somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডেস্টিনি ডিসরাপ্টেড- মুসলিমদের চোখে বিশ্বের ইতিহাস (০০৬)

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্য- পৃথিবী (৩)

পারস্য সাম্রাজ্য যখন প্রতিষ্ঠা হয় (প্রায় ৫৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ) তার আগেই মধ্য-পৃথিবীর একত্রীকরণ অনেকটা সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল: প্রতিটি অঞ্চলে আগের বিজেতারা স্থানীয় বিভিন্ন উপজাতি ও শহরগুলোকে এক একটি কেন্দ্রীয় সিস্টেম এর অধীনে নিয়ে এসেছিল, যেগুলো এক একটি কেন্দ্রীয় রাজধানী থেকে একজন করে রাজার দ্বারাই শাসিত হতো। যেমন- ইলাম, উর, নিনেভেহ বা ব্যাবিলন। ফার্সিরা তাদের পূর্ববর্তীদের এই অবদান (এবং রক্তপাত) এর সুফল পেয়েছিল।

এরপরও পারস্য সাম্রাজ্য বিভিন্ন কারণে উল্লেখযোগ্য। প্রথমত, ফার্সিরা ছিল আসিরিয়ানদের বিপরীত। বিশাল একটি সাম্রাজ্য কিভাবে চালাতে হয় এ ব্যাপারে তাদের পদ্ধতি ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। পুরো একটি জাতির মুলোত্পাটন এর পরিবর্তে ফার্সিরা তাদের পুনর্বাসিত করে। তারা বন্দিদশা থেকে হিব্রুদের মুক্তি দেয় এবং তাদেরকে কানান এ ফিরে যেতে সাহায্য করে। ফার্সি সম্রাটরা মাল্টি-কালচারাল, এক তাঁবুর নিচে অনেক জনগোষ্ঠী- এই কৌশল অনুসরণ করে। তাদের বিশাল সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রন করার জন্য এর অধীন সব জনগোষ্ঠীকে তারা যার যার স্থানীয় নেতাদের অধীনে নিজেরদের লোকাচার এবং এবং আচরণবিধি অনুযায়ী নিজস্ব জীবনযাপনের সুযোগ দিত, যতক্ষণ পর্যন্ত ফার্সিদেরকে ঠিকঠাকমতো ট্যাক্স পরিশোধ করা হতো এবং পারস্য সম্রাট এর কিছু বেসিক কর্তৃত্ব এবং আদেশকে সম্মান জানানো হতো। পরবর্তীতে মুসলিমরা এই আইডিয়াটি গ্রহণ করে এবং অটোমানদের সময় পর্যন্ত এটা বজায় ছিল।

দ্বিতীয়ত, ফার্সিরা যোগাযোগকে তাদের সাম্রাজ্য ঐক্যবদ্ধ এবং নিয়ন্ত্রণ করার একটি চাবিকাঠি হিসাবে দেখত। তারা একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ট্যাক্স আইন জারি করে এবং সমগ্র সাম্রাজ্যব্যাপী একটি একক মুদ্রার প্রচলন করে। ব্যাবসার ক্ষেত্রে মুদ্রাই হলো যোগাযোগের ভাষা। তারা রাস্তাঘাটের একটি অসাধারণ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে এবং এর জায়গায় জায়গায় সরাইখানা/হোস্টেল তৈরি করে যাতে ভ্রমণ সহজ হয়। তারা একটি দক্ষ ডাক ব্যাবস্থাও তৈরি করে।

ফার্সিরা অনুবাদকদের বিশাল এক দলকেও চাকরীতে নিয়োজিত করে। ‘অফিসার, এই কাজটা যে বেআইনি তা আমার জানা ছিল না, আমি ফার্সি জানিনা’ এই কথা বলে পার পেয়ে যাবার কোনও ঊপায় আর থাকলনা। এই অনুবাদকরা সম্রাটের জাঁকজমক এবং মহিমার লিখিত বিবরণ গোটা সাম্রাজ্যজুড়ে সম্প্রচার করার ঊপায়ও করে দিলো, যাতে প্রজারা তাদের শাসকের বন্দনা করতে পারে। দারিউস (‘the Great’) নামে এক সম্রাট, যিনি পারস্য সাম্রাজ্যকে এর অন্যতম একটি উৎকর্ষপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন, তার জীবন কাহিনী বেহিশতুন নামে একটি জায়গায় একটি পাহাড়ের গায়ে উত্কীর্ণ করে দিয়েছিলেন। (ফার্সি বেহিশতুন এর সাথে বেহেশত শব্দের মিল খুঁজে পেলে আপনি ঠিকই ভাবছেন। ওখান থেকেই এই শব্দটি আমাদের এদিকে এসেছে। আরবীতে যেটা হল জান্নাত) তিনি এটা তিনটি ভাষায় লিখিয়েছিলেন: প্রাচীন ফার্সি, এলামাইট এবং ব্যাবিলনীয় ভাষা। এতে পনের হাজার অক্ষরে দারিউসের কর্ম এবং বিজয়গাঁথা বর্ণনা করা আছে- সেইসব বিদ্রোহীদের বর্ণনা আছে যারা তাঁকে উৎখাত করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল, আর বিস্তারিত বিবরণ আছে এদেরকে তিনি কি কি শাস্তি দিয়েছিলেন সেটার। মূলত এর মাধ্যমে যে ম্যাসেজ দেয়া হচ্ছিলো তা হলো, এই সম্রাটের সাথে বেয়াদবি করো না, তিনি তোমার নাক কেটে নিবেন বা আরও খারাপ কোনও শাস্তি দেবেন। তা সত্ত্বেও, নাগরিকদের কাছে পারস্য সাম্রাজ্য মোটামুটি নরমই মনে হতো, কার্যকর শাসনব্যাবস্থা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতো, যার ফলে সাধারণ মানুষ তার নিজের নিজের দৈনন্দিন কাজে মনোযোগ দিতে পারত- যেমন পরিবার প্রতিপালন, ফসল উৎপাদন এবং বিভিন্ন দরকারী পণ্য উৎপাদন ইত্যাদি।

বেহিশতুন-এ দারিউসের সেই শিলালিপিটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবার আধুনিককালের পণ্ডিতদের নজরে আসে। এর যে অংশটি প্রাচীন ফারসি ভাষায় লিখিত ছিল, আধুনিক ফার্সির সাহায্য নিয়ে তার অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পণ্ডিতরা এটাকে কাজে লাগিয়ে এর মধ্যে থাকা বাকী দুটো ভাষাকেও পড়তে সক্ষম হন। আর সেটার সূত্র ধরে তাঁরা প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার কুনিফরম (Cuneiform) লাইব্রেরির সন্ধান লাভ করেন। এই লাইব্রেরি এতই সমৃদ্ধ ছিল যে আজকে আমরা মাত্র বারশ বছর আগের পশ্চিম ইউরোপের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে যতোটুকু না জানি তার চেয়েও অনেক বেশী জানি তিন হাজার বছর আগের মেসোপটেমিয়ার মানুষের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে।


বেহিশতুনে (ইরান) পারস্য সম্রাট দারিউস- এর সেই 'বিলবোর্ড' - ৩,০০০ বছর আগের।
নীচের ছবির লোকদের মতো চাইলে আপনিও দেখে আসতে পারেনঃ


