শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে সর্ব শ্রেণীর লোকের অবদান অবিস্মরণীয়। এই যুদ্ধে আর্মি, পুলিশ, ইপিআরসহ রাজনৈতিক নেতা কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি তুচ্ছ ঘৃণিত সম্প্রদায়ও অংশগ্রহণে পিছিয়ে ছিল না। তুচ্ছ ঘৃণিত সম্প্রদায়ও যে যুদ্ধে অবদান রেখেছে তা ভোলার মত নয়। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার ভরতখালীতে। একবার মুক্তিযোদ্ধারা ভরতখালী বাজারের যৌন কর্মীদের কাছে যুদ্ধের সহায়তা কামনা করে। এতে যৌনকর্মীরা সহাস্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহয্য করতে এগিয়ে আসে।
ভরতখালী বাজারের আলেয়া, বেবী, কমলা, রাণীসহ কয়েকজন যৌনকর্মী মুক্তিযোদ্ধাদের শেখানো কায়দা অনুযায়ী, রমনীয় বেশভূষায় সজ্জিত হয়ে ভরতখালী রেল স্টেশনের অদূরে সীংড়া ব্রীজে পাহারারত রাজাকারদের ক্যাম্পের কাছে গিয়ে নানান রকম রমনীয় রংঢং করতে থাকে। তাদের আকর্ষণীয় রংঢং দেখে রাজাকারদের নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় হয়। যৌনকর্মীদের রমনীয় ভাব ভঙ্গী দেখে রাজাকাররা তাদের চরিত্র ধরে রাখতে পারে না। যার যার মত হাতের অস্ত্র রেখে যৌন কর্মীদের বাংকারে এবং ক্যাম্পে নিয়ে যৌন লীলায় মত্ত হয়ে উঠে। এই সুযোগে ওত পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা আকস্মিকভাবে ক্যাম্পে আক্রমণ চালায় এবং সব রাজাকারদের বন্দী করে ফেলে। যৌনকর্মীদের সহযোগীতায় অতি সহজেই রাজাকারদের পুরো ক্যাম্প মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে।
বেশ্যাবৃত্তি পেশাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ঘৃণার চোখে দেখলেও তাদের মুক্তিযুদ্ধের এই অবদানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। তারাও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদানের দাবীদার।
(তথ্য সূত্রঃ একাত্তরে গাইবান্ধা)
ছবি নেট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০