somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Government's Tele-Drama falls flat on its face!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় আছে অতি চালাকের গলায় দড়ি, ইনুদের মত পেপার-সর্বস্ব বাম ভাড়দের বুদ্ধিতে চলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের হয়েছে এই অবস্থা। প্রথমে দুই নেত্রীর কথাবার্তার অংশ বিশেষ দেখি

[সময়কাল ১৭ মিনিট থেকে ১৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ড]

হাসিনা: আপনিতো সামনে ক্যামেরা নিয়ে বসে কথা বলছেন? (নিজেই নিজের জন্য ফাঁদ ফাঁদেন!)
খালেদা: ক্যামেরা ট্যামেরা নেই। আপনিই ক্যামেরা ঘিরে বসে আছেন এবং ছবিও নিচ্ছেন।
হাসিনা: আমার এখানে ক্যামেরা নেই, এখানে কেউ নেই (হায়রে সত্যবাদী যুধিষ্ঠির!)
খালেদা: আমার এখানে ক্যামেরা ট্যামেরা কেউ নেই, বুঝছেন। ক্যামেরা ট্যামেরা কেউ নেই আমার এখানে, আমি নিজেই কথা বলছি। সেজন্যে আমি বাসাতেই কথা বলছি, অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হত ক্যামেরা ট্যামেরা থাকত, সুবিধা হত। আমি এত নিচু কাজ করতে চাই না। তারপরে টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন, আমাদের এখানে ক্যামেরা কিচ্ছু নেই, বুঝেছেন।

সরকার দাবি করছে তারা এটা ফাঁস করেনি, আসলেই কি তাই? দুটো বিষয় খেয়াল করেন;

প্রথম, প্রকাশ করেছে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে আওয়ামী লীগ দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনকারী ৭১টিভি (বিটিভি হলো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের মুখপাত্র, বর্তমান সরকারী দল আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে অন্য দলও হতে পারে)। প্রকাশটা যদি এনটিভি বা আমার দেশের মাধ্যমে হত তাহলে ধরে নেওয়া যেত এটা বিএনপির কাজ। এখানে আরো লক্ষ্যনীয় যে, সব পক্ষের অনুমতি না নিয়ে প্রকাশের পরও ৭১টিভি এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু এনটিভি এভাবে প্রকাশ করলে এতক্ষণে হয়ত তাদের বিরুদ্ধে আমার দেশ বা অধিকারের মত ব্যবস্থা নেওয়া হত।

দুই, এটা প্রকাশের পর দুই পক্ষের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাক। বিএনপি তীব্রভাবে নিন্দা করছে, বলছে এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ। অন্যদিকে ইনু বলছে, এটা প্রকাশ হওয়া উচিৎ (সব পক্ষের সম্মতি আছে কিনা যেন তার ধার ধারার দরকার নেই)।

কাদের দ্বারা এটা প্রকাশ পেল সেটা দুধের বাচ্চাও বুঝবে! কিন্তু কেন এমন করা হলো? উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার, রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে পুরো বিষয়টা সাজানো হয়েছে। কিভাবে ধাপে ধাপে আগানো হয়েছে লক্ষ্য করুন;

প্রথম, দুপুরের পর থেকেই মিডিয়া ব্যবহার করে একটা নিগেটিভ প্রচারণা চালানো হলো যে, খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার ফোন ধরছেন না। নিজেকে প্রশ্ন করেন, সন্ধ্যার সময় যে শেখ হাসিনা সব মিডিয়া ডেকেই কথা বলছেন তিনি দুপুরে মিডিয়াকে ডাকেননি কেন? কারণ, আর কিছু না খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নিগেটিভ প্রচারণা চালিয়ে আগে থেকে তাকে একটু রাগান্বিত বা বিরক্ত করে রাখা। ব্যাপারটা এভাবে চিন্তা করুন, আপনার বন্ধু যদি ফোন করে বলে যে, সে আপানকে ঘন্টাখানেক ফোন করে পায়নি যেটা আদৌ সত্য নয়, সেক্ষেত্রে কি আপনি একটু বিরক্ত হবেন না? আর এক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো জটিল, তারা দুজন বন্ধুও নন এবং এখানে ব্যাপারটা শুধুমাত্র দুজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং মিডিয়াকে দিয়ে পুরো দেশবাসীকে বলার চেষ্টা করা হয়েছে যে খালেদা জিয়া ফোন ধরছেন না। পুরো জিনিসটা খালেদা জিয়ার জন্য আরো বিব্রতকর। প্রথম চাল সফল!

দুই, শেখ হাসিনা আগে থেকেই জানতেন এটা রেকর্ড করা হবে এবং তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এগুচ্ছেন যদি সবকিছু সেভাবেই এগোয় তাহলে সেটা পরে প্রকাশিত করা হবে। উদ্দেশ্যটা কি? খালেদা জিয়ার একটা নিগেটিভ ইমেজ দাড় করানো এবং সাথে সাথে মানুষকে দেখানো শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার তুলনায় ভদ্র, শিষ্ট, মার্জিত। ফলে আমরা কি দেখলাম? যে শেখ হাসিনা দিনে একবার খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশ্লীল কটুক্তি না করলে পেটের ভাত হজম হয়না তিনিই রাতারাতি হয়ে গেলেন দুনিয়ার সবথেকে শান্ত, শিষ্ট, ভদ্র মহিলার মূর্ত প্রতিক। এবং একই সাথে ঠান্ডা মাথায় প্রথম থেকেই খালেদা জিয়াকে ক্রমাগত খোঁচা দিয়ে যেতে থাকলেন যেন খালেদা জিয়া মেজাজ হারান। দ্বিতীয় চালও সফল!

কিন্তু শেষমেষ কি পুরো গেমটা সরকারের পক্ষে গিয়েছে? আপাতদৃষ্টিতে যায়নি বরং বিলবোর্ডের মত বুমেরাং হয়েছে। কারণ মানুষ এখন পুরো বিষয়টাকেই সন্দেহের চোখে দেখছে, খালেদা জিয়া কেমন করে কথা বলেছেন তার থেকে শেখ হাসিনা যে খালেদা জিয়ার তুলে ধরা অভিযোগগুলোর একটারও কোনো উত্তর না দিতে পেরে অসহায়ভাবে হজম করে গেছেন সেটা নিয়ে কথা বলছে, সার্বিকভাবে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তার থেকেও বড় ব্যাপার, পুরো জিনিসটার আইনগত বৈধতা নিয়ে দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও ব্যক্তিরাও এখন প্রশ্ন তুলছেন। এমনকি সরকারী পত্রিকা বলে পরিচিত ইত্তেফাকের আজকের প্রধান সংবাদ হয়েছে 'আইন লঙ্ঘন করে ফোনালাপ প্রচার'! খালেদা জিয়া গত কয়েকটি ভাষণে একটি কথা বারবার বলছেন, 'অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে সেখানে নিজেকেই পরতে হয়', শেখ হাসিনার উচিৎ ছিল খালেদা জিয়ার অন্তত এই কথাটি একবারের জন্য হলেও ভেবে দেখা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×