সকাল ৮টা ৩০ মিনিট।
ওইই রুস্তমম, ওইই শরীফফফা!!!
কালো বেটে ছেলেটা একনাগাড়ে ডেকেই চলেছে আর এদিকে ওর কলার ধরে বাসের হেল্পার চিল্লাচ্ছে, ওস্তাদ গাড়ি টানেন,টানেন গাড়ি!! ঠিক চালকের পেছনের সিটে বসে আমি দেখছি ছোট্ট একটা কথা থেকে কিভাবে মারামারি লেগে যায়! মহাসড়কের মাঝে বাজার,নিমসার বাজার। বাস এগোচ্ছে ওর ভেতর দিয়ে ধীরেধীরে! বাজারের শ্রমিকগুলো হুটহাট বাসের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছে, বাসের হেল্পার চেচাচ্ছে,ওই বেটা, তাত্তারি যা,তাত্তারি! হঠাত, একজন গালি দিয়ে বসল মাদারচো*! হেল্পার চুপ থাকার পাত্র নয়, ওই খাড়া তুই,তুই খাড়া বলে বাসের দরজা দিল খুলে! ভুলটা করে বসল হেল্পার, প্রথম দফায় কালো বেটে শ্রমিকের কলার চেপে ধরলেও রুস্তম,শরীফ সহ আরও জনা বিশেক শ্রমিকেরা আসতেই হেল্পারের ওপর পড়তে লাগলো একের পর এক কিল ঘুষি! তারা টেনে নামাতে চাচ্ছে হেল্পারকে, হেল্পার সমানে চেচাচ্ছে, ওস্তাদ গাড়ি টানেন, টানেন গাড়ি!
বুদ্ধিমানের কাজটা করলো ড্রাইভার,কিছু নেতাগোছের শ্রমিকদের দেখতে পেয়ে বাসটা থামিয়ে দিল,আর চেচাতে লাগলো,দেখেন ছাই বাই,হুদাই বাচ্চাফোলাপাইন মারামারি করতেসে,থামান না ওডিরে,আমরা আমরাই তো! ড্রাইভারের কথায় কাজ হল,নেতাগোছের শ্রমিকদের ধমকে রুস্তম শরীফরা সরে গেল। আধাঘন্টা থেমে থেকে বাসটা চলতে শুরু করলো আবারও! ঘটনার আকস্মিকতায় হাতে মোবাইল থাকা সত্বেও সমস্ত ঘটনাটা রেকর্ড করতে ভুলে গিয়েছিলাম আমি,শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম।
রাত ৮ টা ৩০ মিনিট।
এই যে কাহিনী,এই কাহিনীর পেছনের কাহিনী ঢাকায় ভাইয়া নতুন বাসা নিয়েছে। ৬ তলার নতুন বাসায় মালামাল ওঠানো শেষে কোনমতে শরীরটাকে টেনে আমি মেসে নিয়ে এসছি। বর্তমানে কেবল দুহাতের তিনটে আঙুল নড়ছে,একটা দিয়ে মাঝেমাঝে নাক খুচাই,আর বাকি দুটো দিয়ে এই কাহিনী লিখলাম,খাবারদাবার মুখে পুড়বো সেই শক্তিটুকু নেই,কুমিল্লা থাকলে কেউ একজন আসতো,এখানে তো কেউ নাই!!
দিনশেষে অবশ্য আমরা সবাই একা !
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৫