আব্বুর দেয়া গ্যালাক্সি এস থ্রি মোবাইলের স্ক্রীন গার্ড কিনতে গিয়েছিলাম বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইটের সামনের গ্যাজেট এন্ড গিয়ার দোকানে। দোকানে বসা নাদুস নুদুস একজন যুবক। সাস্থ্য আর চেহারায় মোবাইলের দোকানদার মনে হয়না। অভিজাত পরিবারের সন্তান মনে হয়। মোবাইল দেখে বললো ২০০ টাকা লাগবে গার্ড কিনতে আমি রাজি হয়ে মোবাইল
বের করে দেই। লোকটি মোবাইলকে ব্রাশ দিয়ে মুছে সব ময়লা পরিস্কার
করছে খুব যত্ন নিয়ে। এমন আদর আমি আমার মোবাইলরে কোনদিন করি নাই। আমাকে জিজ্ঞাসা করে এটি আপনার আব্বু কিনে দিসে না?? আমি বললাম হ্যাঁ। কেন বলেন তো? লোকটি বললো মানুষ নিজের জন্য এতো দাম
দিয়ে জিনিস কিনেনা কিনলে তার চেয়েও ভালোবাসে যাকে তারজন্য কিনে। আমি নিশ্চিত আপনার আব্বু নকিয়া ১১০০ টাইপের মোবাইল ব্যবহার করে। আমি কল্পনা করার চেষ্টা করলাম আব্বু আসলে কি ব্যবহার করে। চোখের সামনে ভেসে আসলো আব্বার ভাঙ্গাচুরা মোবাইল। সঙ্গেসঙ্গে চোখ
দিয়ে পানি এসে পড়লো। দোকানদার জোরে নিশ্বাস ছেড়ে বললো আমার বাবাও এমন ছিলো। আমি দিনরাত টাকা ঊড়াতাম ক্লাব পার্টি ডিস্কো। কখনো চিন্তা করতাম না ৫০০/৬০০ টাকার সিগারেটের প্যাকেটে আমার বাবার ঘাম লেগে আছে। আজ বাবা নেই বাবার সাথে সাথে তার সব সম্পদও বিলুপ্ত হয়েছে। আমি অপদার্থ সন্তান বাবারঅসুস্থতার সময়ও তার ব্যবসাপাতির হাল ধরিনি। এখন বুঝেছি মাথার উপর থেকে ছায়া সরে যাবার পর। লোকটার কথা শুনার পর থেকে মনটা অস্থির হয়ে আছে সত্যিই তো আমি তুমি আমরা কেউই জানিনা আমাদের বাবারা কত কষ্টে আমাদের অর্থের যোগান
দিচ্ছেন। আমাদের সুখের জন্য দিন রাত অমানুষের মত কাজ করে যান। আমাদের আবদার মেটান। কিন্তু আমরা একবারও তা উপলব্ধি করতে পারিনা। একবার এক পরীক্ষায় খারাপ করলাম । পগ্রেস কার্ড নিয়া বাবাকে দেখানো মাত্র কইশ্যা একটাথাবরা দিলো । আর আম্মারে কইলো আইজ থাইকা ওর ভাত এই ঘরে বন্ধ। আমি তো আরামে চাচার বাসায় গিয়া সিনেমা দেখতাসি। দুপুর পার হইয়া বিকাল হইলো। দেখি আব্বু চাচার বাসায়
হাজির। চাচারে কইলো তুই এই হারামীরে ঘরে জায়গা দিলিকেন? পরে শুনি বাবা সারাদিন না খেয়ে আমার সব বন্ধুর বাসায় আমারে খুজছে। বাবা তুমি এত ভালো কেন? :'(
[সংগ্রীহিত]