সায়েন্সে কোন কিছুই নিশ্চিত করে বলতে নাই! আজ যা সত্য ক'দিন পরে তাই আবার মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়! প্রচলিত ধরনা মতে মানুষের শরীরে সবচে' জীবানুমুক্ত (স্টেরাইল) জায়গা হল প্ল্যাসেন্টা (অমরা), যা অনেকের কাছে গর্ভ ফুল নামে পরিচিত। গর্ভবতী মায়েদের জারায়ুর ওয়ালের সাথে লেগে থেকে একটি নাভিরজ্জুর মাধ্যমে বাচ্চার পেটের সাথে যুক্ত থাকে। আর এভাবে প্ল্যাসেন্টা বাচ্চাকে খাবার ও অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে এই নাভির মাধ্যমে। এর আরেকটি প্রধান কাজ হল বাচ্চাকে জীবানুমুক্ত পরিবেশ দেয়া! ধারনা করা হত বাচ্চা জন্মের সাথে সাথে একটি জীবানুমুক পরিবেশ (প্ল্যাসেন্টা) জীবানুযুক্ত পরিবেশের প্রথম সাক্ষাত পায়!
কিন্তু সায়েন্সে অনেক প্রচলিত ধারনাই ভুল প্রমানিত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে এখন প্রমানিত হয়েছে গর্ভাবস্থায় প্ল্যাসেন্টায় বাচ্চাকে ঘিরে থাকে ব্যাক্টিরিয়াদের ছোট্ট একটি সম্প্রদায়, যা আগে অবিশ্বাসা ছিল! বাচ্চারা জন্মের সাথে সাথে প্রথমে যেসব ব্যাক্টিরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে তার মধ্যে বাচ্চা জন্মের সময় যোনী পথে ব্যাক্টিরিয়া অন্যতম। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বাচ্চাদের অন্ত্রে যেসব ব্যাক্টিরিয়া ( যাকে মাইক্রোবায়োম বলে) খুজে পেয়েছে তা অবাক করার মত; যোনী পথের ব্যাক্টিরিয়ার সাথে না মিলে যা মিলছে মানুষের মুখের ব্যাক্টিরিয়ার সাথে!! ৩২০ জনের প্ল্যাসেন্টা নিয়ে চালানো এই গবেষণায় দেখা গেল, প্ল্যাসেন্টার ব্যাক্টিরিয়া সম্প্রদায়ের সাথেও মানুষের মুখের ব্যাক্টিরিয়ার দারুন মিল। এ থেকে বিজ্ঞানীরা আপাতত এই তত্ত্ব দাড় করালেন যে "মায়ের মুখের ব্যাক্টিরিয়া কোনভাবে রক্তের মাধ্যমে প্ল্যাসেন্টায় যায় যা পরে নাভীরজ্জুর মাধ্যমে বাচ্চার অন্ত্রে প্রবেশ করে!"
কিন্তু প্রশ্ন হল, কিভাবে মুখের জীবানু প্ল্যাসেন্টায় যায়? দাত খিলাল বা ব্রাশ অথবা ডেন্টাল কেয়ার এর সময় কোনভাবে রক্ত বের হলে বা অতি ক্ষুদ্র ক্ষত হলে মুখের জীবানু মায়ের রক্তের সংস্প্রশ পায়। পরে মুখের জীবানুযুক্ত এই রক্ত প্ল্যাসেন্টা হয়ে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে।
এই গবেষণা থেকে সাজেশন হল গর্ভাবস্থায় কিংবা তার কিছুদিন পুর্ব থেকে (কারন প্লাসেন্টা গর্ভধারনের কিছুদিন আগে তৈরী হয়!) মায়েদের দাত ও খাবের প্রতি বেশ সচেতন হতে হবে! আবার অন্যদিকে এটাও হয়তো সত্য এই ছোট্ট জীবানুযুক্ত প্ল্যাসেন্টা বাচ্চাকে আগে থেকেই প্রস্তুত করায় নেয় যে পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় জীবানুযুক পরিবেশ এর জন্য রেডী থাকো!!
মুল আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে ২১ মে ২০১৪,সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন জার্নাল এ
Click This Link