somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টেম্পলার এবং ফ্রীম্যাসন by হারুন ইয়াহিয়া (৪র্থ কিস্তি)

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম কিস্তি
২য় কিস্তি
৩য় কিস্তি
ফ্রান্সে সিস্টারসিয়ান সংঘের (Cistercian Order) প্রতিনিধিত্বকারীরা ফ্রান্সের যেসকল নাইটরা জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল তাদেরকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়। রাজা বল্ডইন (Baldwin II) তার চিঠিতে পবিত্র ভূমির নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে তথাকথিত অসহায় ধার্মিক টেম্পলারদের অতিপ্রশংসা করেন, এছাড়াও তাদের অনুরোধগুলো রক্ষার প্রতি জোরারোপ করেন, যেখানে উল্লেখযোগ্য, চার্চ কতৃক বিশেষভাবে পোপ কতৃক তাদের সংঘের স্বীকৃতিপ্রদান এবং সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টি উঠে আসে।
টেম্পলাররা যে সাহায্যের আশা অনেকদিন ধরেই করে আসছিলো তা পাওয়ার পথ সুগম হয়ে গেল। Hugues de Payens এবং তার টেম্পলার সাথীদেরকে পোপ Honorius সকল ধরণের সুবিধা এবং দায়মুক্তি দিয়ে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাল।

১১২৮ সালে The Council of Troyes টেম্পলারদেরকে এক কাউন্সিল সভায় আমন্ত্রন জানায় যেখানে টেম্পলাররা বিবিধ সুযোগ এবং আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তির অনুমোদন লাভ করে। রাজা প্রথম হেনরি প্রচুর পরিমাণে সোনা-রুপা উপহার হিসেবে টেম্পলারদেরকে প্রদান করেন এছাড়াও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ফ্লানডারসের (Flanders) শাসকরা টেম্পলারদেরকে বিভিন্ন সামগ্রী যেমন বর্ম ও ঘোড়া দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করে।

ইংল্যান্ড ছাড়ার আগে Hugues de Payens এই অঞ্চলে টেম্পলারদের একটি শাখা খুলে তার দায়িত্বে একজন সাথী টেম্পলারকে নিযুক্ত করে। এই কাজের পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিল টেম্পলারদের সহযোগী অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা, এই অঞ্চল থেকে উপার্জিত সম্পদ জেরুজালেমে পাঠানো, নতুন সদস্য সংগ্রহ করা ও তাদেরকে দীক্ষিত করা এবং টেম্পলারদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোতে তাদেরকে পাঠানো। এছাড়াও যেসকল ব্যক্তি এবং ভূমিমালিকরা তাদের নিজস্ব উপার্জন ও ভূমি এই সংঘে দান করত তারা রাজাকে কর দেয়া থেকে অব্যাহতি পেত। এভাবেই এই সংঘের বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণের জাল বুননের সূত্রপাত হয়।

অ্যাংলো- সাক্সন রেকর্ডমতে Hugues de Payens যে সংখ্যক সদস্য তার সংঘের জন্য সংগ্রহ করেছিল তার সংখ্যা পোপ ২য় আরবান (Urban II) মনোনীত প্রথম ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্য সংখ্যার থেকেও অনেক বেশী। যেভাবেই হোকনা কেন, এই সংঘের প্রতি এত বেশী আগ্রহ দেখানো হয়েছিল যে এই সংঘ খুব শীঘ্রই সমগ্র ইংল্যান্ডজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল এবং এভাবেই জেরুজালেমে এই সংঘের শাখা তৈরি হল।

অভিজাত এবং রাজপুত্ররা এই সংঘের সদস্যপদ অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিল কিন্তু সমাজের সকল স্তরের মানুষ এই সংঘের সহযোগী হওয়া অথবা এর সংস্পর্শে থাকার জন্য মরিয়া ছিল। টেম্পলাররা পোপ ও রাজার মত প্রতিপত্তি অর্জন করে, তা ব্যবহার করে, প্রচার এবং রটনার মাধ্যমে প্রশংসাযোগ্যভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উপর প্রভাববিস্তার করেছিলো। তারা মানুষকে এতটাই প্রভাবান্বিত করেছিলো যে কেউ কেউ এই ইচ্ছা পর্যন্ত প্রকাশ করেছে যে তাদেরকে যেন মৃত্যুরপর টেম্পলারদের বিশেষ পোষাকে সমাহিত করা হয়।

মজার কথা হচ্ছে টেম্পলাররা ইউরোপের অভিজাত সম্প্রদায়কে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে তারা খুব শীঘ্রই মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে এবং এই সুত্রে তারা আর্থিক সহায়তা কামনা করে। যাইহোক কেন তারা সারা ইউরোপ থেকে যে সম্পদ সংগ্রহ করে তা যুদ্ধের জন্য ব্যয় করার পরিবর্তে নিজেদের কোষাগারে জমা করছিল। এভাবেই তারা অবৈধ উপায়ে বৈভব অর্জনের পথে প্রথম পদক্ষেপ দেয়।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×