somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানব জাতি: মাঝি বাইয়া যাও রে

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধারনা করা হয় দু থেকে চার লাখ বছর আগে মানুষ শুধু মাত্র আফ্রিকাতেই বসবাস করত। আফ্রিকা থেকে অন্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে সময় লেগেছিল বেশ কিছু দিন। প্রশ্ন হল বড় দাদাদের হটাত অন্য মহাদেশে যাবার ঠেক পড়ল কেন? হতে পারে খাবারের অভাবে, পানির অভাবে, সংক্রামণ রোগের হাত থেকে বাঁচতে, গোত্রপতি-কিংবা অন্য গোত্রের আক্রমণে কিংবা প্রেম করে পালিয়ে!

তবে অন্য মহাদেশে যাবার আগে নিশ্চিতভাবে মানুষ ছড়িয়ে পড়েছিলো আফ্রিকার বাকি অঞ্চলগুলোয়। সাউথ আফ্রিকার রাইজিং স্টার গুহার দেড়লাখ বছর আগেকার মানুষের তৈরি পাথরের অস্ত্র কিংবা ইথিওপিয়ায় পাওয়া মানুষের মাথার খুলি তাই প্রমাণ করে।

স্থলপথে আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে যাবার পথ খুব বেশি নয়। সাহারা মরুভূমির জন্য ইউরোপে যাবার রাস্তা বন্ধই ছিল। সাড়ে তিন হাজারের বেশি বর্গমাইল জুড়ে অবস্থিত সাহারা পাড়ি দেয়া নিতান্তই অসম্ভব। তাহলে বাকি থাকল আরব অঞ্চলে যাবার পথ। ধারনা করা হয় দুটি ধাপে মানুষ আরবে পৌঁছেছিল।


[ছবি: আফ্রিকা থেকে বেরুবার পথ]

প্রথম ধাপে লোহিত সাগর হয়ে বর্তমান ইয়েমেন। এখনকার লোহিত সাগরের সবচেয়ে ক্ষীণ অংশের দৈর্ঘ্য আঠারো মাইলের মত। ধারনা করা হয় ৭০,০০০ থেকে ১,২৫,০০০ বছর আগে মানুষ আফ্রিকা থেকে এপথেই প্রথম আরব দেশে এসেছিলো।
আরেকটা পথ আছে মিশর হয়ে জর্ডান হয়ে বর্তমান সৌদি আরব।

তাহলে কি ধরে নেয়া যায় বর্তমান আরবরাই হল মেজদাদা! অনেকাংশে তাই। কেন ১০০% নয় কারণ আরেকদল মানুষ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সরাসরি চলে এসেছিলো আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জে ও এর আসে পাশে।


[ছবি: অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী (উপরে) এবং তামিল শিশুরা]

আরব একদল মানুষ সমুদ্রতীর ধরে চলে আসে দক্ষিণ এশিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়ার দিকে। এদের বলা হয় অষ্ট্রেলয়েড। ধারনা করা হয় ৫০,০০০ বছর আগে এরা অস্ট্রেলিয়া পৌঁছেছিল। দেখুন না অস্ট্রেলিয়ার ভাইয়াদের সাথে তামিল দাদাদের চেহারার কেমন মিল! তবে আমাদের দেশেও এমন চেহারা বিরল নয়। আরেকটা মজার জিনিস হল ভাষাগত কিছু মিল এখনো রয়ে গেছে। যেমন ‘নগরাম’ শব্দটি তামিল এবং অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী দু ভাষাতেই আছে আর অর্থ এক ‘নগর/শহর’।

আরব থেকে একদল মানুষ চলে যায় উজবেকিস্তান কাজিকিস্তানের দিকে। কাজাকিস্তান থেকে এদের এক অংশ ভারত-নেপাল-মিয়ানমার হয়ে পূর্ব এশিয়ায় ( ছোট চোখ ভোতা নাকের চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন) আসে ৩৫,০০০ বছর আগে। এরা পরিচিত মঙ্গলয়েড নামে।

উজবেকিস্তান-কাজিকিস্তান-আরব থেকে আরেকদল ইউক্রেন-বেলারুশ হয়ে চলে যায় ইউরোপে। এরাই আজকের শাদা চামড়ার ইউরোপবাসী। ধারনা করা হয় সহস্র বছর ধরে উজবেকিস্তান কাজিকিস্তান থাকার সময় থেকে ঠাণ্ডায় রোদহীন পরিবেশে এদের গায়ের রং সাদা হতে শুরু করে। এরাই ককেশীয় নামে পরিচিত।

প্রায় ২৫,০০০ বছর আগে এশিয়ার কয়েকটি দল (মঙ্গোলিয়া, কাজিকিস্তান, চীন) রাশিরার পূর্ব প্রান্ত সাইবেরিয়া হয়ে চলে আসে উত্তর আমেরিকার। বর্তমানে আর ১৫,০০০ বছরের মাঝে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে। আর তাই এদের চেহারার সাথে মঙ্গলয়েড/চৈনিক বংশোদ্ভূতদের সাদৃশ্য লক্ষণীয়। আমাদের কলম্বাস উত্তর আমেরিকায় গিয়ে এদেরই নাম দিয়েছিলেন রেড ইন্ডিয়ান।


[ছবি: আফ্রিকা থেকে সারা দুনিয়া]

আপাতত এগুলোকেই বলা যায় মানব সভ্যতার প্রথম যাত্রা। এর পরে হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে গিয়েছে। দখল করেছে দেশ মহাদেশ। হাজার হাজার বছরের সে গল্পের খুব সাধারণ অংশই আমরা জানি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৫২
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×