কামশক্তি হারানো মানে হলো যৌনচিন্তা কমে যাওয়া, উত্তেজনায় ঘাটতি আসা, উত্থানে ধীরগতি, ক্লাইমেক্সে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় নেয়া, এবং মিলনে আগ্রহ কম দেখানো। গবেষণায় দেখা গেছে, সমগ্র নারীদের শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ এবং পুরুষদের ১৫ ভাগ তাদের নিজ যৌনমিলনে কামশক্তি হারিয়ে ফেলার অভিজ্ঞতায়
আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক কারণেই এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন সামাজিক গবেষকরা।
এর মধ্যে রয়েছে- মদ্যপান ও ওষুধ সেবন, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা, গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদান, মেনোপোজ, মানসিক চাপ, উদ্বেগ, কাজের চাপ ইত্যাদি। তবে গবেষকদের মতে, যদিও কামোত্তেজনা হারানোর ব্যাপারটি একেবারেই সাধারণ একটি ব্যাপার, কিন্তু এ বিষয়ে তথ্য না জানা থাকার কারণে বা তথ্য ঘাটতি থাকায় এ মামুলি ঘটনাকে বিরাট করে দেখেন নর-নারীরা। আর এজন্যে এত সমস্যার যে ট্যাবু প্রচলিত; তা ভাঙা দরকার বলে মনে করেন গবেষকরা।
নারীদের কামোত্তেজনা কমে যাবার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, নারীদের মাত্রাতিরিক্ত মদ ও ওষুধ সেবন, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার ইতিহাস, গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদান, মেনোপোজ (ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া), মানসিক চাপ ও উদ্বেগ, কাজের চাপ, সময়মতো চিকিৎসা না করতে পারা বা ভুল চিকিৎসা।একটি ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে নারীরা অ্যালকোহলে ঝুঁকে পড়েন। নারীরা মনে করেন অ্যালকোহল সেবনে তাদের মিলনশক্তি (সেক্স ড্রাইভ) বৃদ্ধি পায়।
সত্যি বলতে কি, দীর্ঘদিন অ্যালকোহল পানের পর নারীরা তাদের ইচ্ছেশক্তি হারানোর অভিযোগই করে আসছেন এ পর্যন্ত। মানসিক চাপমুক্ত হতে অল্পমাত্রার অ্যালকোহলের ডাক্তারি অনুমতি থাকলেও পরিশেষে তা মিলনে আগ্রহ কমিয়ে দেয় যথেষ্টভাবে।যেসব নারী ছোটবেলা থেকে অসুখে ভোগেন কিংবা দীর্ঘ রোগে ভোগার ইতিহাস যাদের আছে, সেসব নারীর জীবনে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা দেখা দিতে পারে। আর ফলশ্রুতিতে যৌনাকাক্সক্ষা হারিয়ে ফেলেন তারা।
ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা মানব শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতি করে এবং হরমোনে অপূর্ণতা বাড়িয়ে দেয়; যা নারীর সেক্স ড্রাইভের ওপর প্রভাব ফেলে থাকে।এ ধরণের হরমোনের অসমতা তৈরি করে যখন নারীরা গর্ভধারণ করেন, আর এরপর সন্তান জন্ম হলে পরে জন্মদান পরবর্তী হরমোন পরিবর্তনের কারণে কিছুদিন নারীরা যৌনচিন্তায় অনীহা বোধ করে থাকেন। এসময় যৌনমিলন নারীদের অত্যন্ত জটিল ও বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা দিয়ে থাকে।
যেসব নারীদের শল্যচিকিৎসার (সিজার) দ্বারা সন্তান জন্ম নেয়; তাদের ক্ষত শুকানোকাল পর্যন্ত জটিলতা থেকে বাঁচতে মিলন এড়িয়ে চলতেই হয়। আর এভাবেই নারীরা কামশক্তি হারাতে থাকে ক্রমেই।
জীবনের একপর্যায়ে নারীদের ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মেনোপোজ একটি অবধারিত বিষয়। এ সময় চল্লিশোর্ধ নারীদের শরীরে হরমোনের ব্যাপক পরিবর্তন আসে। শরীরে এস্ট্রাজেন হরমোন বেড়ে যায়।
অপরদিকে প্রোজেস্টেরন, এন্ড্রোজেন বা টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে যায়। আর যৌনজীবনে এর সরাসরি নেতিবাচক শিকার হন ২০ থেকে ৪০ ভাগ নারী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরা তাদের পুরুষসঙ্গীর সঙ্গে কামশক্তি হারিয়ে ফেলে।মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ যে মানুষের যৌনজীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে; তা এখন আর পুরনো কথা নয়। মানুষ ক্লান্তি বোধ করে এসময়। নারীরা আরো বেশি আকারে ভোগেন মানসিক চাপ যখন আসে।
কামনা-বাসনার সব চিন্তাই তখন জানালা-দরজা যেদিক দিয়ে পারে মিলিয়ে যায়। আর মেডিকেল সায়েন্সই বলছে, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ শারীরিক সিস্টেমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে। আর এজন্যে ব্যবহৃত ওষুধ কামশক্তিকে দাবিয়ে দিতে পরোক্ষ সহায়তা করে।যখন আপনি কর্মক্ষেত্রের চাপ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান তখন তা সমগ্র শরীরের মাঝে একটি পরিবর্তন আপনার অজান্তেই ঘটিয়ে দেয়।
কর্টিসোল এবং এপিনেফ্রিন বা এড্রেনালিন নামের হরমোন নিঃসরণই মূলত এজন্যে দায়ী। এগুলো যৌন হরমোনের ক্রিয়াকলাপের ওপর হস্তক্ষেপ করে বলে জানান গবেষক ডাক্তাররা।কামোত্তেজনা বা কামশক্তি কমে যাওয়ার একটি সফল চিকিৎসা হলো সময়মতো তাকে চিহ্নিত করতে পারা। ডাক্তারকে গিয়ে বলা উচিত যে মেডিকেল কারণে সেক্স কমেনি বরং অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।
কিছু কিছু সমস্যা চিহ্নিত করা জটিল হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ শরণাপন্ন হওয়া উচিত। একজন ফিজিও অথবা একজন সেক্স থেরাপিস্টই পারেন এর যথাযথ পরীক্ষা করতে ও চিকিৎসা দিতে। চেষ্টা করুন সঙ্গীর সাথে সমঝোতা গড়ে তুলতে। জীবনে রোমান্স, ভালোবাসা, আবেগ অনুভূতি আনার চেষ্টা করুন। মনের উত্তেজনায় আগুন ধরান।
আলোচিত ব্লগ
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন
যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।
আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?
আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন