somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দোষ !!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দু বছর আগের ঘটনা।

আমার এক আত্তিয়া সম্পর্কে বোন হন,তার কথাই আজ লিখছি।
তার জীবনের একটা দুঃসময় নিয়ে লিখছি।
এবং
তার অনুমতি নিয়েই লিখছি।

ধরা যাক আমার বোনটির নাম ফারিয়া, আর তার প্রেমিক এহসান।


ফারিয়া আর এহসান দুজনের প্রেমের শুরু তাদের ১৬ বছর বয়স থেকে।

আর সেই প্রেমের খারাপ অথবা ভালো পরিনতি যেটাই ঘটেছে,তা হয় তাদের ২৯ বছর বয়সে।

মোট ১৩ বছরের সম্পর্ক।
এই সময়ে কার বোকামি অথবা কার চালাকি সবই বুঝতে পারবেন কিন্তু আমার লেখার উদ্দেশ্য তা নয়, উদ্দেশ্য হোল আমার বোনের সংগ্রাম কে সম্মান জানানো।সে আনেক ভালো একটা মানুষ,লিখতে বসে চোখ ভিজে যাছে আমার আজও !

ফারিয়া আর এহসানের সামাজিক অবস্থা ছিল এরকম,ফারিয়া শিক্ষিত পরিবারের আর এহসান অধঃ শিক্ষিত পরিবারের।
সাভাবিক ভাবে আর্থিক দিক থেকেও এহসানরা ছিল দুর্বল।

কিন্তু দুর্বল কিভাবে সবল দের হার মানায় আজ পড়বেন!!


যথারীতি পড়ালেখার পার্ট চুকিয়ে তারা নিজ নিজ কর্ম ক্ষেত্রে জায়গা করে নেয়।
অনেক আপত্তির পরও ফারিয়ার খুশির কতজা ভেবে তার পরিবার এহসানের সাথে তার সম্পরকের একটা পরিনতি দিতে রাজি হন।এক্টাই কারন এহসান ভালো ছেলে।


ঘটনা একঃ
এহসানেম মা বাবাকে নিয়ে বিয়ের কথা বারতা পাকাপাকি করতে তারা আসে ফারিয়ার বাশায়। আয়জনের অভাব রাখেনা তারা।
শেষমুহুর্তে এহসানের মা আসেনা।ছেলে ও বাবার মিথহা অজুহাত মহিলা অসুস্থ।
হঠাত এহসানের বাবার ফোন এ একটা টেলিফোন আসে এহসানের মায়ের (পরে বোঝা যায়)তারা না খেয়ে একরকম ছুটে বাসায় যায় কারন ওপাশের কর্কশ গলায় এরকম কিছু কথা ছিল "এতো দেরি করতেস কেন?রাতে ওখানে খাবানা কিন্তু খবরদার"!! (আমরা ভাই বোনেরা আশেপাশেই ছিলাম ফোনটা ছিল নকিয়া ১২৮০ সম্ভবত,তাই কথা এতো স্পষ্ট)


ঘটনা দুইঃ
এক বছর পর এহসান মা বাবাকে দ্বিতীয়বারের মতো ফারিয়ার বাসায় আনে,এবং তারা খালি হাতেই ফারিয়া কে মেয়ে
বানিয়ে রেখে যায় তার মার মুখ থেকে দেয়া কথা ছিল এরকম "আমারা দু মাস পর আবার এসে তারিখ টিক করে রেখে যাব"।

ঘটনা ৩ঃ

৩ মাশ পেরিয়ে যাবার পর ফারিয়ার পরিবার তাদের ফোন দেয় তাদের দেয়া কথা নিয়ে তারা তারিখ জানবে কিনা।
এহসানের বাবার উত্তেজিত উত্তর "এতো অস্থির হওার কি আছে? আসবত!!আর দু মাশ সময় আমারা চ্চাইনি,আপ্নি ভুল বলছেন"
সে বছর তারা আর আসেনি!।কেও ফোন করেনি আর ফারিয়ার বাসা থেকেও।

