somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ধর্মের(!) লোকদের সংখ্যা এত কম কেন?

১০ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনাম দেখে অনেকেই হকচকিয়ে যাবেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ধর্ম আবার কি? অবশ্য মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের ধর্ম আছে, আর তা হলো দাড়ি টুপি পড়নেওয়ালাদের ধর্ম। একাত্তরে পিস কমিটির নেতাদের কারো কারো মুখে দাড়ি থাকায় ইসলাম ধর্ম মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের ধর্ম হয়েছে। যদিও স্বপক্ষের লোকেরা রবীন্দ্রনাথ কিংবা সালমান রুশদীর দাড়িকে বড়ই শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখে।

মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের ধর্ম যেহেতু আছে, স্বপক্ষের ধর্ম থাকাটাও আবশ্যক। কারণ প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে স্বপক্ষের ধর্মের লোকদের বাড়তি নর্তনকুর্দন একটি আলোচিত বিষয়। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই তারা যখন পাল্টা ছ্যাচা খায়। তখন তাদের সাম্প্রদায়িক মরাকান্নার কারণে নিউজপ্রিন্টের কাগজগুলো আবর্জনায় পরিণত হয়ে যায়।

তবে স্বপক্ষের ধর্মের লোকদের সংখ্যা মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কম। দাড়ি টুপিওয়ালাদের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু তারপরও স্বপক্ষের লোকজন মাঝেমাঝে নিরপেক্ষ তথা নাস্তিক সেজে বিপক্ষের ধর্মীয় অনূভুতিকে অবমাননা করে থাকে। বিপক্ষের লোকদের মধ্যে যতই দাড়িওয়ালা বীর উত্তম বীর প্রতীক থাকুক না কেন, স্বপক্ষের লোকদের কোন ছাড়াছাড়ি নেই। বিপরীতে স্বপক্ষের লোকদের কোনরূপ অন্যায় বা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বললে আপনি নিমিষেই পিস কমিটির অনারারি মেম্বার হয়ে যাবেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একমাত্র রাজনৈতিক দল কর্তৃক তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্ট হিসেবে স্বীকৃত।

এত কথার কোন দরকার নেই, আসুন দেখি তারা সংখ্যায় কেন কম!

প্রথমত, স্বপক্ষের লোকেরা বর্ণবাদে বিশ্বাসী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে নিচু যে বর্ণ, তারা সংখ্যার বিচারে উইকিপিডিয়া অনুযায়ী স্বপক্ষের মোট জনগণের ৮৫ শতাংশ(ইনক্লুডিং স্বপক্ষের জাতিরাষ্ট্র)। অপেক্ষা করুন, আরো তিনটি বর্ণ রয়েছে। সব যোগ বিয়োগ করে ফলাফল অনুযায়ী তাদের প্রধান বর্ণ ব্যতীত অন্যরা তাদের মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশেরও বেশি দখল করে রয়েছে। যারা স্বপক্ষের ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী সর্বদা প্রথম বর্ণের পদসেবায় নিযুক্ত। এ কারণে তাদের মধ্যে নীচতা, হীনতা, সংকীর্ণতা জন্ম থেকেই পরিলক্ষিত হয়। ৯৫ শতাংশ অর্থব নিচু শ্রেণীর হীনমন্যতায় ভোগা পাবলিক নিয়ে পাকি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়। কিন্তু বিপক্ষের ধর্মের লোকদের সমাজে সবাই সমান। সুতরাং স্বপক্ষের লোকেরা মুক্তিযুদ্ধে কম, আর বিপক্ষের লোকজন বেশি।

দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলের ইহুদিদের মতো স্বপক্ষের লোকদের একটি জাতিরাষ্ট্র রয়েছে। যেখানে বিপক্ষের লোকদের বিরুদ্ধে তারা জন্মের পর থেকেই তাদের দা বটি কোদাল শাবল নিয়ে দাঙ্গায় লিপ্ত। সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত আযানও দেয়া যায় না স্বপক্ষের ধর্মীয় শক্তির তান্ডবে। বিপরীতে বিপক্ষের শক্তির দ্বারা বিজিত স্বদেশে বিপক্ষের লোকেদের আযানে তাদের উলু উলু কোথায় মিলিয়ে যায়। সুতরাং যুদ্ধ করার কোন দরকার নেই। এরচেয়ে দিল্লীর নিকট নত হয়ে নিজের নমশুদ্র নামটা সার্থক করাটা উত্তম।

