর বলছিল, যাকে আমি পৃথিবীতে সবথেকে বেশী ভালোবেসেছি তার গাঁয়ে আজ আমি হাত তুলেছি; যে ছিল আমার পথের প্রদীপ তার গাঁয়ে আজ আমি হাত তুলেছি; যে আমার জীবনটাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে দিল তার গাঁয়ে আজ আমি হাত তুলেছি। নিজেকে কি করে ক্ষমা করি বল তো? আমি পারছিনা নিজেকে ক্ষমা করতে, আমি পারছিনা। আমি অপরাধী! আমার শাস্তি হওয়া দরকার। ক্রমাগত এই একই কথাগুলো বলে চলছিল নীরব। তাকে বুঝানোর মতো সব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমরা। কারন সে এখন নিজের মন ব্যতিত কারও কথা শুনতে রাজি নয়।
সেদিন রাতেই নীরব সুসাইড করার চেষ্টা করে। ভাগ্য ভালো যে, সেটা আগে থেকে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম তাই হয়তো তাকে আটকানো সেদিন সম্ভব হয়েছিল।
পরদিন সকালে নীরব এক বড় ভাইয়ের মুখ থেকে শোনে, তার নামে নাকি সন্ধ্যা স্বয়ং তার মায়ের সঙ্গে গিয়ে থানায় মামলা করে এসেছে নীবরের নামে। নীরব এ কথাটা শোনার পর নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেনা। কারন নীরবের ভাবনায় ছিল, স্বয়ং সন্ধ্যাই আমার শাস্তি চাচ্ছে তবে আমি তাকে বাঁধা দিবো কেন, সবসময় তো ওর সব চাওয়া পূরণ করে এসেছি তবে এ চাওয়াটাও অবশ্যই পূরণ করবো ; অবশ্যই আমার শাস্তি হবেই হবে।

এরপর আমার ভালোবাসায় উন্মাদ, অন্ধ বন্ধু ফোন করে সন্ধ্যার মাকে এবং বলে, 'আমি আপনার মেয়েকে গতকাল মেরে যে অপরাধ করেছি তাতে নিজেই আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিনা আর আপনারা কি করে ক্ষমা করবেন আমায়। ঠিকই হয়েছে আমি তো অপরাধী, আমার শাস্তি তো হওয়াই দরকার। আর আমি শুনেছি আপনি আমার নামের পাশাপাশি আমারর বন্ধুদের নামও জড়িয়েছেন। তাদের নামেও মামলা করেছেন থানায়। আমি বলতে চাই, আমার বন্ধুরা তো কোন দোষ করেনি যা দোষ করার আমি করেছি তাই যা শাস্তি দেওয়ার আমায় দিন, আমি আপনাদের সকল শাস্তি মাথা পেতে নিবো।'
ওর মা উত্তরে বলে, তবে তুমি আমার বাসায় এসো। তোমার সাথে যা কথা হবার সেখানেই হবে ; তোমার সাথে ফোনে অনেক কথা বলেছি কিন্তু আর বলতে চাচ্ছিনা। তুমি যদি আমার বাসায় এসে কথা বলো তবেই শুনবো না হলে কোনটাই শুনবোনা।
নীবর একটু মুচকি হেঁসে জবাব দেয়, আমি জানি আপনার বাসায় যাওয়ার পর আপনি আমায় পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিবেন, এটা আপনার একটা পাতানো ফাঁদ, কিন্তু তারপেরও আমি যাবো। কারন আমি তো আমার শাস্তিই চাচ্ছি। আমি সত্যি বলছি আমি নিজেকেই নিজে ক্ষমা করতে পারছিনা। "

এরপর নীরব সামনে-পিছনের কোন কিছুই না ভেবে সরাসরি চলে যায় সন্ধ্যার বাসায়। সন্ধ্যা মা তাকে বসতে দেয় একটি ঘরের ভীতরে।এবং নীরবের সামনে কিছু চা-নাস্তা এলিয়ে দিয়ে বলে, তোমার ভিতরে যে অনুতপ্তবোধটা জেগেছে তাতে আমি অনেক খুশি হয়েছি সচার-আচার সবার মাঝে এমন অনুতপ্তবোধটা জাঁগেনা। এজন্য ধন্যবাদ তোমাকে। নীরবের চোখে অশ্রু চলে আসে তার মায়ের এ কথা শুনে; নীবর আবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার মায়ের দিকে। নীরব ভাবছে, পৃথিবীতে সব মা রাই হয়তো এমনই হয়; আসলে মায়ের জাত বলে তো কথা ।

সন্ধ্যার মায়ের এমন সুলভ ব্যবহারের পিছে যে একটা কুৎসিত উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে তা নীরব জানতোনা। নীবর তো কিছুক্ষণেরর জন্য মনেহয় ভুলেই গিয়েছিল সে যে কোন অপরাধ করেছে। কিন্তু সেটা বেশীক্ষণ ভুলে থাকতে হলোনা তাকে, কারন কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশের আগমন ঘটলো বাড়ীর ভিতরে। নীরবকে যে বাস্তব জীবনেই এতটা নাটক চোখের সামনেই দেখতে হবে তা হয়তো সে কোনদিন কল্পনাতে ভাবেনি। নীরব ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো সন্ধ্যার মায়ের দিকে। সন্ধ্যার মা তাকে তাচ্ছিল্যের ছলে জিজ্ঞাসা করলো, ' মন খারাপ করলা বাবা??'
নীবর উত্তরে কিছুই বলেনি। শুধুই আবাক হয়ে দেখছিল, মানুষের রূপ আসলে কত ধরনের হতে পারে।

নীরব এখন জেলখানায়। তার বিরুদ্ধে চর মারার অভিযোগ না এনে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে মিথ্যা মামলা থানায় দায়ের করা হয়েছে। যে ছেলেটা একটা মেয়েকে জীবনের সবকিছু দিয়ে ভালোবেসে গেল। তাকেই আবার সে মেয়েরই ধর্ষক বানানো হলো। আর মেয়েটাও মিথ্যা স্টেটমেন্ট দিয়ে দিল আদালতে, সে উল্লেখ করলো নীরবের সাথে নাকি তার আগে থেকেই কোন রকম সম্পর্কই ছিলনা। নীরব নাকি তিন বছর থেকে তাকে শুধু ডিস্টার্বই করে এসেছে।
একটা ছেলের ক্যারিয়ার, লাইফ সবকিছুই শেষ করে দেওয়া হলো নিমেষের মধ্যেই। প্রকৃত ভালোবাসার যথাযথ প্রতিদানই পেল সে।
এ কাহিনীর মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণিত হলো, পৃথিবীতে ভালো মানুষের কোন মূল্য নেই; ভালো মানুষ হতে গেলে তাকে লান্চনার শিকার হতেই হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×