কথার পিঠে সইতে নেই, আজকালকার দিনে কেউ সয়? কথার তীর রুখতে হয়, জানিয়ে দিতে হয় ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে। রুঢ় হয়ে বাক্য বিষে মাখতে হয়, শব্দ গুলো তেড়ছা করে ফেকলে আঘাত করে, যে শুনিয়ে দিলো একটু জীবন কালো, পড়তে হয় তার নামাবলী। তাহলেই আর কইতে আসবে না, জানতে চাইবে না কেমন আছি। না আসুক, আমার কী? পই পই করে হিসাব রাখার দিন, কে কতটা ফেললো কাঁটা, কে কতটা পথ এগিয়ে দিলো, টুকে রাখো। সব হিসাব কষতে হবে, দেখতে হবে লাভের ফল কত? ক্ষতি কত হল? ক্ষতির হিসাব বাড়লো বেশী? তুমি ভীষণ বোকা, আগে নিজের সুখ চাইতে হয়। স্বার্থপর হও, স্বার্থপররাই সুখি। নিজের দুই বেলার খাবার জুটলে, তিন বেলারটা খোজো। ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করো৷ যার মুখে আজ জুটলো না খাওয়া, সে উপোস করুক, তার পেটে আগুন জ্বলুক। সে তো তোমার শত্রু ভীষণ, তার কপাল এমন পুড়ুক। পৃথিবীটা একার তোমার, সকল নারী তোমার হোক, রাখলো না যে কথা, সে নারী ধ্বংস হোক। কেবল তোমারি একটা সরকারি চাকরি হোক, বাকী সব পথে বসুক। কেবল তুমিই কক্সবাজার যাও, থাইল্যান্ড টুর দাও, বাকীরা ঘরের বাহির না হোক। তোমার ঘরেই রাজকন্যা আসুক, রজপুত্রের জন্ম কেবল তোমার ঘরেই হোক। এমন হলেই সফল তুমি, সুখি হবার মন্ত্রে এইতো কও। এর জন্যই হিসাব কষো- কে কতটা দুঃখ দিলো?
স্বার্থপরতা, শঠতা, প্রবঞ্চনাই এখন আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র মূল মন্ত্র। একারণেই আমাদের পই পই করে হিসাব রাখতে হয়, কে কখন মারা খেলো, কে মেরে গেলো।
অথচো কবি বলেছেন - "আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি বাধি তার ঘর,
আপন করিতে কাদিয়া ফিরি যে মোরে করেছে পর।"
কবি বলেছেন-
"পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।
পরের কারণে মরণেও সুখ
'সুখ-সুখ' করি কেঁদো না আর/"
"মিথ্যা কথা, কবিরা সব সময় সত্য দ্রষ্টা হয় না।"
এজন্যই কবি বলেছেন- "একদিন সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।"