somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিধান লঙ্ঘিত হৈছে: এবার শমসেরের কি হপে!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গোলপুকুরের মোড়ে এসে উল্টো দিকে ঝেড়ে দৌড়ানোর জন্য ভেতর থেকে ব্যপক তাড়া অনুভব করলেও শমসের এর পদযুগল তাতে সায় দিচ্ছিলনা। একজন সাক্ষাত যমদূত হৈলেও কথা ছিল - অঙ্কের নিয়ামত স্যারের সাথে আরবীর ইউসুফ করিম তারওপর আবার এক্সট্রা উপদ্রব ভুগোলের তোফাজ্জেল স্যার - তিন তিন জন যমদূত আলী হোসেনের চালার নিচে মজমা বসাইছে। আর তখনই কিনা শমসের এরকম দাঙ্গাবিক্ষুদ্ধ স্থানে পথ চলছে। শমসের এর আর কি দোষ - রোজ কেয়ামত যে শুক্কুর বারেই সংগঠিত হবে এমনটি তো কিতাবেই লেখা আছে। কিতাবে যেহেতু লেখাই আছে তখন তা অলঙ্ঘনীয়, তাকে মোকবিলা করাই শ্রেয় মনে করে অগ্রসর হতে থাকে শমসের।
যমদূতত্রয়ের একেবারে থাবার সামনে এসে শমসেরের নিউরণ কন্ঠযন্ত্রকে ’স্লামালিকুম’ শব্দ উৎপন্ন করার জন্য বার্তা পাঠায়। কিন্তু অতিরিক্ত টেনশনের ফেলে কন্ঠযন্ত্র যে শব্দ নির্গত করলো সেটা যে নানা চ্যুতি, বিচ্যুতিজনিত সমস্যায় কি উৎপন্ন কলো তা নিয়ে আলোচনা আর না ই বা করলাম। তবে শব্দ যে একটা বের হৈছে সেটা হলফ করে বলা যায়। নইলে ইউসুফ হুজুর এইভাবে সরু চোখ করে তার সর্বাঙ্গ জরিপ করতনা। নিয়ামত স্যারও বালককে একবার হা করে দ্রুত বেগে ধেয়ে যেতে দেখেছেন কিন্তু তার ট্রেডমার্ক হঙ্কার ছাড়েননি। আসলে সমাজ, সংস্কুতি, রাজনীতি, আচার ব্যবহার.... কোথাও যে কেউ বিধি বিধান কিংবা সংবিধান মেনে চলছেনা সেটা নিয়ে তারা সঞ্চালক ছাড়াই লোকাল টক শো’তে ব্যস্ত ছিল। তাই বালকের আচরণ বিধিসম্মত ছিল কিন তা নিয়ে ভাবা জরুরি মনে করেনি। বটে, বিধি তার সংবিধান লঙ্ঘন এত সহজে মানবে কেন? তোফাজ্জল স্যার আলোচনায় যুত করতে না পেরে সঞ্চালক হিসেবেই আবির্ভুত হলেন।
’বিধি মানা না মানা নিয়েতো খুব সরেস আলোচনা করছেন। বলি এই যে বালকটি সালাম দিয়ে চলে গেল তাকে কি প্রতিত্তোর দিয়েছেন? নাকি আপনার শুধু বিধি তৈরি করবেন আর বাকীরা তা পালন করবে’ - ফোড়ন দিয়ে ওঠেন তোফাজ্জেল স্যার।
বিষয়টি আসলেই গুরুতর লঙ্ঘন।
’ওহে ছোকড়া, এদিকে আসো দেখি’ - সাধু ভাষায় দশটনি হাক ছাড়ে নিয়ামত স্যার। হাক শুনে বুক ধড়াস করে ওঠে শমসেরের। বিপদ কেটে গেছে ভেবে পাগলা পীরের মাজারে দু’টাকার মানত মাত্রই ক্যানসেল করে দিসিল। তখনই আবার বিপদ রিটার্নস। কম্পিত পদযুগলে ধড়ধড় বক্ষে ত্রিমুর্তির সামানে দাড়ায় শমসের।

