'ইদানিং কালের ফ্ল্যাটগুলোতে কলিঙবেল লাগানো খেতামির পর্যায়ে পড়ে। তারপরও অভ্যাসবশত কিছুক্ষণ কলিঙবেল খুঁজে এবং না পেয়ে বাহারী আঙটায় ঘটর ঘটর শব্দ তুলে উপস্থিতি জানান দিতে হল। ঢুকতেই ঝুনুর হরবর করে মামলার বিবরণ পেশের মাঝখানেই আসামী নিলয়ের আগমন। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন একেবারেই হতাশাজনক কিছু পেলামনা, শুধু অঙ্কে সি। খিক খিক করে একটু প্রফেশনাল হাসি মারলাম, না হলে আমি যে ঐ বয়সে কতটা মেধাবি ছিলাম তা ঠিক প্রমানিত হয়না।
’কি করিস, হ্যাঁ, অঙ্ক কি মুখস্ত করিস?’
’মুখস্ত করব কেন?অঙ্ক কি কেউ মুখস্ত করে?’
খিক..খিক... পুরনো দিনের স্মৃতিতে নাড়া দিল নিলয়। ক্লাস এইটে সুজিতের সাথে শেয়ারে অঙ্কের একটা নোটবই কিনেছিলাম। তারপর যা পারফরমেন্স...। ঝামেলা বাঁধাল সুজিতের বাপ, আউটবই খুঁজতে গিয়ে নোটবইটা সিজ করায় বেকায়দায় পড়েছিলাম। সুজিত অবশ্য ততদিনে সম্ভাব্য অঙ্কগুলো মুখস্ত করে ফেলেছে। পরীক্ষার আগের দুইদিন আমার কাছেই থাকার কথা ছিল।
’ মুখস্ত না করলে সি পাস কেন? হয় এ+ পাবি না হয় এফ পাবি?’ - মেধার চুড়ান্ত বহি:প্রকাশ প্রদর্শন করে বলালাম।
’ আসলে মামা বুঝতে পারি নাই, টেকনিক্যাল ধরা খাইছি’
ক্লাস সেভেনে পড়ুয়ার এই টাইপের উত্তরে যতটা অবাক হওয়ার কথা ঠিক ততটা হইনি অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায়।
’ভেবেছিলাম হরতাল অবরোধের কারনে অঙ্ক পরীক্ষাটা হবেনা, অটো প্রোমশনের একটা নিশ্চিত খবর পাইছিলাম। কিন্তু সব পন্ড করে দিল শিক্ষামন্ত্রী, শালা একটা.........’
ব্লা ব্লা দিয়ে আমি কিছু চেপে যাইনি। নিলয় নিজেই চেপে গেলেও অপ্রকাশিত শব্দটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি’।
’ দেখেন মামা, নিজে অটো এমপি হয়ে বসে আছে আর বাচ্চা পুলাপানগুলারে অটো প্রমোশন না দিয়ে হরতাল অবরোধে পরীক্ষা দেওয়াইছে, কি রকম সুবিধাবাদী.................’
সেভেনে পড়ুয়া পোলাপানেরাও পাকা বামগো চিনে ফেলসে?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৭