আমাদের জাতির অন্যতম প্রধান সমস্যার একটি হচ্ছে যেকোন ইসুতে পারস্পরিক সন্দেহ,অনৈক্য এবং বিভাজনের বহি:প্রকাশ ।জাতীয় প্রগতির পথে এটি বরাবর সমস্যা ।আমাদের খুঁজতে হবে এত বিভাজিত জনগোস্ঠী কোথা থেকে আসছে ।হঠাত্ করেই এটি তৈরি হয় না ।মূলত বিভাজিত শিক্ষা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে এ বৈষম্য তৈরি হয় ।আমাদের শুধু প্রাথমিক শিক্ষাই প্রায় এগারো ধরনের চালু আছে।আমরা আমাদের শিশুদের মনকেই যদি এগারোভাবে বিভাজিত করি তবে কিভাবে একটা ঐক্যপূর্ণ জাতি আশা করি?একে অপরকে আলাদা করার মন্ত্র নিষ্পাপ শিশুদের মনে প্রবেশ করানো হয় ।এক শিশু আরেক শিশুকে দেখে কাওকে টুপি পরে মাদ্রাসায় যেতে,ময়লা শার্ট প্যান্ট পরে সরকারি বিদ্যালয়ে যেতে আবার কাওকে টাই পরে গাড়িতে করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে যেতে ।শিশুর সরল মনে নিজেকে আলাদা করার বিষবাষ্প প্রবেশ করে ।আর এরপর পড়াশোনা শেষে কি হয় তা সহজেই দেখতে পাই ।ইংরেজি মাধ্যমের তরুণরা সবার থেকে আলাদা মনে করে এবং তার প্রজন্মের বাকিদের ধর্তব্যের মধ্যে আনে না ।তবে সবচেয়ে সন্দেহপ্রবণতা তৈরি হয় স্কুল আর মাদ্রাসার মধ্যে ।মাদ্রাসার ছাত্ররা স্কুলের শিক্ষাকে বাজে শিক্ষা হিসেবে দেখে এবং তাদের দ্বারা অপমানিত হয়ে এ ক্ষোভ আরো পুন্জিভূত হয় ।আর স্কুলের ছাত্ররা মাদ্রাসার ছাত্রদের মেধাহীন জঙ্গী ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না ।এর ভয়াবহ ফলাফল আমরা গত কিছুদিন আগেও দেখেছি দুপক্ষের নানা মন্তব্যে।আমাদের এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে শিক্ষাব্যাবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে ।সময় এসেছে বিভাজিত এ পদ্ধতি পরিবর্তনের ।স্কুল এবং মাদরাসা দুটোর অর্থই বিদ্যালয় ।কাজ শিক্ষা দেয়া।কি শিক্ষা দিবে সেটাই বিশ্লেষণের বিষয় ।শিক্ষা যদি হয় একটি বৃক্ষ তবে বিজ্ঞান শিক্ষা যেমন একটি ডাল তেমনি ধর্মশিক্ষা আরেকটি ডাল ।তবে কেন মাদ্রাসা আলাদা ধারা হবে ?মাদ্রাসার শিক্ষাকে পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করে আমরা স্কুলের সাথে একত্র করতে পারি।প্রয়োজনে ধর্মশিক্ষাকে আরো ব্যাপক করতে পারি ।সাংঘর্ষিক কিছু হলে আলোচনা,ঐচ্ছিক বা অনৈচ্ছিক ইত্যাদি বিষয় উন্মুক্ত রাখতে পারি ।এতে একজন ছাত্র যেমন ধর্মশিক্ষা লাভ করবে তেমনি বিজ্ঞান শিক্ষা লাভ করবে।তারা শুধু মুয়াজ্জিন বা ইমাম হওয়ার কাজে শুধু আটকা থাকবে না ।আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের নিয়োজিত করবে ।যোগ্যতায় সমান হওয়ায় এবং সব ধর্মের মানুষের সাথে শিক্ষাগ্রহণের ফলে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িকতা তৈরির সুযোগ থাকবে না ।বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে জঙ্গি তৈরির সুযোগ কমে যাবে ।ধর্মশিক্ষার ক্ষেত্রেও পেডাগজির সূত্রগুলো ব্যাবহারের সুযোগ তৈরি হবে এবং পরিবেশ সৃষ্ট হবে।পারলৌকিক আর ইহলৌকিক শিক্ষার মেলবন্ধন তৈরি হবে ।এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ যে জীবনের দুটো অংশের গুরুত্ব একসাথে উপলব্ধি করা ।সে অনুযায়ী উভয়ক্ষেত্রের যোগ্যতা তৈরি করার প্রয়াস সৃষ্টি করতে হবে ।এভাবে আমরা একইভাবে সব বিষয় নিয়ে ভাবতে পারে এমন জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করতে পারবো ।জাতীয় উন্নতিতে অবদান রাখবে এমন অবিভাজিত তরুণ প্রজন্ম পাবো ।এই গোড়ায় গলদ সমাধান না করতে পারলে এই বিভাজনের সমস্যা সমাধান হবে না ।শিক্ষা জাতির মস্তিষ্ক।সেই মস্তিষ্ককে টুকরা টুকরা করে আলাদা করে রাখলে কিভাবে আমরা ভালো কিছু আশা করতে পারি?
আলোচিত ব্লগ
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন