somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধ------

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়টা আমার ১৯/২০ বয়স। তেমন ভাবে ঘটনাটা তখন বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতা ছিলনা । কারণ জন্মসুত্রে বাংলাদেশের বাঙ্গালী হলেও ৬৪সন থেকে আমি পশ্চিমবঙ্গবাসী একজন ভারতীয় নাগরিক। অবশ্য আমার মতো শেকড় ছেঁড়া এপারের বাঙ্গালীরা তখন অনেক রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। এসব বিষয় আমার একটি স্মৃতিকথা ধরণের ধারাবাহিক 'আঁতুড় ঘর/ফিরে দেখা আঁতুড়ঘর' রচনার মধ্যে আছে । যা বিগত কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে । ফলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে পুনর্বার কোনো স্মৃতি উদ্ধারে না গিয়ে আমি আমার এইবয়সের অনুভূতির কথাটা বলি । কারণ আমি কিছু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ব্লগরচনার দ্বারা প্রাণিত এবং প্ররোচিত ।

রাজনৈতিক ঝটিকাকেন্দ্র থেকে অনেকদূর এক অজ গ্রাম থেকে যখন আমরা চলে আসি তখন এটা আমাদের বয়স্কদেরও অন্ততঃ কারো মনে হয়নি যে দেশটা অচিরেই স্বাধীনতার জন্য প্রাণপাত করা লড়াই লড়বে। তৎকালীন দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা, যেমন অন্ততঃ ৭ দিনের বাসি খবরের কাগজের খবর সম্বল করে চলা একটা সমাজ, তার কাছ থেকে একটা দেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঠিক অভিমুখ যাচাই করা প্রায় অসম্ভব ছিলো। এর একটা বড় উদাহরণ এটাই যে যখন ৫২'র ভাষা আন্দোলনে ঢাকা উত্তপ্ত তখন পাশাপাশি গ্রাম বাংলায় হিন্দু বাঙালী উৎখাতের ধারা অব্যাহত ছিলো । আন্দোলনজাত কোনো মহৎ আবেগ সেখানে কাজ করেনি।

আজ স্বীকার করি আর না করি এটা ঘটনা যে শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতীয় অঞ্চলটা দেশ ভাগের পর থেকেই নানা ভাবেই আত্মীয়তার দায় মিটিয়ে চলছিলো। তা মুক্তিযুদ্ধের সময় চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছিলো। এই অঞ্চল গুলো হলো ত্রিপুরা আসাম মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ। বিগত সময়ের উৎখাত হওয়া ছিন্নমূল হিন্দু বাঙালীদের অধিকাংশ এই সব অঞ্চলেই আশ্রিত ছিলো। একে ছিন্নমূল তার উপর বিপর্যস্ত মাতৃভূমির মানুষদের জীবন রক্ষার জন্য তাদের অকৃপণ সাহায্যের হাতের কথা আজও হয়তো কৃতজ্ঞ বাঙালী মনে রেখেছে। তবে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার ফসল মুক্তিযুদ্ধজাত স্বাধীনতা রক্ষার লড়াই আজও ইতিহাসের নিয়মেই যেন লড়তে হচ্ছে। তবে যে জিনিষটা গোচরে অগোচরে মুক্তিযুদ্ধজাত পবিত্র ভূমিতে আজ মহীরুহ হয়ে উঠেছে তা সেই পুরোনো দেশ ভাগের প্রশ্নটা--অর্থাৎ ধর্ম। এখন আর ভাগাভাগির প্রশ্ন নেই, এখন প্রশ্ন দেশটা কতখানি ধর্মসম্মত । মৌলবাদীদের ধারণা এখানে যথেষ্ট পরিমানে ধর্মের কল নেই । এরা মুক্তিযুদ্দ্দ্ধ কিংবা স্বাধীনতা নিয়েও পরিহাস করে । এরা অক্লান্ত প্রচেষ্টায় একটা সাধারণ মতামত তৈরী করে দিতে পেরেছে যে সুখের ঘর পাকিস্তান ভেঙে ভারতই আসলে বাংলাদেশটা তৈরী করেছে তার পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থে। আর সেটা করেছে ইসলামবিদ্বেষের কারণে। ফলে দেশজুড়ে ভারতবিরোধীতার একটা সক্রিয় পরিসর সবসময়ই থাকে। আর এই বিরোধীতার সুতো ধরে এপারের বাঙালীদেরও রেহাই দেয়া হয়না।
অস্বীকারের উপায় নেই উপমহাদেশের রাজনীতিতে কেউ ত্রুটিমুক্ত নয় একে অন্যের সাপেক্ষে । আর এই বিশাল বিষয়টিকে কোনো সংকীর্ণ পরিসরে রেখে বিচার করার মধ্যেই এক ধরণের মৌলবাদী প্রবণতা কাজ করে। উদার গনতান্ত্রিক মনকে সংকুচিত করে । ভারতবিরোধীতার অনেক সঙ্গত কারণ থাকা সত্ত্বেও বিষয়টাকে ক্ষমতা দখলের অস্ত্র হিসেবে মূলত ব্যবহার করা হয়। সর্বোপরি ইসলাম সাপেক্ষে একটা অবস্থান। দিন দিন যেন ধর্মের প্রতি মানুষের আস্থা আকর্ষণ বাড়ছে। যদি বাড়ে ভালো কথা। যার বাড়ছে তার । কিন্তু জিনিষটা ঠিক এইরকম সরল কখনই নয়। এখানে ধর্ম দিয়ে দখল করা, ধর্ম দিয়ে সিংহাসন মোড়া, ধর্ম দিয়ে রাষ্ট্রকে মোড়া, ধর্ম দিয়ে সবকিছুকে মুড়ে দেয়ার একটা প্রবণতা-----এসবই থাকে এর পেছনে । থাকেনা শুধু গনতান্ত্রিক কোনো মূল্যবোধ।
যেমন ধর্মীয় কারণে তসলিমা নাসরিনসহ আরো কেউ কেউ দীর্ঘদিন দেশ ছাড়া । সাম্প্রতিককালে সেই ধর্মীয় কারণেই মকবুল ফিদা হোসেনও দেশ ছাড়া । এই যে ক্ষমতা,দেশছাড়া করার ক্ষমতা যাদের হাতে আজ তারা এই উপমহাদেশের রাজনীতির ব্যর্থতার ভেতর থেকেই তা সংগ্রহ করেছে। তার একটি নগ্ন উদাহরণ এই পশ্চিমবঙ্গেই সম্প্রতি দেখা গেছে।কিছু ধর্মবীর গুন্ডাদের আবদার মেনে তসলিমাকে রাতের অন্ধকারে গোপনে বিমানে করে জয়পুর পাঠিয়ে দিলেন এক বামপন্থী সরকারের মুখ্যমন্ত্রী। কারণ গুন্ডারা কলকাতাকে অচল করার জন্য যাখুশি তাই করছিলো। ওনার পুলিশ তা দাঁড়িয়ে থেকে দেখছিলো । অতঃপর উনি এবং ওনার পারিষদরা ভীষণ স্বস্তি পেলেন এবং বলাবলি করতে লাগলেন যে লেখিকা যা লিখছেন তা ঠিক নয়। এই বঙ্গীয় বামপন্থীদের নিয়ে বলতে গেলে অন্যবারে বলা যাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২৬
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×