রোজা শুরু সংক্রান্ত জটিলতায় বার্লিন মুসলমান শিবির দুই ভাগ। একদল (বাংলাদেশ ও আরবরা) ব্রিটেন ও সৌদি আরবকে ফলো করে রোজা একদিন আগে শুরু করেছে এবং 30 রোজার পরে আজকে ঈদ করছে। অপরদল (পাকিস্তান ও তুর্কিরা) একদিন পরে রোজা শুরু করেছে এবং চাদ দেখে ঈদের দিন ঠিক করার কথা। কাজেই আমাদের যাওয়ার কথা বাসা থেকে বেশ দুরে ভেডিং (wedding) এ অবস্থিত বাংলাদেশী মসজিদে।
সকাল 7টায় উঠে দেখি একদম অন্ধকার। 7:30 এ রেডি হয়ে দেখি মেঘলা আকাশ, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে । অল্প আলোর রহস্য বোঝা গেল। সেমাই খেয়ে ঈদ শুরু করলাম । আমার সঙীদের আসতে দেরী হলো 20 মিনিট। নামাজের সময় পিছিয়েছে, আমি জানিনা। পানজাবির উপরে জ্যাকেট চাপিয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি ঠান্ডা তেমন নেই। সকালের ব্যস্ত বার্লিনের চিত্র অন্যদিনের মতই । গাড়ীতে পানজাবী পড়া আমরা একদল বাংলাদেশী।
নামাজের সময় পৌনে নটার আগেই পৌছালাম বাংলাদেশী মসজিদে। কোন সাইনবোর্ড না থাকলেও ভেতরে প্রায় 100 লোকের এবাদতের সুব্যবস্থা। পেশাদার ঈমাম নেই কিন্তু একটি যুবক ভালই ঠেকার কাজ চালালো। মসজিদটি করেছে খেটে খাওয়া দেশী ভাইয়েরা । নিজেদের স্বল্প আয় থেকে এর জন্যে চাদা দিয়েছে। এক ঈহুদী কম পয়সায় যায়গা ভাড়া দিয়ে সাহায্য করেছে। তার পরে শুনলাম প্রশাসনের কড়া দৃষ্টি, মসজিদের আড়ালে অন্য কিছু হচ্ছে কিনা প্রতিনিয়ত জিজ্ঞাসাবাদ। সত্যিই ভাল লাগল তাদের এই আন্তরিক প্রচেষ্টা। কোলাকুলি হলো অনেক অচেনা আপন মুখের সাথে।
মসজিদ থেকে বের হয়েই ঈদের আমেজ শেষ। পথে অবশ্য দু একটি পানজাবী পড়া লোক দেখেছি। পরে শুনলাম আজকে পাকিস্তানী ও তুর্কিদেরও ঈদ। কিন্তু কোথায় তারা?
বাসায় ফিরে মেইল চেক করেই আবার তৈরি হওয়া। দুপুরে একটি দাওয়াত, এখানকার একটি বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টে । এখানকার পরিচিত অনেকেই আসছেন। পরিবারকে সাথে নিয়ে সেখানে গমন এবং ঈদের আমেজের প্রত্যাবর্তন। কিন্তু ওখান থেকে বের হয়েই আবার সেই বনবাস। বাসায় পরিচিত কেউ মনে হয় আসছেনা, কারন দেখা হয়ে গিয়েছে। ঈদ কোথায় আমার জীবনে?
বিকেলে পেলাম আসল ঈদের আমেজ, সামহোয়ার ইনের বন্ধুদের সাথে ঈদের আনন্দের ভাগাভাগি। এই ব্লগের ঈদ সংক্রান্ত পোষ্টগুলো পরছি, মন্তব্য করছি আর দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছি।
জয় হোক সামহোয়ার ইন। তুমি না থাকলে আমার কি হতো?
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