তৃতীয়ত(ইয়ে, এতে কিছুটা এডাল্ট কনটেন্ট আছে), স্বপক্ষের লোকেরা জায়া কন্যা ভগিনীর বিষয়ে যথেষ্ট উদার। তারা পঞ্চপান্ডব মিলে এক টুকরো আমকে ভাগ করে খাওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী। রবীন্দ্রনাথের সাথে তার বৌদি কাদম্বরীর প্রেমকাহিনী কি ভোলা যায়? শরৎচন্দ্র তো তার বিলাসী গল্পে বলেছিলই, বৌ ঠাকরুণ বিধবা হয়ে মনের দুঃখে কাশী গমন করিল। কিন্তু তাহাকে যেখান থেকে ফিরাইয়া আনা হইল, তা কাশীই বটে। যে কাশীর কল্যাণে সে শুধু জমিদারের বিধবা বৌ নয়, বরঞ্চ সারা গ্রামের বৌ হয়েছিল।

স্বপক্ষের একজন ব্লগার এ বিষয়ে করুণ মন্তব্য করেছেন। স্বপক্ষের ধর্মীয় উৎসবে তাদের মন্ডপগুলো বিপরীত লিঙ্গের ছোঁয়া পাওয়ার আদর্শ স্থান হয়ে উঠছে বলে। এজন্যও স্বপক্ষের লোকদের মুক্তিযু্দ্ধে অংশগ্রহণের হার কম। কারণ একটা নপুংসককে যেমন বাসরঘরে পাঠালে তার গোসল ফরয হবে না, ঠিক তেমনি যে আম ভাগ করে খাওয়ার রীতিতে বিশ্বাসী, তার আমের ঝুড়ি কেউ কেড়ে নিলেও এজন্য সে যুদ্ধ করাটা আবশ্যক মনে করবে না। তাদের সেই চেতনাটাই জাগ্রত হবে না, কারণ তাদের ঝুড়িগুলো সব পাবলিক প্রপার্টি। বলাবাহুল্য, তাদের ঝুড়িগুলোই ছিল হানাদারদের মূল টার্গেট। কিন্তু তারা সময়মতো গর্তে পালানোয় বিপক্ষের অন্দরমহলে বদভ্যাসবশত হাত দিতে গিয়েই পাকিদের হাত পুড়ে যায়।

এ পর্যায়ে বিপক্ষের ধর্মের একজন নারীর ছবি।



এই মেয়ে নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লঙ্ঘন করছে। একে দেখলে জামাতি ছাত্রীসেনার সদস্য বলেই মনে হয়।


কিন্তু না, বিদেশী ডকুমেন্টারীতে বীরাঙ্গনাদের নিয়ে প্রচারিত ডকুমেন্টারীতে দেখানো হয়েছে। এই হতভাগী বোনটি এক বীরাঙ্গনা। যাকে তার স্বামীর সামনে সম্ভ্রমহানি করা হয়েছিল।



মুক্তিযুদ্ধ মানেই কি ইসলামের বিরোধিতা? এই মেয়েটির সম্ভ্রমহরণের পরও তো সে তার শরীর থেকে ইসলামী লেবাস ছাড়ল না।

যারা মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল বানিয়ে ব্লগে ইসলামের অবমাননায় লিপ্ত তারা কিন্তু অনেকেই বাংলাদেশীও নয়। তারা সোনাগাছি থেকে ব্লগিং করে টাকা কামাইয়ের আশায়।

এখন বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধের ইস্যুতে যখন সোনাগাছির মন্দিরবেশ্যার জারজগুলো যখন ধর্মকে টেনে আনে, তখন অনেকেই স্থান কাল পাত্র ভুলে ইসলামের বিরুদ্ধে লেগে যায়। এমনকি টিভিতে দেখানো হয়, একজনকে পাঞ্জাবী পরিয়ে তাকে রাজাকার বানানো হয়। এরপর একপর্যায়ে তার পাঞ্জাবী খুলে নেয়া হয়।

যারা এরকম অনুষ্ঠান করে তাদের উচিত মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে এই বোনটির গা থেকে বোরকা খুলে নেয়া। তাহলে মনে হয় তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সার্থক হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:২৩
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×