একটা কবিতা দিয়ে শুরু করি," আলো বলে অন্ধকার তুই বড় কালো/ অন্ধকার বলে ভাই তাই তুমি আলো........ রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর। " আমি হয়তো কবির উক্তিদ্বয়ের সঠিক বাখ্যা দিতে পরবা না,তবে লাইন দুইটা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট বলতে পারি, আর তা হল- আলো আর অন্ধকার একে অপরের পরিপূরক। সুতারাং বলা যায়, সুখ-দুখ, ভাল-মন্দ, পাওয়া-না পাওয়া, ধনী -গরিব সবাই একে অপরের পরিপূরক! এই কথাটা উদাহরণ দিয়ে দিলাম, যেন বুদ্ধিমানরা সহজে বুঝতে পারেন। আমি লিখতে বসেছি " পুলিশ " নিয়ে, তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল- পুলিশ সম্পর্কে আমাদের মনমানসিকতা খুবই শোচনীয় ও লজ্জাজনক! সাম্প্রতিক সময়ে যারা নিয়মিত পত্রিকাদি ও সংবাদ পড়ে থাকেন তারা সহজেই বুঝতে পারবেন।
।
।
২০১৬ সালের প্রথম থেকেই দেশের নামি- দামি কিছু সংবাদ পত্র প্রতিদিন কমপক্ষে একটি হলেও পুলিশের দ্বারা সাধারণ জনগন নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেছেন। এরমধ্যে রয়েছে চা-দোকানি, সিটি করর্পোরশনের কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মকর্তা সহ আরও অনেকেই। আমি- আপনি হয়তো পুলিশ কর্তৃক জনগন কে নির্যাতনের এই বিষয়/ঘটনা গুলে কাছ থেকে দেখিনি বা জানিনা। আসলে যদি ঘটনা গুলো সত্যিই হয় তার জন্য দায়ী কে? সম্পুর্নপুলিশ বাহিনী, না শুধুমাত্র পুলিশের ঐ সদস্য যে এই ধরনের কার্যকলাপ ঘটিয়েছে? যাইহোক, ধরেনি সাম্প্রতিক সময়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার জন্য পুলিশের কতিপয় কিছু সদস্য দায়ী। তাই বলে কি, পুলিশ কোন ভাল কাজ করে না? আমরা বা আমাদের পরিবার যখন রাতে ঘুমায় তখন রাত জেগে দেশের সেবা/ নিরাপত্তা বিধান টা কে করে? যেখানে গন্ডগোল/ মারামারি বাধে সেখানে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য কারা আগে ছুটে যায়? সব গুলো প্রশ্নের উত্তর নিশ্চয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ।
।
।
এবার তাহলে একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি,,,, যদি সাম্প্রতিক সময়ের পুলিশি নির্যাতনের সব গুলো ঘটনা মিথ্যা হয় কিংবা প্রতিটি ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী নিজেই দায়ী সেক্ষেত্রে কি পুলিশ কাজটা ঠিক করেছে? জানি, প্রথম শর্তে যারা বিনা সংকোচে পুলিশের দোষ বলে বেড়াচ্ছেন তারা ভেবে বলবেন, না। আবার অনেকেই বলবেন, হা। যুক্তির অভাব বাঙ্গালী জাতির কোনদিনও ছিল না। সুতারাং, যুক্তি একটা- সাধারণ মানুষ যতই অন্যায় করুক, পুলিশ কাউকে মারতে বা নির্যাতন করতে পারবে না। হায় রে! হাদা রাম বাঙ্গালি- যখন একজন সাধারণ মানুষ পুলিশকে তার মা-বোন ও পরিবার নিয়ে গালাগাল করবে তখন কি তার মনে থাকে সে পুলিশ? সুতারাং সেও সাধারণ জনগন তার ইচ্ছা মত মারতে পারে যদি কেউ তার পরিবার নিয়ে কথা বলে বা গালমন্দ করে। আমাদের দেশের এই সূর্য্য সন্তানরা দিনের পর দিন মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে যায়, আর আমরা সুযোগ পেলে তাদের জাত মারি। পুলিশ গালি দিতে আজকাল আমাদের গায়ে লাগে না। ভাই পুলিশরাও তো আমাদের পরিবারের - সমাজের অংশ। আসুন আমরা পুলিশের সম্পর্কে আমাদের ধারনাকে ইতিবাচক করি।
।
।
পুলিশের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন যারা,তারা সত্যিই বাহ বা! পাওয়ার যোগ্য। তবে এতটা না, যা সাংবাদিক ভাইয়েরা করেছেন,, আপনারা প্রতিদিন পুলিশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ নির্যাতনের যে চিত্র তুলে ধরেছেন তার বিপরিতে পুলিশের সাথে সাধারণ জনগন যে দুর্ব্যবহার করে তারও কিছু চিত্র তুলে ধরেন। এতে করে পুলিশের প্রতি জনগনের আস্থা ও ভক্তি বেড়ে যাবে এবং ইতিবাচক ধারনা তৈরি হবে। তবে আমি এটাও বলছি না যে, পুলিশ মাত্রই ধুয়া তুলশী পাতা! পুলিশের মধ্যে কিছু নষ্ট মনমানসিকতার লোক আছে, এবং মানুষ হিসেবে থাকাটা স্বাভাবিক।
।
।
পুলিশের সাথে মানুষ অনেক খারাপ ব্যবহার করে যা পত্রিকায় আসেনা। পুলিশ কে সবাই ঘুষ খোর অপবাদ দেয় যা সত্যিই খারাপ লাগার বিষয়। তবে পত্রিকাওয়ালারা এগুলো লিখে না। আর যে সব পুলিশ প্রকৃত পক্ষে খারাপ বা মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে তার কারন কি? সেই কথাটা ও পত্রিকায় আসেনা বা কেউ লিখে না। এই খারাপ পুলিশ গুলোকেও প্রশ্রয় দেয় কারা সেই কথাটা ও পত্রিকায় আসেনা। আমাদের দেশে পুলিশ হয়ে পড়েছে রাজনৈতিক শক্তিধর সরকারের হাতে জিম্মি, যখন যে সরকার আসে সেই সরকার পুলিশ কে নিজের মত করে ব্যবহার করে। সেখানেই অন্তনিহিত একটা কারন বিদ্যমান। কিছু পুলিশ অপরাধ করে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিচার থেকে রেহাই পায়, যার কারনে কতিপয় পুলিশ সদস্য উগ্রপন্থী হয়ে সাধারণ জনগনের সাথে খারাপ আচরণ করে নিজেদের অসৎ দাবি মিঠানোর চেষ্টা করে। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সরকার থাকাকালীন সময়ে পুলিশ কে নিজের সুবিধামতে ব্যবহার না করে পুলিশ হিসেবে দেখতে এবং যেকোনো পুলিশের অপরাধ কেও তারা সঠিকভাবে বিচার করতে পারত। আসুন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায়!
পুলিশ কারও শত্রু নয় বরং সবার বন্ধু!