somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বস্ত্র পরিধানের উদ্দেশ্য, ব্লগিং এবং মাত্রাজ্ঞানের অভাব।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'মাত্রাজ্ঞান' কথাটার সাথে আমরা অনেকেই কম-বেশি পরিচিত। ব্যকরণগত ভাবে আমরা বাংলা বর্ণমালায় মাত্রার ব্যবহার দেখতে পাই। যেমন 'মূর্ধণ্য ণ' এর মাত্রা নেই কিন্তু 'দন্ত্য ন' এর মাত্রা আছে। মাত্রার ভূল ব্যবহারে একটি বাক্যের সম্পূর্ণ অর্থ পাল্টে গিয়ে অবাঞ্ছিত পরিবেশের সৃষ্টি করতে পারে। যেমন আপনি যদি কোন নারীর কাছে 'পানি গ্রহনের' বদলে 'পাণিগ্রহন' করতে চান তার পরিণামে আপনার কি দশা হবে, তার দায়-দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। একই রকম ভাবে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের মাত্রাজ্ঞানের অভাব থাকার জন্য নানা অবাঞ্ছিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। একটু বিবেচনাবোধ খাটালেই এই ধরণের ঘটনাগুলি কে আমরা সহজে এড়িয়ে যেতে পারি।

উদাহরণ হিসেবে প্রথমে বলা যায় আমাদের পরিধেয় বস্ত্রের কথা। বস্ত্র পরিধানের প্রধানতম কারণ হচ্ছে লজ্জা নিবারণ। এর পরেই আছে প্রাকৃতিক বিভিন্ন উদ্দীপক যেমন আলো, তাপ, ঝড়-বৃষ্টি, ঠান্ডা ইত্যাদি থেকে শরীর কে যথা সম্ভব নিরাপদে রাখা। এর পরের নিয়ামকগুলি হচ্ছে আমাদের রুচি, সৌন্দর্য্যবোধ, ব্যক্তিত্ব, পরিবেশ ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যতা ইত্যাদি।

একটা উদাহরণ দিলে মাত্রাজ্ঞানের ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে। এ যুগে লজ্জা নিবারণ এবং প্রাকৃতিক উদ্দীপক থেকে রক্ষার জন্য আমরা গাছের পাতা ব্যবহার করি না। কারণ তার থেকে বহুগূনে শ্রেয়তর ব্যবস্থা (কাপড়) রয়েছে এবং এ ব্যবস্থাটাই দুনিয়াজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে কারণে এখন কেউ যদি গাছের পাতা দিয়ে এ কাজ করার চেষ্টা করেন, তার মাত্রাজ্ঞানের চরম অভাব রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে এবং তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে হবে।

তেমনি ভাবে কোন ব্যক্তি যদি ভুলে যায় যে, বস্ত্র পরিধানের প্রথম শর্ত হচ্ছে লজ্জা নিবারণ, বরং বস্ত্রটি নানা উপায়ে তার লজ্জাস্থানের দিকে মানুষের মনযোগ আকর্ষণ করে, তবে তার ও মাত্রাজ্ঞানের যথেষ্ট অভাব আছে বলে ধরে নিতে হবে। বিশেষত ঐ ব্যক্তির অবস্থানের স্থানে যদি এরূপ পোষাক কে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে খারাপ চোখে দেখা হয়। সেক্ষেত্রেও ব্যক্তিটিকে নিবৃত করার চেষ্টা করতে হবে। অপরদিকে যদি ঐ স্থানে সামাজিকভাবে ঐ রকম পোষাক বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তবে তা মাত্রাজ্ঞানের অভাব বলে গণ্য হবে না।

মধ্যপ্রাচ্যের কোন সমূদ্রসৈকতে কেউ যদি খালি গায়ে তার ছোট প্যান্ট পরে ঘুরে বেড়ান তার মাত্রাজ্ঞান নাই বলে ধরতে হবে। ঠিক তেমনিভাবে, লাস ভেগাসের কোন সমূদ্রসৈকতে আলখাল্লা পরে ঘুরে বেড়ানোটাও মাত্রাজ্ঞানের পরিচয় বহন করবে না। যারা এটা মেনে চলতে পারবেন না বলে মনে করবেন, তাদের অবশ্যই উচিৎ ঐ স্থান কে পরিহার করা যাতে পরস্পর বিব্রত না হন।

এখন প্রশ্ন হলো কেউ যদি স্বেচ্ছায় এরকম না করে সেক্ষেত্রে তাকে কিভাবে নিবৃত করা হবে। এখানেও আসবে সেই মাত্রাজ্ঞানের প্রশ্ন। একজন স্বল্পবসনা ব্যক্তিকে টিজিং করে নিবৃত করার চেষ্টা্টাও সেই মাত্রাজ্ঞানের অভাবকেই নির্দেশ করবে।

এমনকি ব্লগিং করার সময়টাতেও মাত্রাজ্ঞানের সঠিক চর্চা থাকতে হবে। যিনি কোন বিষয়ে কোন পোস্ট করবেন, তাকে অবশ্যই বুঝতে হবে, তিনি কি লিখছেন, তার উদ্দেশ্য কি, তাকে কোন পর্যন্ত যেতে হবে এবং কোথায় থামতে হবে। ঠিক তেমনি যিনি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তাকেও বুঝতে হবে তার সীমানা কতটুকু, তিনি কতটুকু প্রতিক্রিয়া কিভাবে দেখাবেন এবং কখন তাকে থামতে হবে। কাউকে শাস্তি দেবার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টা ভালভাবে ভেবে দেখতে হবে, এখানেও কোন অতিরঞ্জন হচ্ছে কি না।

এভাবে আমাদের সবার ই জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই মাত্রাজ্ঞানের চর্চা করতে হবে। আমাদের জানতে হবে ঠিক কখন, কোথায়, কতটুকুতে আমাদের থামতে হবে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় সেটি না করেন, তবে তাকে থামানোর জন্য প্রয়োজনে সামাজিকভাবে বিভিন্ন মেয়াদে বয়কট করা যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৩৪
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×