গত ১৮ তারিখে মতিঝিল যাওয়ার জন্য উত্তরা মেট্রো স্টেশনে গিয়েছি। ট্রেন আগারগাঁওয়ের পড়ে আর যাবে না। বাধ্য হয়ে আগার গাঁওয়ের টিকিট কেটে তিন তলায় উঠতে ছিলাম। সাথে আমার সহজ সরল গিন্নী ছিল। আমি লাফ দিয়ে চলন্ত সিঁড়িতে উঠলেও সে ভয়ে উঠতে পারে নাই। তার ভয় হলো এই চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে যদি পা পিছলে পড়ে যায় তখন হাত পা তো ভাঙবেই সাথে মানসম্মানও যাবে। সেই ভয়েই সে সিঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি ততক্ষণে অনেক উপরে উঠে গেছি। চলন্ত সিঁড়ি থেকে নিচে নামতেও পারছি না। এই অবস্থায় তার মানসিক অবস্থা বুঝতে পেরে হাত ইশারায় সামনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে বললাম। আমি তিনতালায় নেমে সিঁড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সিঁড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি তো আছিই, কত মানুষ উঠছে নামছে আমার গিন্নীর নাম গন্ধও দেখা পাচ্ছি না। অবশেষে বাধ্য হয়ে আবার দোতালায় নেমে এলাম। দোতালার প্লাটফর্মের এই মাথা থেকে ঐ মাথা পর্যন্ত তিন চক্কর দিয়েও খুঁজে পেলাম না। ভয়ে পড়ে গেলাম। বুড়ো বয়সে মেট্রোতে চড়তে গিয়ে কি শেষে বউ হারালাম। খুঁজতে খুঁজতে সোজা প্লাটফর্মের দক্ষিণে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি উনি গেটের বাইরে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। চলন্ত সিঁড়িতে আমার হাতের ইশারা দেখে দক্ষিণ দিকে গেছে তো গেছেই, সোজা আউট গোইং মেশিনে কার্ড পাঞ্চ করে গেটের বাইরে চলে গেছে। সেখানে গিয়ে যখন দেখেছে প্লাটফর্মের দক্ষিণে কিছুই নাই ফাঁকা তখন আবার পিছন ফিরে প্লাটফর্মে ঢুকতে গিয়ে আর ঢুকতে পারে নাই। যখনই গেটে ঢুকতে যায় তখনই অটোমেটি গেট বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকবার চেষ্টা করে ঢুকতে না পেরে আহাম্মক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সহজ সরল মহিলার এই অবস্থা দেখে কাছে দাঁড়ানো মহিলা সিকিউরিটিরাও গেটের ভিতরে প্রবেশ করানোর চেস্টা করে ব্যর্থ। এর পরে আর কি করবো, অপরাধ না করেও অপরাধী হয়ে আবার ষাট টাকা জরিমানা দিয়ে টিকিট কাটতে হলো।
তবে ষাট টাকা জরিমানা যায় যাক, জীবনের প্রথম মেট্রোতে চড়তে গিয়ে কহিনীটি তো স্মৃতি হয়ে থাকল, এতেই আমি আনন্দিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