পারস্য সাম্রাজ্যে ধর্মের জোরালো অবস্থান ছিল। এটা হিন্দুধর্মের মিলিয়ন দেবতাদের ধারণা ছিলনা, কিংবা প্রাচীন মিশরের আধা-মানুষ এবং আধা-পশু আকারের ঐন্দ্রজালিক দেবতাদের দলের মতোও ছিল না। কিংবা গ্রিক পৌত্তলিকতার মতো কিছুও না। বরং ফার্সি দুনিয়ায় গৌরবের স্থানটি ছিল জরথুষ্ট্র ধর্মের। জরথুষ্ট্র খ্রিস্টপূর্ব প্রায় এক হাজার বছর আগের মানুষ- আরও আগেও হতে পারে, পরেও হতে পারে; কেউই সত্যি করে জানে না। তিনি উত্তর ইরান, আফগানিস্তান নাকি অন্য কোথাও থেকে আগত তাও সঠিক জানা যায় না। জরথুষ্ট্র নিজেকে কখনো নবী বা ঐশ্বরিক শক্তির বার্তাবাহক বলে দাবি করেননি, নিজেকে ঈশ্বর হিসাবে তো নয়ই। তিনি নিজেকে একজন দার্শনিক এবং অন্বেষী হিসাবে বিবেচনা করতেন। কিন্তু তার অনুসারীরা তাকে একজন পবিত্র মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে।

জরথুষ্ট্র প্রচার করেন যে মহাবিশ্ব অন্ধকার ও আলোর মধ্যে, ভালো ও মন্দের মধ্যে, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে, জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে বিভক্ত। মহাবিশ্ব সৃষ্টির মুহূর্তে এই বিপরীতধর্মী শিবিরে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল, আর তখন থেকেই এদের সংগ্রাম চলমান এবং সময়ের শেষ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা চলতে থাকবে। জরথুষ্ট্র বলেন যে মানুষ তার নিজের মধ্যে এই উভয় নীতিই ধারণ করে। তারা কোন পথে যাবে এটা নিজেরাই স্বাধীনভাবে ঠিক করে নেয়। যখন মানুষ ভালকে বেছে নেয় তখন সে আলো এবং জীবনের শক্তি প্রসার করে। মন্দ বেছে নিলে তারা অন্ধকার এবং মৃত্যুর বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করে। ফার্সি মহাবিশ্বের কোন অদৃষ্টবাদ বা স্থির পরিসমাপ্তি নেই। ভালো এবং মন্দের এই যুদ্ধের ফলাফল কখনই স্থির নয়। প্রত্যেকটি মানুষের প্রতিটি সিদ্ধান্তই এই মহাজগতিক লড়াইয়ের ফলাফলকে প্রভাবিত করে।

জরথুষ্ট্র মহাবিশ্বের এই নাটককে দুইটি ঐশ্বরিক শক্তির মাঝে দেখেতেন- ‘আহুরা-মাজদা’ ছিল ভালর দেবতা আর ‘আহিরমান’ হল মন্দের। আগুন হল আহুরা-মাজদা’র প্রতীক, যার ফলে অনেকে জরথুষ্ট্র ধর্মাবলম্বীদের অগ্নি উপাসক হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু তারা আসলে আগুনের উপাসনা করে না, উপাসনা করে আহুরা-মাজদা’র। মোটের উপর প্রাচীন ফার্সি জরথুষ্ট্র ধর্মাবলম্বীদের কাছ মহাবিশ্ব ভাগ হয়ে ছিল সমান শক্তির দুই শক্তির মাঝে আর মানুষ ছিল তাদের টানাটানির দড়ি। ফার্সি জরথুষ্ট্র ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় মূর্তি, চিত্র এবং আইকন কে নাকচ করেছিল। ইসলাম ধর্মেও এই নিষেধাজ্ঞাটি অনেক জোরালোভাবে দেখা যায়।

