ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দেয়া, নিরপেক্ষভাবে ভোট অনুস্ঠিত হওয়ার জন্য প্রাণ দেয়ার ইতিহাস, ভোটের সময় প্রচারণা, ভোট দানের হার, সরকার-বিরোধী আন্দোলন, সরকার ও রাজনীতিতে সংযুক্ত ব্যক্তিদের সমালোচনা, পার্টির বিরু্দ্ধে অবস্হান ও পার্টি সমুহের সমালোচনা দেখলে মনে হয় বাংলাদেশের ১৭ কোটী মানুষই সক্রিয় রাজনীতিবিদ। আসলে, ব্যাপার কিন্তু তাই নয়: বেশ উচ্চ-শিক্ষিত বাংগালীও বিশ্বমানের রাজনীতির 'রা'ও বুঝে না; বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতি ঘুরছে অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স, টেকনোলোজী ও মানরাধিকারকে ঘিরে। বৃহৎ সংখ্যক বাংগালীর এ বিষয়গুলোর উপর সঠিক ধারণা নেই; এবং একাংশের ভুল ধারণাও আছে। দেশের মানুষ সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকেই রাজনীতির মুল চর্চা হিসেব নেয়; সরকারের দায়িত্ব, সরকারের প্রশাসন, সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে ৮০% মানুষের সঠিক কোন ধারণাই নেই!
সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন ও চীনের সমজতণ্ত্র থেকে দুর্নীতিবাজ ক্যাপিটেলিজমে উত্তরণের পর সমাজতন্ত্র মৌলিকভাবে বিশ্বে সাময়িকভাবে অনুপস্হিত। ক্যাপিটেলিজম সরকার পরিচালনার তত্ব হিসেবে গণতণ্ত্রকে গ্রহন করেছে প্রথম থেকে। সমাজতন্ত্রেও 'কন্ট্রোল্ড; গণতন্র ছিল; তবে অর্থনীতিই ছিল মুল চালিকা শক্তি। বাংলাদেশে ত্বতীয় বিশ্বের দুর্নীতিভরা ক্যাপিটেলিজমের চাষ করে গেছেন জেনারেল জিয়াউর রহমান, সাথে সাথে অশিক্ষিতদের গণতন্ত্রও চলে আসছে; এ দুটোর সমন্নয়ে রাজনীতিও চলছে।
১৯৭১ সালে, দেশের সাড়ে সাত কোটীর মাঝে ৬ কোটীরও বেশী স্বাধীনতা চেয়েছিলেন, তাঁদের একটা অলিখিত স্বপ্ন ছিল, 'সোনার বাংলা' গড়বেন; এ স্বপ্নের পেছনে তাঁরা ভয়ানক মুল্য দিয়েছেন। সেদিনের বাংগালী জনতা তখনকার বিশ্ব থেকে শিক্ষা দীক্ষায় পেছেনে ছিলেন; তাঁরা রাজনীতিতে পক্ক ছিলেন না, তাঁরা তাদের ততকালীন নেতাদের রাজনৈতিক দক্ষতার উপর নির্ভর ছিলেন। সময়ের সাথে প্রমাণিত হয়েছে যে, তাঁদের রাজনৈতিক নেতারা রাজনীতিতে পক্ক ছিলেন না।
আসলে বাংগালীরা ১৯৭১ সালের রাজনীতি থেকেও পেছেনে চলে গেছেন; কারণ ১৯৭১ বা তার পরবর্তী ভুলগুলোই বর্তমান বাংলা রাজনীতির মুলধন।
জাতির অর্ধেক এখনো লিখতে পড়তে পারে না; ফলে, তাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করার চেয়ে দুর্নীতি করা অনেক সহজ। অশিক্ষিত জাতির মাঝে ছাত্ররাই শিক্ষিতদের প্রথম স্তর; ছাত্ররা অশিক্ষিত জনতা থেকে কিছুটা মডারেট থাকে, কিন্তু কোন বিষয়ে তাদের পরিপক্কতা থাকার কথা নয়। পুর্ব পাকিস্তান থেকে শুরু করে এ শ্রেণী রাজনৈতিক দলগুলোর শক্তি ও পেশী হয়ে কাজ করে আসছে। একদিনের ছাত্রনেতারা পরবর্তীতে দক্ষ কোন পেশায় না যেতে পারলেও রাজনীতিতে স্হান করে নিয়েছে; এরা না পেশাজীবি, না রাজনীতিবিদ; এরা দেশের রাজনীতির অন্গনকে কলুষিত করেছে: ছাত্ররাজনীতির মগজ নিয়ে নিয়মিত রাজনীতিতে আছে। আবার দেশের দুর্বল শিক্ষা ব্যবস্হা দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরি না করতে পারায়, রাজনীতি অরাজনীতিবিদদের হাতে বন্দী হয়ে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ৮:৩৬