ঘটনা ০৪ঃ
এহসান মোটা বেতনের আরেকটা চাকরি পায়।
সে তার পুরো পরিবারের খরচ চালানর দায়িত্ত নেয়, কেননা তার মা বলেছিল "আগে ঘর চালা এর পর বিয়া!! আর তুই বিয়ে করলে আমাদের দায়িত্ব কে নিবে??তবুও সে বাসায় জানায় এবার যেন আর দেরি না করা হয়।এরপর ও তারা কখনই আসেনি।।


এহসান ফারিয়া কে বলেছিল রেজিস্ট্রি করে নিতে,ফারিয়া চায়নি কারন ও সামাজিকভাবে রিকগনাইজড হয়ে বিয়েটা করতে চেয়েছিল।
এহসানের মা বাবার 'যার আর পর নাই' টাইপ অনিহা দেখে ফারিয়ার মা বাবাও (আমার খালাখালু ) তাদের পা ধরে কিংবা যৌতুক অফার করে মেয় বিয়ে দিতে চায়নি।


এখন ফারিয়া আনেক ভালো আছে।বাংলাদেশের বাইরে আছে। বিয়ে করেছে।বড় কথা যার সাথে আছে ভদ্রলোক শিক্ষিত মা বাবার ছেলে!!




এহসানের মা বাবা অসম্ভব ধূর্ত প্রকৃতির মানুষ যেটা আমার বোন বুঝতে পারেনি।এহসান ও বেতিক্রম নয়। এহসানের মা বাবার এক্তাই কথা ছেলের ৩৫/৩৬ বছর হবার আগে কিশের বিয়ে??



ছেলে যখন তাদের বশের বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ করেছিলো তখন বলা হয়েছিল তার বাবা কোন ধরনের আর্থিক সহায়তা করবেনা বিয়ের ব্যাপারে বেশি বারাবারি করলে বিয়েতেই যাবেনা তারা।নতুন চাকরি, ফারিয়াদের স্ট্যাটাসের সাথে মিল রেখে বিয়ের অনুষ্ঠানে ১০/২০ লাখ টাকা খরছ করা বেচারি এহসানের অসম্ভব ছিল, তা আমিও মানছি। আর হবু স্ত্রীর জন্য মা বাবাকে ছেড়ে দেয়ার মতো ছেলে এহসান ছিলনা।


এখানে শুধু কিছু নির্বাচিত ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভদ্রতার সিমা লঙ্ঘন তারা কতটুকু করছে তা নাহয় নাই লিখলাম।

এহসানের বাবা বিসিএসআইআর এ কাজ করতেন তবে কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নন ,এখন তিনি হোমিওপেথির ডাক্তার এটা তার সার্বজনীন পরিচয়,মানে মানুষ কে সে এটাই বলে বেড়ায় এখনো।

সে একজন হাজি মানুষ!!আমাদের সমাজে পরহেজগার মানুষের মুখের কথাকে মানুষ অন্ধ ভাবে বিলিভ করে!! কিন্তু যারা এহসানের বাবার মতো তাদের কি বলবেন??

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একজন মানুষের পরিচয় তার মুখের কথায়, তার আচরণে !!



লেখাটাকে আমি পাঠক প্রিয়তার জন্য অতিরঞ্জিত কিংবা রম্য রচনা আকারে প্রকাশ করতে পারতাম কিন্তু আমি তা চাইনি।

গতকাল ঈদ গেল,আমার বোনটা সন্ধ্যায় এসেছিলো আমার বাসায়।কিছুদিনের মাঝে আবার চলেও যাবে।বছরে এক বারই দেখা হয় তাদের সাথে।


আমার সৃতিতে ওর সে দিনগুলোই ভাসে যখন প্রতিবার এহসানের মা বাবার আসার কথা শুনে অনেক এক্সাই্টমেন্ট আর ইন্টারেস্ট নিয়ে রান্না করতো।
আমরা জানতাম বিয়েটা হয়তোবা হবেনা ওর খুশি মুখটা দেখে আর বলা হতোনা।


কোন পাঠক যদি এখন এহসান কে কুত্তার বাচ্চা- গালি দেয়!!
ভুল হবে??
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৪
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×