জরথুষ্ট্র ধর্মের পুরোহিতকে বলা হতো ম্যাগাস (magus), বহুবচনে ম্যাযাই (magi)। খ্রিস্টান আখ্যান অনুযায়ী যে তিনজন ‘পূর্ব দিক থেকে আসা জ্ঞানী পুরুষ’ (the three wise men of the East) শিশু যীশুর জন্য তার আস্তাবলে myrrh and frankincense (সুগন্ধি উপহার) নিয়ে গিয়েছিলেন তারা আসলে ছিলেন জরথুষ্ট্র পুরোহিত। (বাংলাদেশে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাস এ এক সময় ‘the Gift of the Magi’ নামে এক গল্প পড়ানো হতো যেটা আধুনিক কালের এক দম্পতির কাহিনী, যারা অনেক আর্থিক কষ্টের মাঝেও ত্যাগ স্বীকার করে একে অপরের জন্য ক্রিস্টমাস গিফট কিনে আনে)। এছাড়া জাদুকর (magician) শব্দটিও এই প্রাচীন ফার্সি পুরোহিতমণ্ডলী থেকেই এসেছে। কারণ অনেকেই মনে করত এই যাজকদের অলৌকিক ক্ষমতা আছে (এবং কখনও কখনও তারা নিজেরাও এমনটা দাবি করতেন)।

পারস্য সাম্রাজ্যের শেষের দিকে ফার্সিরা ভূমধ্যসাগরীয় পৃথিবীতে হানা দেয় আর পশ্চিমাদের বিশ্ব-ইতিহাসে একটি সংক্ষিপ্ত, কিন্তু গভীর ছাপ রেখে যায়। ফার্সি সম্রাট দারিয়ুস গ্রীকদেরকে ‘শাস্তি’ দিতে পশ্চিমে সমুদ্রযাত্রা করেন। আমি ‘শাস্তি দিতে’ শব্দগুলো ব্যাবহার করলাম, ‘আগ্রাসন’ বা ‘জয় করতে’ নয়। কারণ পারস্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে তথাকথিত ‘পার্সিয়ান ওয়ার’-টি দুই সভ্যতার মাঝের কোন মোড় ঘোরানো সংঘর্ষ ছিল না। ফার্সিরা গ্রীকদেরকে দেখত কিছু আদিম মানুষ হিসাবে যারা কিনা সভ্য জগতের সুদূর পশ্চিম প্রান্তে পড়ে থাকা ছোট কয়েকটা শহরে বসবাস করছিল। ফার্সিরা মনে করত এই গ্রীক শহরগুলো পরোক্ষভাবে তাদের সাম্রাজ্যের প্রভাব বলয়েই ছিল, কিন্তু সরাসরি শাসন করার জন্য একটু বেশী দূরে পড়ে গিয়েছিল। সম্রাট দারিয়ুস গ্রীকদের শুধু এতটুকু নিশ্চিত করতে বলেছিলেন যে, তারা যে তাঁর অনুগত সেটার প্রতীক হিসাবে তাঁকে যেন এক পাত্র পানি এবং এক বাক্স মাটি পাঠানো হয়। গ্রীকরা তা প্রত্যাখ্যান করে। দারিয়ুস তাঁর সেনাদল জড় করলেন গ্রীকদের এমন একটি শিক্ষা দেয়ার জন্য যা তারা কখনো ভুলতে পারবেনা। কিন্তু তার সেনাবাহিনীর বিশাল আকার অ্যাডভান্টেজ এর বদলে দায় হয়ে দাঁড়ালো। এই বিশাল দূরত্ব আপনি এত বেশী মানুষকে নিয়ে কিভাবে যাবেন? আপনি কিভাবে এদের মালমশলা, খাবার-দাবারের সরবরাহ নিশ্চিত করবেন? আর দারিয়ুস সামরিক কৌশলের প্রথম নীতিই অগ্রাহ্য করেছিলেন: ‘ইউরোপে কখনও স্থলযুদ্ধে জড়াতে নেই’। শেষ পর্যন্ত, গ্রীকরাই ফার্সিদের একটি অবিস্মরণীয় শিক্ষা দিয়ে ছাড়ে, তবে ফার্সিরা সেই শিক্ষা দ্রুতই ভুলে যায়। কারণ, এক প্রজন্মেরও কম সময় পরেই দারিউস এর হাবাগোবা ছেলে জারজিস (Xerxes) তার পিতার অপমানের প্রতিশোধ নিতে মনস্থ করে আর একই ভুলের আরও জটিলতর পুনরাবৃত্তি করে। জারজিস ও খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাড়ি ফিরে আসলো, আর এটাই ছিল ইউরোপে পারস্যের রোমাঞ্চ-অভিযানের সমাপ্তি।

এর শেষ অবশ্য ঠিক তখনই হয়নি। প্রায় ১৫০ বছর পর (যীশু খৃস্টের জন্ম হতে তখনো প্রায় ৩০০ বছর বাকী), আলেকজান্ডার দি গ্রেট যুদ্ধটাকে উল্টোদিকে নিয়ে আসেন। আমরা প্রায়ই বলি ‘বিশ্বজয়ী’ আলেকজান্ডার দি গ্রেট। আসলে আলেকজান্ডার যা জয় করেছিলেন তা হল পারস্য, যারা কিনা অনেক আগেই ‘বিশ্ব’টাকে জয় করে রেখেছিল।

আলেকজান্ডারের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরীয় আখ্যানটি মধ্য-পৃথিবীর মাঝে সজোরে প্রবেশ করল। আলেকজান্ডার এই দুই পৃথিবীকে একীভূত করার স্বপ্ন দেখেছিলেনঃ ইউরোপ এবং এশিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করার। তিনি ব্যাবিলনকে তাঁর রাজধানী হিসাবে বেছে নেয়ার চিন্তা করেছিলেন। আলেকজান্ডার পারস্য জগতের গভীরে প্রবেশ করেছিলেন এবং তাঁর ছাপ রেখে গিয়েছিলেন। অনেক ফার্সি উপকথা এবং গল্পেই তাঁকে পাওয়া যায়, যেখানে তাঁকে বিশাল বীরত্বপূর্ণ চরিত্র হিসাবে দেখানো হয়, যদিও পুরাপুরি ইতিবাচকভাবে নয় (কিন্তু সম্পূর্ণ ভিলেন হিসাবেও না)। মুসলিম বিশ্বের বেশ কিছু শহরের নামকরণ তাঁর নামে। এর খুব স্পষ্ট একটি উদাহরণ হল আলেকজান্দ্রিয়া। কিন্তু একটি কম স্পষ্ট উদাহরণ হল কান্দাহার, এখন যেটা তালিবানদের রাজধানী হিসাবে সুপরিচিত। কান্দাহার শুরুতে ছিল ‘ইস্কান্দার’, প্রাচ্যে আলেকজান্ডার এই নামেই পরিচিত ছিলেন। ইস্কান্দার এর ‘ইস’ খসে পড়ে আর ‘কান্দার’ মোলায়েম হয়ে ‘কান্দাহার’ রূপ ধারণ করে।

এখানে আলেকজান্ডারের রাজত্ব আধুনিককালের ম্যাপ এর উপর দেখানো হয়েছে। লক্ষ্য করে দেখুন মানচিত্রের একেবার বামদিকে নীল পিনটি যেখানে (গ্রিস) সেখানে তাঁর বাড়ি। তিনি পশ্চিমে (ইউরোপ) এক পাও বাড়াননি। ম্যাপ দেখে মনে হয় যেন ঊর্ধ্বশ্বাসে শুধু পূর্ব দিকে ছুটেছেন (একেবারে ভারত পর্যন্ত)। দক্ষিনেও একটু গিয়েছিলেন (মিশর)। আর লেখকের কথাই ঠিক- একেবারে পশ্চিমের সামান্য জায়গা ছাড়া এই পুরো এলাকাটাই (মিশর সহ) পারস্য সাম্রাজ্যের কব্জা থেকেই আলেকজান্ডার দখল করে নিয়েছিলেন।

শুরুর পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আগের পর্ব এখানে

[তামিম আনসারী’র Destiny Disrupted: A History of the World Through Islamic Eyes বইয়ের অনুবাদ।
https://www.goodreads.com/book/show/6240926-destiny-disrupted
https://www.amazon.com এ প্রিভিউ এবং রিভিউ দেখতে।]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×