‘অলায়কুম আস্সালাম, যা’- ইউসুফ হুজুরের বিলম্বিত প্রতিত্তোরের রহস্য বুঝতে পারেনা শমসের, দাড়িয়েই থাকে।
’ দাড়িয়ে আছিস কেন, যা ভাগ’ - নিয়ামত স্যারের দশটনি হুঙ্কারে আচমক দৌড় লাগায় শমসের। মুরুব্বীদের সামনে দৌড়ের বিধান নাই মনে হতেই রাশ টেনে ধরে হাটতে শুর করে। যতটা জোড়ে হাটলে বিপদসীমার বাইরে যেতে পারবে ঠিক তত জোড়ে হাটতে পারেনা শমসের। ভয় পেলে ছোট কাজ চাগার দিয়ে ওঠে।

তোফাজ্জেল স্যার আবার ফ্লোর দখল করেন। ’এই যে বিলম্বিত উত্তর দিলেন, এটাওতো বিধিসম্মত হলনা। সালামের উত্তর সাথে সাথে না দিলেতো বাসী হয়ে যায়’ - কেমন সাইজ করা গেছে!!! ভেবে মিটি মিটি হাসতে থাকেন তোফাজ্জেল স্যার।
"ঠিক ঠিক।"
’ওহে ছোকড়া, এদিকে আসো দেখি’ - সাধু ভাষায় আবার দশটনি হাক ছাড়ে নিয়ামত স্যার।
আর পাঁচকদম গেলেই নার্সিং সেন্টারের দেয়ালের আড়ালে চলে যাবে ভেবে পাগলা পীরের মাজারে পাঁচ টাকার রিভাইজড মানত ইতিমধ্যেই বাতিল করে দিসে শমসের। গরম মাজার যে ক্ষুদ্রঋণ আদায়কারীরর চেয়ে ভয়ঙ্কর তা মানতে শমসেরর আর সংশয় রইলনা।

‘স্লামালেকুম’ - সমুহ প্রলয় একটু নরম করতে আাগেভাগেই সালাম দিয়ে রাখে শমসের। সেটাই যে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল তা তার জানার কথা নয়।
‘অলায়কুম আস্সালাম, যা ভাগ’ -
এবার আর নিয়ামত স্যারের হঙ্কারের অপেক্ষা করেনা শমসের। পাগলা পীরে মানত করারও টাইম নাই, সর্বশক্তি নিয়ে নার্সিং সেন্টারের দেয়ালের দিকে ছুটতে থাকে। কিন্তু বিধি তার বিধান লঙ্গণ এত সহজে ছাড়বেন কেন? তোফাজ্জেল স্যার আবারো ফ্লোর দখল করেন। ’দেখেছেন কি বেয়াদব ছোকড়া। কেমন সর্টকার্টে স্লামালেকুম বলল, এটা কি বিধি সম্মত হয়েছে?’
" তাই তো, তাইতো।"
’ওহে ছোকড়া, এদিকে আসো দেখি’ - সাধু ভাষায় আবার দশটনি হাক ছাড়ে নিয়ামত স্যার।

মানুষ দেয়ালে পিঠ ঠেকলে না কি যা খুশি তা করতে পারে। বটে, আমাদের শমসের কিন্তু উল্টোটা অর্থাত নার্সিং সেন্টারের দেয়ালে পিঠ ঠেকানোর জন্য ঝেড়ে দৌড় দিল। কোন মাপক যন্ত্র থাকলে হয়তো দেখা যেত আলোর চেয়ে শমসেরের গতিবেগ বেশি। হবৈ না কেন? বিধান/সংবিধান নিয়ে কচলাকচলিতেতো এমনিতেই জীবনই ওষ্ঠাগত। আবার জীবন বাঁচানোও ফরয- এটাও কিন্তু বিধানেই আছে :-*
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×